Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Nabanna

নির্বাচনের আগেই রাজ্যে বাহিনীর ক্ষতিপূরণে বরাদ্দ

প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, ভোট-নিরাপত্তায় নিযুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও জওয়ানের কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হয় সরকারকে। কোভিডে কারও মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্টকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে।

Nabanna

নবান্ন। —ফাইল ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

শুধু আইনশৃঙ্খলা বা নিরপেক্ষ ভূমিকাই নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তিন-চার বছর ধরে আটকে থাকা মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ নিয়েও জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছিল। সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে নীতিগত আপত্তি থাকলেও, কমিশনের সেই নির্দেশ মান্যতা দেওয়ার পথেই হেঁটেছে রাজ্য। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ক্ষতিপূরণের বেশ কয়েক কোটি টাকা ছাড়া হয়েছে রাজ্যের কোষাগার থেকে।

প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, ভোট-নিরাপত্তায় নিযুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও জওয়ানের কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হয় সরকারকে। কোভিডে কারও মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্টকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও গোলমাল বা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে সেই ক্ষতিপূরণ মাথাপিছু ১৫ লক্ষ টাকা। সূত্রের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে এমন অনেকগুলি মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের। তবে সেই ক্ষতিপূরণ প্রশাসনিক ‘জট’-এ আটকে ছিল।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

সূত্রের খবর, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের রাজ্য সফরে এই প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়। রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নিয়ে হওয়া বৈঠকে ওই জট কাটানোর ব্যাপারে রাজ্যের দ্রুত পদক্ষেপ চেয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তার পরেই ক্ষতিপূরণের বরাদ্দ ছাড়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তারা। যদিও বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, অতীতে বিষমদ কাণ্ড বা বগটুই-কাণ্ডের মতো রাজনৈতিক সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে দরাজ ছিল রাজ্য। সেই জায়গায় কর্তব্যপালনের সময় প্রাণ হারানো সরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ক্ষতিপূরণে গড়িমসি মনোভাব গ্রহণযোগ্য নয়।

সূত্রের খবর, কোভিড এবং অন্যান্য গোলমালে ২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট মিলিয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রায় ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। এতদিন বাদে তারই ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয়েছে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রীতি অনুযায়ী, সাধারণত বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে খরচের ৫০% দিতে হয় রাজ্যকে। বাকি খরচ বহন করে কেন্দ্র। লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে পুরো খরচই বহন করে থাকে কেন্দ্র। তবে প্রাথমিক ভাবে রাজ্যকে খরচ করে হিসাব দাখিল করতে হয় কেন্দ্রের কাছে। সেই অনুযায়ী রাজ্যকে টাকা ফিরিয়ে দেয় কেন্দ্র। সেই সূত্রে ক্ষতিপূরণ বাবদ খরচের কিছুটা অংশ কেন্দ্রের থেকে চাইতেই পারে রাজ্য।

এত বছর ধরে আটকে থাকার পরে তড়িঘড়ি ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার দ্রুত ছাড়ার সিদ্ধান্ত কেন? প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, অতীতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ মেটানোর ক্ষেত্রে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেছিল রাজ্য। যেমন, গত বছর মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ বাবদ প্রায় ১৮৫২ কোটি টাকা (জরিমানা সমেত) মেটাতে রাজ্যকে বলেছিল অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যের পাল্টা যুক্তি ছিল, তারা নিজে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সাধারণত চায় না। নির্বাচনের সময় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সুপারিশে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে। সে ভাবেই গত কয়েকটি নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। যারা বাহিনী পাঠানোর সুপারিশ করে, খরচের বিষয়টা দেখা দরকার তাদেরই। কিন্তু মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে অনড় অবস্থান রাজ্য আর ধরে রাখতে পারেনি। কারণ, কমিশন কর্তারা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কর্ত্যবে গাফিলতি বা নিরপেক্ষতার অভাব থাকলে কঠোরতম পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না দিল্লির নির্বাচন সদন।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE