সামনেই বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। চোখে চোখ রেখেই রামমন্দির, বিলকিস বানো থেকে নীতীশ কুমার, ঝাড়খণ্ড নিয়ে তাঁকে নিশানা করছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। কিন্তু মুখ ফস্কে ‘এ বার ৪০০ পার হয়ে যাবে’ বলায় নরেন্দ্র মোদী থেকে গোটা বিজেপি হেসে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে গেল।
রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপর ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় আজ খড়্গে নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি নিশানা করেন। কঠিন মুখে যাবতীয় সমালোচনা শুনছিলেন মোদী। সে সময়ে খড়্গে বলেন, ‘‘আপনাদের তো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এখন এনডিএ ৩৩০-৩৩৫ জন সাংসদ রয়েছেন। এ বার ৪০০ পার হয়ে যাবে।’’ খড়্গে বলতে চেয়েছিলেন, বিজেপি দাবি করছে, এ বার ৪০০ পার হয়ে যাবে। তার বদলে সরাসরি ‘৪০০ পার হয়ে যাবে’ বলে ফেলায় বিজেপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েন। খোদ নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গয়াল হাসতে শুরু করেন।
বিজেপি সাংসদদের টেবিল চাপড়ানো দেখে খড়্গে বলেন, ‘‘এঁরা সব নরেন্দ্র মোদীর কৃপায় জিতে এসেছেন। লোকসভায় বিজেপি ১০০ আসনও পার করবে না। ইন্ডিয়া সর্শবক্তি দিয়ে লড়বে।’’ গয়ালের কটাক্ষ, ‘‘খড়্গে সত্যি কথাটা বলে ফেলেছেন। রোজই কেউ না কেউ ইন্ডিয়া ছেড়ে যাচ্ছে। ইন্ডিয়া জোটের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।’’ খড়্গে অবশ্য এতে দমেননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই লোকসভা নির্বাচনকেই শেষ ভোট ঘোষণা করে দিতে পারেন। হতেই পারে যে তাঁর মনে হচ্ছে, তিনি এত জনপ্রিয় যে গণতন্ত্রের দরকার নেই। রামমন্দিরের উদ্বোধনে তিনি মোহন ভাগবতকে পাশে নিয়ে বসেছিলেন। যিনি সংরক্ষণ উঠিয়ে দিতে চান। গুজরাতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিলকিস বানোর ধর্ষকদের জেল থেকে মুক্তির পরে মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। প্রধানমন্ত্রী তার নিন্দা করেন না। তিনি মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন না। তিনি বিশেষ বিশেষ বিষয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তৃতা করেন। কিন্তু মণিপুরের হিংসা, মহিলাদের অপমান, দলিতদের উপর অত্যাচার নিয়ে মুখ খোলেন না।’’
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার নাম না করে তাঁর মন্তব্য তুলে ধরে খড়্গে বলেন, ‘‘বিজেপির এক মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যের সেবা করা শূদ্রদের কর্তব্য। এমন মুখ্যমন্ত্রীকে পদ থেকে সরানো উচিত।’’ মোদী জমানায় রাজ্যপালদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খড়্গে। তিনি বলেন, ‘‘বিহারে নীতীশ কুমারের পদত্যাগের ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ পাঠ করানো হয়েছে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে শপথ পাঠ করাতে রাজ্যপাল দেরি করছেন। এটা লজ্জাজনক।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)