জলের ঘাটতি আছে। তাই অপচয় রোধে সবাইকে এখনই সতর্ক হতে হবে।— এমনই সচেতনতার বার্তা দেওয়া প্ল্যাকার্ড হাতে গ্রামের পথে হাঁটল প্রধানমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রী থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ড্রাম, বিউগল বাজিয়ে চলল একদল পড়ুয়া। সমস্যাটা সত্যিকারের হলেও মন্ত্রীরা কেউ আসল নয়। ওরা স্কুলের শিশু সংসদের মন্ত্রী।
শুক্রবার, ২২ মার্চ ছিল ‘বিশ্ব জল দিবস’। তাই জল অপচয় রোধের বার্তা নিয়ে এলাকায় পদযাত্রা করল সোনামুখী ব্লকের ডিহিপাড়া পঞ্চায়েতের মদনপুর জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। প্রায় ৭০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে পথে নেমেছিল স্কুলের শিশু সংসদের প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ শ্রেণির শুভেন্দু বাউরি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তৃতীয় শ্রেণির অভ্রজ্যোতি মণ্ডল, পরিবেশ মন্ত্রী অঙ্কিত জোত। সঙ্গে ছিলেন প্রধান শিক্ষক আনন্দময় ঘোষ, সহ-শিক্ষক অতনু ঘোষ।
স্থানীয়েরা জানান, সামনেই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস। তপ্ত দিনে গ্রামের নলকূপে জল মেলে না। পুকুর, খাল-বিলের জল নেমে যায়। মানুষ থেকে গৃহপালিত পশু সবাই কষ্ট পায়। বড়দের চোখ খুলতে ঠিক সময়েই ছোটরা পথে নেমেছে। গ্রামের প্রবীণা রেখা পাল বলেন, ‘‘আমিও ওই স্কুলের ছাত্রী ছিলাম। আজ ওদের জন্য আমার গর্ব হচ্ছে। খুদে গলায় কত বড় কথা ওরা বলে গেল। অকারণে কত জলই আমরা নষ্ট করি!’’
প্রধান শিক্ষক আনন্দময় ঘোষ জানান, গত সাত বছর ধরে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে স্কুলে আনাজের বাগান করা হয়েছে। পড়ুয়ারাও স্কুলে জলের অপচয় করে না।
ডিহিপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পাপিয়া বাউরি, অভিভাবক দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘জল আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, খুদেরা খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিল।’’ প্রশংসা করেন সোনামুখী উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিশ্বনাথ রায়।
বাঁকুড়া জেলার সহকারী পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঞ্জীব দাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সুনাগরিক হতে এই চিন্তা-ভাবনা পড়ুয়াদের মধ্যে গেঁথে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রশংসা করতেই হয়।’’
জল সংরক্ষণ ও জল অপচয় রোধ নিয়ে আলোচনা ও পদযাত্রা করে রাইপুরের চাতরি নিম্ন বুনিয়াদি আবাসিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তমকুমার মণ্ডল জানান, বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষে সবাইকে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)