Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
PM Narendra Modi

প্রধানমন্ত্রীর পদ চাইবেন ভাইপো, কটাক্ষ মোদীর

পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে আক্রমণ শানানোর পাশাপাশি অন্য জনসভাগুলির মতো আজও হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের লক্ষ্যে প্রচার চালান মোদী।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৪ ০৮:১৮
Share: Save:

নয়াদিল্লি, ২৫ মে: বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরে পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী হবেন আর সেই লড়াইয়ে ‘ভাইপো’ (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) রয়েছেন বলে আজ পটনার পাটালিপুত্র কেন্দ্রের প্রচারে গিয়ে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আরও দাবি করেছেন, মুসলিমদের তুষ্টিকরণে ‘ইন্ডিয়া’ ‘মুজরো’ করতেও পিছপা নয়। মোদীর ওই মন্তব্য শালীনতার সব সীমা ছাপিয়ে গিয়েছে বলে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজের পদের মর্যাদার কথাটা তো মাথায় রাখুন।’’

বিরোধী জোটের নেতা কে হবেন— তা নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিজেপি। নেতৃত্বের আগাম ঘোষণা জোট ভেঙে দিতে পারে— সেই আশঙ্কায় বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে ইন্ডিয়া-র শরিকেরা। তবে এই নিয়েই আজ বিরোধীদের নিশানা করতে দেখা যায় মোদীকে। পাটালিপুত্রের সভা থেকে নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন গান্ধী পরিবারের ছেলে (রাহুল গান্ধী), সমাজবাদী পরিবারের ছেলে (অখিলেশ যাদব), ন্যশনাল কনফারেন্স পরিবারের ছেলে (ওমর আবদুল্লা), এনসিপি পরিবারের কন্যা (সুপ্রিয়া সুলে), তৃণমূল পরিবারের ভাইপো (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়), আম আদমি পার্টির স্ত্রী (সুনীতা কেজরীওয়াল), নকল শিবসেনা পরিবারের ছেলে (আদিত্য ঠাকুর) এবং সব শেষে আরজেডি পরিবারের ছেলেমেয়েরা (তেজস্বী যাদব ও তাঁর দিদিরা)।’’ মোদীর কথায়, ‘‘বিরোধী জোট একবার ক্ষমতায় এলেই প্রধানমন্ত্রীর পদকে কেন্দ্র করে দলগুলির মধ্যে লড়াই শুরু হবেই।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে আক্রমণ শানানোর পাশাপাশি অন্য জনসভাগুলির মতো আজও হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের লক্ষ্যে প্রচার চালান মোদী। বিরোধীদের মজুরো শিল্পীদের সঙ্গেও তুলনা করেন। দলের প্রার্থী রামকৃপাল যাদবের হয়ে প্রচার করতে গিয়ে পাটালিপুত্রের সভায় মোদী বলেন, ‘‘বিহার বরাবরই সামাজিক ন্যায়বিচারের লড়াইকে নতুন দিশা দিতে সক্ষম হয়েছে। বিরোধীরা তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং ওবিসিদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে তা মুসলিমদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। কিন্তু আমি ইন্ডিয়া-র পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে দেব না। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ওদের গোলাম হয়ে ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করার জন্য মুজরো পর্যন্ত করতে পারে।’’ বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে বলতে গিয়ে লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বীর সমালোচনায় ফের মুজরো প্রসঙ্গ টেনে আনেন মোদী। বলেন, তেলঙ্গানা, পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গের নেতারা বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা সত্ত্বেও আরজেডি নেতারা নিজেদের প্রতীক চিহ্ন লন্ঠন নিয়ে মুজরো করে যাচ্ছেন, প্রতিবাদে একটি কথা বলার সাহস নেই তাঁদের।

আজ প্রধানমন্ত্রীর ‘মুজরো’ মন্তব্যের পাল্টা আক্রমণ শানানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন প্রিয়ঙ্কা। প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা ব্যক্তির মুখে বিরোধীদের সম্পর্কে এমন শব্দ মানায় না— মোদীকে তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘মোদীজী কী বলছেন? তাঁর কি নিজের পদের সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব নেই? আমরা প্রধানমন্ত্রীর পদকে সম্মান করি। কিন্তু তাঁর আসল পরিচয় এখন সবাই দেখতে পাচ্ছে। উনি ভুলে গিয়েছেন যে তিনি আমাদের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। এমন কথা বললে ভবিষ্যৎ প্রজন্মই বা কী বলবে!’’

সংবিধান পরিবর্তনের প্রশ্নেও আক্রমণ শানিয়েছেন মোদী। নির্বাচনের আগে থেকেই চারশো আসনের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল বিজেপি। যাকে প্রচারের প্রধান হাতিয়ারও করা হয়। বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, চারশো আসনের কথা বলার পিছনে বিজেপির আসল লক্ষ্য, সংবিধান পরিবর্তন করে সংরক্ষণ ব্যবস্থাই তুলে দেওয়া। বিরোধীদের ওই প্রচারে ওবিসি সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় ভোট শুরু হওয়ার পর থেকে প্রচারে চারশো আসন জেতা প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে গেরুয়া শিবির।

বিহারের সভায় মোদী পাল্টা বলেন, ‘‘বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলে প্রথমেই তারা সংবিধান পরিবর্তন করে সংরক্ষণের সমস্ত সুবিধা মুসলিমদের দিয়ে দেবে। এমন ভাবে তা করা হবে যে আদালতও কিছু করতে পারবে না।’’ অনেকের মতে, চারশো আসন নিয়ে প্রচারে হিতে বিপরীত হয়েছে। তফসিলি জাতি, ওবিসি সমাজে প্রবল বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। যা আটকাতে বিজেপি নেতাদের বারবার বলতে হচ্ছে— ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদল করা হবে না। তবে এ বার ইন্ডিয়া-র বিরুদ্ধে সংবিধান পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগ আনলেন মোদী। সেই সঙ্গে নতুন করে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দেওয়ার কৌশলও নিয়েছে মোদী ও তাঁর দল। যার লক্ষ্য, শেষ দফা ভোটে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

PM Narendra Modi BJP TMC Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE