Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Mamata Banerjee in Krishnanagar

‘ইডি বা সিবিআই ডাকলে এখন যাবেন না, বলবেন ভোটে ব্যস্ত আছি’! দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ মমতার

রবিবার কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে সভা করে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করেছেন মমতা। শুরুতেই ইডি, সিবিআইয়ের তৎপরতার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তৃণমূলনেত্রী।

ধুবুলিয়ার মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ধুবুলিয়ার মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৪:৩২
Share: Save:

ইডি বা সিবিআই ডাকলে এখন যাওয়ার দরকার নেই, কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়ার সভা থেকে এমনটাই জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় ভোটের আগে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। সেই সূত্রেই দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ইডি বা সিবিআইয়ের মতো কোনও সংস্থা তলব করলে আপাতত হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভোটের পর হাজিরা দিলেই হবে।

রবিবার কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে সভা করে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন মমতা। কিছু দিন আগে তিনি মাথায় চোট পেয়েছিলেন। রবিবার দেখা গেল, কপাল থেকে ব্যান্ডেজ সরেছে। ধুবুলিয়ার ৪০ ছুঁইছুঁই গরমেও চেনা মেজাজেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রীকে। মঞ্চ জুড়ে টানা ৪৫ মিনিট দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। ঝাঁঝালো সুরে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে।

মমতার আক্রমণের কেন্দ্রে ছিল বাংলায় ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘তৎপরতা’। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অত ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কাউকে ইডি বা সিবিআই চিঠি দিলে উত্তর দিয়ে দিন, ‘এখন ভোটে ব্যস্ত আছি। ভোটের পরে দেখা যাবে’।’’ সভার শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থার একের পর এক তলব এবং তল্লাশির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। একে ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীদের বিব্রত করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন। জানান, ভোট চলাকালীন এ সব করা যায় না।

উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল আয়কর দফতর। টানা ৭০ ঘণ্টা তল্লাশির পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। স্বরূপের স্ত্রী জুঁই বিশ্বাস তৃণমূল কাউন্সিলর। আয়কর হানার পর তিনি জানান, ভোটের আগে এ ভাবে তাঁদের তিনটি দিন নষ্ট করা হল। এই তল্লাশি অভিযানকে ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ধুবুলিয়ার সভা থেকে মমতা নাম না করে সেই প্রসঙ্গে টানেন। বলেন, ‘‘আমি ওদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিন দিন ধরে তোদের বাড়িতে কী করল? আমাকে বলল, ‘দিদি, আমরা তিন দিন বাথরুমে যেতে পারিনি, রান্না করতে পারিনি। বাড়িতে বাচ্চারাও ছিল। ওরা ১৬ জন এসেছিল। এক-একটা খাবার অর্ডার করছে, ২০-২৫ হাজার টাকা বিল হচ্ছে।’ আর যাঁদের বাড়িতে গিয়েছে, তাঁরা খেয়েছেন কি না, তার খোঁজ রাখছেন না।’’

মমতা আরও বলেন, ‘‘বাংলায় যদি ‘৪০০ পার’ করার বিষয়ে আপনারা এতই নিশ্চিত হন, তা হলে এত ইডি, সিবিআই এখানে পাঠাতে হচ্ছে কেন? রাজ্যের অফিসারদের কেন বদলি করে দিতে হচ্ছে? কিসের ভয় পাচ্ছে বিজেপি? এত বড় একটা রাজনৈতিক দল। তারা শুধু ইডি, সিবিআই, আয়কর পাঠায় আর গরিব মানুষের টাকা মারে।’’

কিছু দিন আগে হাওড়া থেকে তৃণমূলের কয়েক জন নির্বাচনী ম্যানেজারকে এনআইএ গ্রেফতার করেছে বলে জানান মমতা। বলেন, ‘‘আমার কিছু ভোট ম্যানেজার আছে। এনআইএ গিয়ে হাওড়া থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে নিল। আমার জেলা প্রেসিডেন্টকে নোটিস পাঠাচ্ছে। ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন এ সব করা যায় না। বাংলায় জয় নিয়ে এত নিশ্চিত হলে কেন তৃণমূলকে সেখান থেকে সরাতে চাইছেন? কেউ কেউ কোটি কোটি টাকার সিবিআই কেস খেয়ে বসে আছেন। আর বিজেপিতে যোগ দিলেই ওয়াশিং মেশিনের মতো সাফ হয়ে যাচ্ছেন। দেশে আসলে ইডি, সিবিআইয়ের রাজ চলছে। ওরা ডাকলে ভয় পাবেন না।’’

উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে মহুয়াকে বিদেশি মুদ্রা লঙ্ঘনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল ইডি। তিনি হাজিরা দিতে যাননি। তাঁকে নিজের কেন্দ্রে ভোটের প্রচারে দেখা গিয়েছিল। সে সময় মহুয়া বলেছিলেন, ‘‘ইডি ইডির কাজ করেছে। আমি আমার কাজ করছি। ভোট আসছে। প্রচারে ব্যস্ত আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE