E-Paper

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট স্থায়ী নয়, দাবি করলেন কেজরী

গুজরাত বা দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলেও, পঞ্জাবে একা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যে শাসক দল আপ। ওই রাজ্যে আপের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৮:১২
অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল ছবি।

কংগ্রেসের সঙ্গে আম আদমি পার্টির জোট সাময়িক বলে আজ নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপের আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপিকে হারাতেই পরিস্থিতি বিচার করে দিল্লিতে ওই জোট করা হয়েছে। তা স্থায়ী জোট নয়।’’ এ দিকে আজ কেজরীওয়ালের জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন শুনতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। ফলে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী ২ জুন তিহাড় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে কেজরীওয়ালকে।

দিল্লিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্ষমতা দখল করেছিল আপ। ঠিক এক দশকের মাথায় সেই দিল্লিতেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করায় বিজেপি যেমন প্রশ্ন তোলে, তেমনি আপ ও কংগ্রেসের ভিতরেও সরব হন জোট-বিরোধী নেতারা। আজ একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কংগ্রেস ও আপের জোটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘আমাদের বিয়ে হয়নি। এটা দেখেশুনে বা প্রেম করে বিয়ে নয়। বিজেপির স্বৈরতন্ত্র ও গুন্ডাগিরি রুখে দিয়ে দেশকে বাঁচাতে দু’দল এক জোট হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ আপ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, এখন জোট হলেও, আগামী দিনে দু’দল যে ভিন্ন পথের যাত্রী হতে পারেন সেই ইঙ্গিত এখনই দিয়ে রাখলেন কেজরীওয়াল।

গুজরাত বা দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলেও, পঞ্জাবে একা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যে শাসক দল আপ। ওই রাজ্যে আপের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। সেই অবস্থানের ব্যাখ্যায় কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য দেশকে বাঁচানো। তাই যেখানে বিজেপিকে হারানোর প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে দু’দল একজোট হয়ে প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্জাবে বিজেপির কোনও অস্তিত্ব নেই, তাই দু’দল নিজেদের শক্তি আলাদা করে যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ আপ সূত্রের মতে, পঞ্জাবে আপ ও কংগ্রেস জোট হলে বিজেপি ও শিরোমণি অকালি দলের জোট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হত। সেই সঙ্গে সরকার বিরোধী ভোট এনডিএ জোটের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যা রুখতেই আলাদা
লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত।

জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ বনাম যোগী আদিত্যনাথের বিরোধের সম্ভাবনা উস্কে দেওয়ার কৌশল নিয়েছিলেন কেজরীলাল। আজ নরেন্দ্র মোদী এবং আরএসএস-এর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে চেয়ে কেজরীওয়ালের প্রশ্ন, ‘‘২০১৪ সালে মোদী ছিলেন দেশের প্রধান সেবক। ২০১৯ সালে তিনি হলেন চৌকিদার। আর ২০২৪ সালে তিনি নিজেকে ভগবানের অবতার হিসাবে দাবি করেছেন। আরএসএস কি বিশ্বাস করে, মোদী ভগবানের অবতার?’’

আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কেজরীওয়াল বর্তমানে জামিনে মুক্ত থাকলেও, আগামী ১ জুন তাঁর জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেই মেয়াদ যাতে অন্তত সাত দিন বৃদ্ধি পায়, তার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানান কেজরীওয়াল। গতকাল শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ মামলাটি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠনোর নির্দেশ দেন। আজ মামলাটি তালিকাভুক্ত করতে অস্বীকার করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার। ফলে পরিস্থিতি বদল না হলে আগামী ২ জুন ফের তিহাড়ে ঢুকতে হবে কেজরীওয়ালকে। এ প্রসঙ্গে কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘আমার জেলে যাওয়া কোনও বিষয় নয়। দেশের ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে। আমাকে যত দিন খুশি জেলে রেখে দেওয়া হোক, কোনও ভাবেই মাথা নত করব না।’’ পাশাপাশি আজ ফের তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, বিজেপি চাইলেও, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না। কেজরীওয়াল
বলেন, ‘‘আমি বরং সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানাব, যাতে জেলে আমায় কিছুটা স্থান বরাদ্দ করা হোক, যাতে আমি সেখান থেকেই দিল্লি প্রশাসন চালাতে পারি।’’

এরই মধ্যে আজ অরবিন্দের স্ত্রী সুনীতার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে এফআইআর দায়ের করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন এক আইনজীবী। অভিযোগ, গত ২৮ মার্চ রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে কেজরীওয়ালের মামলার শুনানির ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে কেউ ফাঁস করে দেন। সেই ভিডিয়ো নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ‘রিপোস্ট’ করেন সুনীতা। আবেদনকারী বলেছেন, ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে সুনীতা তথা আপ নেতৃত্ব বিচারব্যবস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করেছিল। তাই সুনীতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশেষ দলকে দিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Arvind Kejriwal Congress AAP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy