রামমন্দির প্রতিষ্ঠা থেকে তিন তালাক প্রথা রদ। মহিলা সংরক্ষণ থেকে দণ্ড সংহিতা বিল পাশ। আজ চলতি লোকসভার শেষ দিনে শেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকারের পাঁচ বছরের সাফল্যের তালিকা তুলে ধরলেন নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীরা বলছেন লোকসভার মঞ্চকে ব্যবহার করে কার্যত দলের হয়ে ভোট প্রচারে নেমে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সাধারণত গত দশ বছরে লোকসভা বা রাজ্যসভায় মোদী যখনই বক্তব্য রেখেছেন, বিরোধীদের আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছে। আজ কিছুটা ভিন্ন পথে হাঁটেন মোদী। বিরোধীদের তেড়েফুঁড়ে আক্রমণের চেয়ে আজ গোড়া থেকেই সরকারের সাফল্যের কাহিনি তুলে ধরার কৌশল নেন প্রধানমন্ত্রী। পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় এসেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করেছিলেন মোদী। আজ নিজের বক্তব্যে কাশ্মীরের ‘শান্ত’ পরিস্থিতি নিয়ে যেমন সরব হন, তেমন-ই অতিমারির সময়ে সরকারের ভূমিকা নিয়েও মুখ খুলেছেন মোদী। বলেন, ‘‘এই সরকারের একাধিক সংস্কারমুখী সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। কাশ্মীরের মানুষ সামাজিক ন্যায় থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এই সরকার তাঁদের ন্যায় দিতে সক্ষম হয়েছে।’’
মহিলা সংরক্ষণ বিল, তিন তালাক প্রথা রদের মতো সিদ্ধান্ত কিংবা তথ্য সুরক্ষা আইনের মতো পদক্ষেপ আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন মোদী। তিন তালাক প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘আদালত মুসলিম মহিলাদের পক্ষে রায় দিলেও সংখ্যালঘু সমাজের নারীরা এর সুবিধে পাচ্ছিলেন না। কিন্তু এই লোকসভা মুসলিম মহিলাদের উপরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হয়ে চলা অবিচার রুখতে সক্ষম হয়েছে।’’ বার্তা স্পষ্ট, আগামী দিনে হিন্দু ও মুসলিম মহিলা ভোটারদের মন জয়ে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ব্রিটিশ আমলের আইনের পরিবর্তে নতুন আইন আনা, ব্যবসার পথ সুগম করা, নতুন শিক্ষানীতি, গবেষণা ক্ষেত্রে জোর দেওয়া নিয়েও মুখ খোলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘দণ্ড সংহিতায় অপ্রয়োজনীয় একাধিক আইন বাতিল করা হয়েছে। ব্যবসা সুগম করার লক্ষ্যে বাতিল হয়েছে অন্তত ষাটটি আইন।’’
আজ অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশন শেষ হল। কিছু দিনেই লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দেবে নির্বাচন কমিশন। বিজেডি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাবের কথায়, ‘‘বার্ষিক পরীক্ষার সময়ে পড়ুয়াদের মধ্যে সবাই পাশ করে পরের ক্লাসে উঠবে কি না, এই উদ্বেগ কাজ করে। এমন পরিবেশ এখন লোকসভাতেও।’’ আজ সেই কথার সূত্র ধরে মোদী বলেন, ‘‘সামনেই নির্বাচন। কিছু সাংসদ উদ্বেগে ভুগতে শুরু করেছেন। আমার ক্ষেত্রে যত চ্যালেঞ্জ আসে, তত ভিতর থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠি। নির্বাচন তো গণতন্ত্রে আবশ্যিক। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা দেখে এ দেশের প্রতি বিশ্ববাসীর সম্মান বাড়বে বলেই মনে করি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)