মুকুটমনি অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের নদিয়া দক্ষিণ শাখার একদা সভাপতি মুকুটমণি অধিকারী লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পর সাংগঠনিক রদবদল ঘিরে তৎপরতা শুরু হয়েছিল। এ বার নতুন সভাপতি বেছে নেওয়া হল। বিগত প্রায় চার বছর ওই পদে ছিলেন মুকুটমণি। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন হাঁসখালির বাসিন্দা সুশীল বসু। তিনি মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তুনু ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
গত ৭ মার্চ মুকুটমণি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সপ্তাহ তিনেক সংগঠনের দায়িত্ব সামলেছেন দুই কার্যকরী সভাপতি জয় মিত্র ও কনককান্তি মজুমদার। শুক্রবার জয় বলেন, “মুকুটমণি অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরের দিন কেন্দ্রীয় কমিটি আমাদের চিঠি দিয়ে জানায় যে কার্যকরী সভাপতিকে কার্যভার দেওয়া হল। সেই মতো আমি দায়িত্ব পালন করেছি।” ওই স্বল্প মেয়াদেই তিনি রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি বদল করেন। জয়ের বক্তব্য, “ওখানে পরিমল বিশ্বাসের পরিবর্তে বিবেক বিশ্বাসকে নতুন সভাপতি করা হয়েছে। আগের সভাপতির নামে প্রচুর অভিযোগ আসছিল।” যদিও ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, মুকুটমণির ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই পরিমলকে সরানো হয়েছে। পরিমল আবার বলেন, “আমার কাছে এমন কোনও খবর নেই। উনি কে আমাকে সরিয়ে দেওয়ার?”
সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিমেষ বালা অবশ্য দাবি করেন, নদিয়া দক্ষিণে সংগঠনের সভাপতি বদলের সঙ্গে মুকুটমণির তৃণমূলে যোগদানের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর ব্যাখ্যা, “২০২০ সালের জুলাইয়ে মুকুটমণি সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণের সভাপতি হয়েছিলেন। সভাপতি হিসাবে তিনি দু’বার দায়িত্ব পালন করছেন। এ বার স্বাভাবিক নিয়মেই তাঁর জায়গায় অন্য জনের সভাপতি হওয়ার কথা ছিল। সেটাই হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই।”
সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই সুশীল বসু অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর প্রথম কাজ হবে মতুয়াদের যে অংশ মুকুটমণির সঙ্গে অন্য দিকে পা বাড়িয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনা। এ দিন তিনিবলেন, “যাঁরা ওঁর সঙ্গে গিয়েছেন প্রথমে তাঁদের বুঝিয়ে, প্রয়োজনে পায়ে ধরে অনুরোধ করব ফিরে আসার জন্য। ঠাকুরের ভক্তদের পায়ে ধরতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যদি তাঁরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে না চান তা হলে তাঁদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।”
মুকুটমণি পাল্টা দাবি করেন, “এটা শান্তনু ঠাকুরের স্বেচ্ছাচারিতা। গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়াদের সঙ্ঘশক্তি বৃদ্ধি করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিজেপি না হলে কেউ ওঁদের সঙ্গে থাকতে পারবেন না এমন চিন্তাভাবনা যে কোনও ধর্মদর্শনের পরিপন্থী, মতুয়াদের তো বটেই। তবে এসবে কিছু এসে যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy