E-Paper

জেবেরকে দলে ফেরাতে নির্দেশ তৃণমূল নেত্রীর

এক সময়ে রুকবানুরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জেবের। দীর্ঘ দিন তিনি দলের চাপড়া ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:১৬
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলছেন চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান এর সাথে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলছেন চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান এর সাথে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর। ছবি: প্রণব দেবনাথ।।

গত বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে 'নির্দল' হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। শান্তিপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চে দঁড়িয়ে সেই জেবের শেখকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপড়ার বিধায়ক রুকবনুর রহমানকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও কবে কী ভাবে তাঁকে দলে ফেরানো হবে, সেই এখনও সিন্ধান্ত নেননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেবের দলে ফিরলে তাঁকে কোনও পদ দেওয়া হবে কি না, তা-ও এখনও পরিষ্কার নয়।

এক সময়ে রুকবানুরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জেবের। দীর্ঘ দিন তিনি দলের চাপড়া ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তিনি ক্রমশ বিধায়ক পদের টিকিটের দাবিদার হয়ে উঠতে থাকায় ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। এই সময় জেবের ক্রমশ মহুয়া মৈত্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে থাকেন। চাপড়া ব্লকে তিনি রুকবানুরের প্রায় সমান্তরাল নেতা হয়ে ওঠায় এক সময়ে বিবাদ চরম আকারে পৌঁছয়। ব্লক তৃণমূল কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও বিধানসভা ভোটে টিকিট পাননি জেবের শেখ, তৃণমূল রুকবানুরকেই টিকিট দেয়। এর পরেই কার্যত ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছিলেন জেবের। হেরেও যান। বিদ্রোহের শাস্তি হিসেবে নির্বাচনের পর তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পঞ্চায়েত ভোটে তিনি কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকেন। দলীয় সূত্রের দাবি, জেবেরকে দলে ফেরানোর জন্য মহুয়া সচেষ্ট ছিলেন। সম্প্রতি মহুয়া তৃণমূলের কৃষ্ণনগর জেলা সভানেত্রী হওয়ার পরেই জেবেরের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। গত লোকসভা নির্বাচনে এই চাপড়া ব্লকই প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ‘লিড’ দিয়েছিল তৃণমূল প্রার্থী মহুয়াকে। কার্যত এই লিডের জন্যই তিনি কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে জয়ী হন। এ বার পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতাদের একাংশ। চাপড়ায় গত বারের চেয়ে 'লিড' বাড়ানো জরুরি বলেও তাঁরা মনে করেন। বহিষ্কৃত হলেও জেবেরের এখনও যথেষ্ট প্রভাব আছে এবং তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিজেদের ভোট সংহত করাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন।

'বিদ্রোহী' নেতাকে তৃণমূলে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনা নদিয়ায় আগেও ঘটেছে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে তেহট্ট কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন তাপস সাহা। নেত্রীর নির্দেশে তাঁকেও পরে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। দলীয় সূত্রের দাবি, জেবেরকে নিয়ে মহুয়া নিজেই দলনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তার পরেই বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরে পদযাত্রা ও শান্তিপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের শেষে রুকবানুর রহমানকে ডেকে জেবেরকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। সেই সময়ে দলের অন্য নেতা-বিধায়কেরা উপস্থিত ছিলেন।

তবে শুক্রবার জেবের বলেন, “এই বিষয়ে দলের তরফে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। ফলে এখনই কোনও মন্তব্য করব না।” আর রুকবানুর বলেন, “নেত্রীর নির্দেশ আমরা পালন করতে প্রস্তুত। দল যেটা ভাল বুঝবে, সেটাই করবে। আমি সৈনিক মাত্র।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 chapra Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy