(বাঁ দিকে) নবীন পট্টনায়ক। ভিকে পান্ডিয়ান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
টানা আড়াই দশক ওড়িশায় ক্ষমতায় থাকার পর বিজেপির কাছে কুর্সি খুইয়েছেন বিজু জনতা দল (বিজেডি)-এর প্রধান নবীন পট্টনায়ক। তাঁর এই আকস্মিক পরাজয়ের জন্য প্রাক্তন আমলা ভিকে পান্ডিয়ান দায়ী বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। এই বিতর্কের আবহেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা জানালেন নবীনের ব্যক্তিগত সচিব থেকে ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠা পান্ডিয়ান।
রবিবার একটি ভিডিয়োবার্তায় সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের কথা জানিয়ে পান্ডিয়ান বলেন, “আমি নবীনবাবু (নবীন পট্টনায়ক)-কে সাহায্য করতে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন সচেতন ভাবেই নিজেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিচ্ছি।” দলের পরাজয়ের জন্য বিজেডি কর্মী-সমর্থকদের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি। পান্ডিয়ান বলেন, “আমার এই যাত্রায় যদি আমি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকি, তবে দুঃখিত। আমার বিরুদ্ধে যে প্রচার চালানো হয়েছিল, তা যদি বিজেডির পরাজয়ের কারণ হয়, তার জন্যও আমি দুঃখিত।’’
আইএএস আধিকারিক হিসাবে কর্মদক্ষতার জন্য ওড়িশার সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীনের সুনজরে ছিলেন পান্ডিয়ান। গত নভেম্বরে আমলার চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু পান্ডিয়ান দলের প্রবীণ নেতাদের কোণঠাসা করছেন, এই অভিযোগ তুলে লোকসভা ভোটের আগেই দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। ভোটের ফল বেরোলে দেখা যায়, ওড়িশার ২১টি আসনের মধ্যে একটিও পায়নি নবীনের দল। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই হওয়া বিধানসভা ভোটেও পরাজয়ের মুখ দেখে বিজেডি। ১৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫১টিতে জেতে তারা। বিজেপি জেতে ৭৮টি আসনে। ২০০০ সাল থেকে টানা মুখ্যমন্ত্রী থাকা নবীন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি দাবি করেছিল, তামিলনাড়ুর আইএএস আধিকারিক পান্ডিয়ানকেই নিজের উত্তরসূরি হিসাবে বেছে নিচ্ছেন নবীন। নবীন নিজে অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেন। জানান, তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী বেছে নেবেন ওড়িশার মানুষ। কিন্তু নবীন যখন এই ঘোষণা করছেন, তখন ওড়িশায় তিন দফায় নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। বাকি ছিল মাত্র একটি দফার ভোট। তাই যে ওড়িয়া অস্মিতা ছিল নবীনের অন্যতম রাজনৈতিক পুঁজি, তাতেই বড় ধরনের ঘা লাগে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
পোড়খাওয়া রাজনীতিক নবীন অবশ্য ভোটের ফলঘোষণার পরেই পান্ডিয়ানের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি করেন বলে বিজেডি সূত্রে খবর। ভোটের আগে পান্ডিয়ানকে নবীনের পাশে প্রায় প্রতিটি প্রচারসভায় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু রাজভবনে ইস্তফা দিতে যাওয়ার সময় ‘নবীনবাবু’র পাশে দেখা যায়নি প্রিয় পান্ডিয়ানকে। এমনকি বিজেডি কর্মীদের সঙ্গে হারের কারণ পর্যালোচনার জন্য নবীন যে ঘরোয়া বৈঠকগুলি করছেন, সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন একদা ছায়াসঙ্গী পান্ডিয়ান। তবে শনিবারও পান্ডিয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে দক্ষ আমলা বলে অভিহিত করেছিলেন নবীন। কিন্তু ঘরে-বাইরে বিতর্কের আবহে নবীনই পান্ডিয়ানকে ছেঁটে ফেললেন কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy