E-Paper

শিকেয় সমস্যা, প্রচারে শুধুই ‘সন্ত্রাস’

দুয়ারে লোকসভা ভোট। প্রতিটি কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভা। রইল বিধানসভাওয়াড়ি পরিক্রমা।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ০৮:১১

—প্রতীকী চিত্র।

অন্য সময়ের আপাত শান্ত এলাকাটিতে বিধানসভা, পঞ্চায়েত বা লোকসভার মতো যে কোনও নির্বাচন এলেই উঠে আসে সন্ত্রাস প্রসঙ্গ। এবারেও কাঁথি লোকসভার এই উত্তর কাঁথি বিধানসভায় শাসক ও বিরোধী পক্ষের ভোট প্রচারের প্রধান হাতিয়ার সন্ত্রাস প্রসঙ্গ। অথচ এই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা, চাষ জমি দখলের মতো অভিযোগের বিষয় রয়েছে প্রার্থীদের কাছে আলোচনার জন্য।

কাঁথি লোকসভা এলাকায় যে কোনও দলের জয়-পরাজয়ের ভাগ্য নির্ধারণ করে উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকা। এখানে একদিকে রয়েছে দেশপ্রাণ ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েত এলাকা। অন্যদিকে রয়েছে কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি, কুমিরদা এবং কানাইদিঘি পঞ্চায়েতের একাংশ। থানা থেকে অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ায় এই সব এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারি কম থাকে বলে দাবি। সেই সুযোগে এলাকা দখলের রাজনীতিতে ভোটের আগে হামেশাই অশান্তির অভিযোগ ওঠে। ভাজাচাউলি এবং শুনিয়া এলাকা বাম আমলে বিরোধীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এবং গুলি চালানোর ঘটনা একসময় নিয়মিত সংবাদের শিরোনামে থাকত।

রাজনৈতিক পালাবদলের পর অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টেছে। গত বিধানসভা ভোটে এই এলাকায় তৃণমূলের প্রভাবশালী প্রার্থী তরুণ জানাকে হারিয়ে বিধায়ক হন বিজেপির সুমিতা সিংহ। এবার লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু হতেই এলাকায় ফের সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে বিজেপি এবং তৃণমূল দুপক্ষই। কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধীদল নেতা রাজশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘ভাজাচাউলি এলাকায় দলের এক কর্মীর বাড়ির একাংশ ব্যবহার করে কার্যালয় করা হয়েছিল। সেই কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত দলের কার্যকর্তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে শাসকদলের লোকজন।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা বিকাশ বেজ বলছেন, ‘‘ভোট এলেই বিজেপি মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের হেনস্থা করার চেষ্টা করে।’’

এদিকে স্থানীয়েরা দাবি করছেন, শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের মদতে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ভেড়ির জন্য চাষের জমি নিয়ে নিচ্ছে মাফিয়ারা। কেউ আবার বলছেন, এলাকার চিংড়ির রফতানি নিয়ে সমস্যা চলছে। উত্তর কাঁথি বিধানসভায় এলাকার আরেকটি বড় সমস্যা পানীয় জল। কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদা এবং কানাইদিঘি এলাকায় দীর্ঘদিনের পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। বহু মানুষকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে দইসাই বা গয়াগিরি গিয়ে পানীয় জল নিয়ে যেতে হয়। অথচ এই সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ প্রচারে উঠে আসে না বলে দাবি।

কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘‘বেআইনিভাবে ভেড়ি তৈরি রাজ্য সরকার প্রতিরোধ করতে পারেনি। আমরা বলছি বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার তৈরি হলে এ ধরনের অনিয়ম রুখবই।’’ যদিও তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক বলছেন, ‘‘আগে যাঁরা সিপিএম করতেন, এখন তাঁরাই বিজেপি। এখন এলাকায় শান্তি ফিরেছে, উন্নয়ন হচ্ছে। পানীয় জলের সমস্যা দ্রুত মিটবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Election Violence Political Violence

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy