Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

সিএএ-র বিরুদ্ধে মতুয়াদের বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ

অবরোধে শামিল হওয়া অনেকেই জানালেন, তাঁরা এত দিন সিএএ সমর্থন করতেন, কারণ ভেবেছিলেন, সিএএ-এর মাধ্যমে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। কোনও আবেদন করতে হবে না।

সিএএ-র প্রতিবাদে অবরোধ।

সিএএ-র প্রতিবাদে অবরোধ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৭
Share: Save:

নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন (সিএএ) বাতিলের দাবিতে মতুয়া ও উদ্বাস্তু সমাজের একাংশের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। কেন্দ্র সরকার সিএএ কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর থেকে মতুয়ারা পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন। কোথাও মিছিল, কোথাও অবস্থান-বিক্ষোভ, আবার কোথাও সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার মতুয়াদের পক্ষ থেকে বাগদার হেলেঞ্চা এলাকায় বনগাঁ-বাগদা সড়ক অবরোধ করা হয়। রাস্তার উপর টায়ার জ্বালানো হয়। সঙ্গে ব্যানারে লেখা, ‘নাগরিকত্বের নামে ভাঁওতাবাজি। শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব নয়, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই। সিএএ ভাঁওতাবাজি।’ ঘণ্টাখানেক অবরোধ চলে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অবরোধে শামিল হওয়া অনেকেই জানালেন, তাঁরা এত দিন সিএএ সমর্থন করতেন, কারণ ভেবেছিলেন, সিএএ-এর মাধ্যমে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। কোনও আবেদন করতে হবে না। এখন তাঁরা জানতে পেরেছেন, সিএএ আইনে আবেদন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে। মতুয়া ভক্ত সুজিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘সিএএ হচ্ছে ভারতবর্ষে বসবাসকারী বৈধ ও অবৈধ মানুষদের চিহ্নিত করার আইন। সেখানে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের কথা বলা নেই।’’ মতুয়া ভক্ত মাধুরী বালার দাবি, ‘‘সিএএ আইন আমরা মানছি না। কারণ, আমরা এ দেশে নাগরিক। এত দিন পরে ২০২৪ সালে এসে বলা হচ্ছে, আপনারা নাগরিকত্ব জন্য আবেদন করুক। কেন আবেদন করব? নাগরিক বলেই তো আমাদের ভোটে শান্তনু ঠাকুর জিতেছিলেন। আমাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন আছে। আমরা ভোট দিই, আমরা নাগরিক। নতুন করে আবেদন করব না। নাগরিকত্ব দিতে হলে নিঃশর্তে মতুয়াদের নাগরিকত্ব ঘোষণা করা হোক।’’

মতুয়া সমাজের যে অংশের মানুষ সিএএ-র বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছেন, তাঁদের সম্পর্কে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এর আগে বলেছিলেন, ‘‘এঁরা আসলে আইন পড়ে বুঝতে পারছেন না। ৪৪ পাতার আইনে প্রকৃত অর্থে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কথাই বলা হয়েছে। যাঁদের নথিপত্র আছে, তাঁরা জমা দেবেন। যাঁদের নেই, তাঁরা দেবেন না। নথিপত্র জমা দেওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে নথি চাওয়া হয়েছে। তবে নথি দিতেই হবে এমনটা নয়।’’

এই প্রসঙ্গেই গত রবিবার শান্তনু গোবরডাঙার বেড়গুম ১ পঞ্চায়েত এলাকায় কর্মিসভায় গিয়ে বলেন, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা মতুয়া নন। তাঁরা ননসেন্স (নির্বোধ)। রাস্তায় কয়েকটা নুড়ি-পাথর পড়ে থাকে। পায়ের লাথিতে রাস্তার পাশেই সেগুলি সরে যায়। এঁদের পরিস্থিতিও একই হবে।’’ মতুয়াদের এ দিনের কর্মসূচির বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘সিএএ আইনে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা আছে। কোনও শর্ত নেই। তৃণমূল এঁদের ভুল বোঝাচ্ছে। আমার সন্দেহ আছে, এঁরা মতুয়া কি না। কারণ, মতুয়ারা সকলে বিজেপির সঙ্গেই আছেন।’’

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজেপি ভাঁওতা দিয়ে মতুয়াদের ভোটের জন্য ব্যবহার করছে। ভোট শেষ হলে এঁদের ছুড়ে ফেলে দেবে। এক দিক দিয়ে ভাল হল, মতুয়ারা আশায় ছিলেন সিএএ-এর মাধ্যমে তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। এখন অনলাইনে আবেদন করতে গেলে নথিপত্র চাইছে। মতুয়ারা বুঝতে পেরেছেন, তাঁদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসও বলেন, ‘‘মতুয়ারা নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে পথে নেমে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলন করছেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, বিজেপি তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে ভাঁওতা দিয়ে এসেছে। সে কারণে আজ তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE