Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

লকেটে ‘অনীহা’, প্রচারে বিমুখ বিজেপি কর্মীদের একাংশ

হুগলি কেন্দ্রে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেশ কিছু দিন ধরেই প্রকট হচ্ছিল। লকেটের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের অনেকেই সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করেন।

চাঁদেরঘাটে লকেটের সভা। নদিয়ার চাঁদেরঘাটে। ২ জানুয়ারি ২০২৪।

চাঁদেরঘাটে লকেটের সভা। নদিয়ার চাঁদেরঘাটে। ২ জানুয়ারি ২০২৪। ছবি: সাগর হালদার

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৬:২৪
Share: Save:

হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এ বারও বিজেপির টিকিট পেয়েছেন। প্রচারেও নেমে পড়েছেন। কিন্তু শুরুতে তেমন ‘ঝড়’ উঠছে কই!

এ নিয়ে গুঞ্জন পদ্ম-শিবিরের অন্দরেই। অনেকে মনে করছেন, সাংসদকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের ক্ষোভের কারণেই এই পরিস্থিতি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

দলীয় সূত্রের খবর, সোমবার বাঁশবেড়িয়ায় বৈঠকে কর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো বাদানুবাদে জড়ান লকেট। যার জেরে বৈঠকের পরে মশাল মিছিলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বৈঠকে কর্মীদের সংখ্যা আশানুরূপ ছিল না। সন্দেশখালি-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ওই দিন চুঁচুড়ায় লকেটের নেতৃত্বে বিজেপির কমিশনারেট অফিস অভিযানে লোক হয়েছিল মেরেকেটে আড়াই-তিনশো। প্রচারের শুরুতে অগোছাল এই পরিস্থিতি নজর এড়ায়নি শহরবাসীরও।

হুগলি কেন্দ্রে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেশ কিছু দিন ধরেই প্রকট হচ্ছিল। লকেটের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের অনেকেই সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করেন। লকেট টিকিট পাওয়ার পরেও তাঁকে ঘিরে অসন্তোষ অব্যাহত। ‘লকেট হেরে যাবেন’ বলে দলেরই কর্মী-সমর্থকদের কেউ কেউ সমাজমাধ্যমে পোস্ট করছেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। এই অবস্থায় অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া শিবিরে।

কেন ক্ষোভ লকেটকে নিয়ে?

দলীয় নেতাদের একাংশই গত পাঁচ বছরে লকেটের উন্নয়নের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের ক্ষোভ, লকেটের কাছে কাজের আবেদন করা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তাঁদের আরও উষ্মা, এখন লোকসভা ভোটের নির্বাচনী কমিটিতে যাঁদের জায়গা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকেই গত বিধানসভা ভোটের পরে হয় বসে গিয়েছিলেন, অথবা তৃণমূলে ভিড়েছিলেন।। এ ক্ষেত্রেও লকেটের ভূমিকা নিয়ে চর্চা চলছে দলীয় কর্মীদের মধ্যে।

তবে দলে কোনও কোন্দল আছে বলে লকেট মানছেন না। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এ সব তৃণমূলের সাজানো। তৃণমূলের দুর্নীতি মানুষ দেখেছেন। তাই হুগলিতে আবার পদ্ম ফুটবে। আমি দ্বিগুণ ভোটে জিতব।’’ সাংসদের সুরেই বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারও বলেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। তৃণমূল মিথ্যা প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে।’’

তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওঁকে (লকেট) নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ওঁদের দলের কর্মীরাই সত্যটা সমাজমাধ্যমে তুলে ধরছেন। মানুষ লকেটের বিরুদ্ধে তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।’’

হুগলিতে লকেটকে নিয়ে বিজেপিতে কোন্দল অবশ্য নতুন নয়। গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে ব্যান্ডেলে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে থাকতেন লকেট। সেখান থেকেই নির্বাচনী কার্যকলাপ চালাতেন। ভোটের আগে লকেটের উপস্থিতিতে সেই বাড়িতেই ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে দলের একাংশের বিরুদ্ধে। লকেট অবশ্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভায় সদ্য তৃণমূল ছেড়ে আসা একাধিক ব্যক্তি বিজেপির টিকিট পান। তাঁদের টিকিট বিলির জন্য লকেটকে দুষে নানা জায়গায় বিক্ষোভ হয়। সিঙ্গুরের এক বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, ‘‘এমন সাংসদের জন্য আখেরে দলেরই ক্ষতি হল।’’ একই দাবি চন্দননগর, চুঁচুড়া, পান্ডুয়ার বিক্ষুব্ধদের অনেকের।

২০১৯ সালে হুগলিতে তৃণমূলের দু’বারের সাংসদ রত্না দে নাগকে প্রায় ৮০ হাজার ভোটে হারান লকেট। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল ৪৬.০৩ শতাংশ ভোট। তৃণমূল পেয়েছিল ৪১ শতাংশ। দু’বছর পরে বিধানসভা ভোটে চুঁচুড়ায় তৃণমূলের অসিত মজুমদারের কাছে প্রায় ১৭ হাজার ভোটে হারেন লকেট। যদিও লোকসভা ভোটে চুঁচুড়া বিধানসভা থেকে লকেট ২১ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, লোকসভায় ধনেখালি ও চন্দননগর ছাড়া বাকি পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে অনেকটা এগিয়ে থাকলেও বিধানসভায় সাতটি কেন্দ্রেই তৃণমূলের কাছে ধরাশায়ী হয় বিজেপি।

এ বার কী হবে? জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Locket chatterjee BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE