Advertisement
E-Paper

নন্দীগ্রামে খুনে নাম জড়াল কিছু জোড়া ফুল নেতার, এলাকাছাড়া ভোটের আগে, চাপ বাড়ছে তৃণমূলের?

বুধবার গভীর রাতেই তেতে ওঠে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া, গড়চক্রবেড়িয়া। অভিযোগ, মনসাবাজারের কাছে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবু রায়। সেখানেই মারধরে রথিবালা মারা যান বলে দাবি।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ০৭:৪৪
রথিবালার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিজন। নন্দীগ্রামের সাউথখালি মনসা বাজার এলাকায়। ছবি: শুভেন্দু কামিলা।

রথিবালার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিজন। নন্দীগ্রামের সাউথখালি মনসা বাজার এলাকায়। ছবি: শুভেন্দু কামিলা।

খুনের ঘটনা। আর তাতে নাম জড়াল বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার। লোকসভা ভোটের ঠিক দু’দিন আগে এই পরিস্থিতিতে তাঁদের অনেকেই এখন রাতারাতি এলাকাছাড়া। তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা, ফলে ভোটের দিন সাংগঠনিক ভাবে দলের কিছুটা চাপে পড়তে পারে।

বিজেপি কর্মী রথিবালা আড়িকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ২৫ জনের নামে এফআইআর করেছেন তাঁর মেয়ে মঞ্জু আড়ি। তাতে নাম রয়েছে তৃণমূলের শেখ সুফিয়ান, নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি শেখ আল্লারাজি থেকে একাধিক স্থানীয় তৃণমূল নেতার।

স্থানীয় সূত্রে দাবি, বুধবার গভীর রাতেই তেতে ওঠে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া, গড়চক্রবেড়িয়া। অভিযোগ, মনসাবাজারের কাছে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবু রায়। সেখানেই মারধরে রথিবালা মারা যান বলে দাবি। এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত খোকন সীট। এ ছাড়া, দেবু রায়, শেখ আল্লারাজি, শেখ সুফিয়ান তো আছেনই। আছে শেখ শামসুল ইসলাম-সহ আরও অনেকের নাম। গত বিধানসভা ভোটের পরে নন্দীগ্রামেরই চিল্ল গ্রামে দেবব্রত মাইতি নামে এক বিজেপি কর্মী খুন হন। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জন তৃণমূল নেতা এখন আদালতের নির্দেশে জেলার বাইরে রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে বলা হয়েছে, দেবু এবং খোকন সোনাচূড়ার বাসিন্দা। খোকন একসময় যাত্রায় অভিনয় করতেন। আর দেবু সোনাচূড়া হাই স্কুলের অশিক্ষক কর্মী। দু’জনেরই উত্থান জমি আন্দোলনের সময়। বাম কর্মী-সমর্থকদের ঘরছাড়া করা, তাঁদের জমি দখল, জরিমানা আদায়-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে। শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরে তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য প্রণব মহাপাত্র। সূত্রের দাবি, তখনই তৃণমূলে প্রভাব বাড়ে দেবু এবং খোকনের।

দলের একটি অংশ জানাচ্ছে, এ দিন থেকেই তাঁরা এলাকাছাড়া। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দেবু রায় অবশ্য ফোনে বলছেন, ‘‘বুধবার রাতে পলাশ ভুঁইয়া নামে আমাদেরই এক কর্মীর টোটো ভাঙচুর করে বিজেপির লোকজন। দু’টো বাড়িও ভাঙে। তখন আমরা ২৮৪ নম্বর বুথ পাহারা দিচ্ছিলাম। পুলিশকে জানাই। মিনিট কুড়ি পরে পুলিশ গিয়ে জানায়, বিজেপির একজন মহিলা কর্মী অসুস্থ হয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দলে যে হেতু আমি নেতৃত্ব দিই, তাই আমাকে খুনের মামলায় জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

খুনে আর এক অভিযুক্ত নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা কালীচরণপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ আল্লারাজির দাবি, ‘‘বাড়ি থেকে ৮-৯ কিলোমিটার দূরে সাউথখালি। ওই এলাকায় আমাদের যাতায়াত নেই।’’ সঙ্গে জুড়ছেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে আমাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। হলদিয়া ভবনে ডেকে শুভেন্দু বিজেপিতে যেতে বলেছিলেন। রাজি হইনি। তাইফাঁসানো হচ্ছে।’’ তারাচাঁদবাড়ে জাহাজবাড়িতে বসে সুফিয়ানও বলছেন, ‘‘তৃণমূলের কেউ এই ঘটনায় জড়িত নন।’’

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অবশ্য নাম করেই অভিযোগ করেছেন, ‘‘দেবু রায়, খোকন সীটেরা গড়চক্রবেড়িয়া থেকে লোক নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছে। এফআইআর দায়েরের পরেও অভিযুক্ত আল্লারাজি নন্দীগ্রাম থানায় গিয়ে আইসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’’ গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

nandigram incident TMC BJP Suvendu Adhikari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy