আগামী ১ জুন শহরে শান্তিপূর্ণ ভোট করার জন্য বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। বুধবার আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে কলকাতা পুলিশের আধিকারিক এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভোট সংক্রান্ত বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের খবর, বৈঠকে নগরপাল জানান, গত ডিসেম্বর থেকে শহরে বড় রাজনৈতিক গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে পুলিশ কাজ করছে। বাহিনীর আধিকারিকদের অভিজ্ঞতা রয়েছে অতীতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভাবে ভোট করানোর। সেই ধারা এ বারও বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিশেষত বস্তি এবং বহুতলের ভোটারেরা যাতে বাধাহীন ভাবে ভোট দিতে পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের আধিকারিকদের বিশেষ ভাবে নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। এর জন্য কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) মোতায়েন করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের থানা এলাকাগুলিতে। এমন দল থাকবে ১৮৫টি। এ ছাড়াও থাকবে স্পেশ্যাল কিউআরটি। তাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আট জন জওয়ান এবং কলকাতা পুলিশের এক জন কর্মী থাকবেন। গত ২০ মে হাওড়ায় ভোটের দিনে বহুতল এবং বস্তির বাসিন্দাদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের একাংশের ধারণা, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন এমন নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, কোনও গোলমালের খবর এলে দশ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তা মেটানোর জন্য বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে যাতে গোলমাল মেটানো যায়, তার জন্য স্পেশ্যাল কিউআরটি ছাড়াও থাকছে ৩৪৭টি সেক্টর মোবাইল এবং ২৪০টি আরটি মোবাইল। পাশাপাশি রাখা হচ্ছে থানা এবং সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের স্ট্রাইকিং ফোর্সও। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শহরের বিভিন্ন থানার অধীনস্থ এলাকা কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। তাই কোথাও ১০টি কিউআরটি, কোথাও ১২টি কিউআরটি মোতায়েন করা হচ্ছে।’’
সেই সঙ্গে লালবাজার জানিয়েছে, আরসি-ডিসি থেকে ইভিএম নিয়ে বুথে যাওয়ার জন্য এবং ভোট মিটে গেলে সেগুলি ফিরিয়ে আনার জন্য রুট নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের আরও নির্দেশ, শহরের হোটেল এবং ক্লাবগুলিতে তল্লাশি চালাতে হবে। কোনও ভাবেই যাতে সেখানে বহিরাগতদের জমায়েত না হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ওই তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবারের ভোটের জন্য এক দিন আগে থেকেই টহল দেওয়া শুরু করবে কিউআরটি, সেক্টর মোবাইল এবং আরটি মোবাইল। সেই সঙ্গে র্যাফ এবং কমব্যাট বাহিনী নিয়ে টহল দেবেন কলকাতা পুলিশের ৩০ জন উপ-নগরপাল এবং উচ্চপদস্থ কর্তারা। প্রত্যেক উপ-নগরপালকে একাধিক থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অধীনে থাকবেন সহকারী নগরপাল এবং তাঁর বাহিনী। এ দিন থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)