E-Paper

বিপ্লবের হারে জল-আলো ‘বন্ধ’, নালিশ গঙ্গারামপুরে

লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে প্রায় ১০ হাজার ভোটে হেরেছেন বিপ্লব। তৃণমূল সূত্রের খবর, দাদাকে জেতাতে পুর-এলাকায় প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন পুরপ্রধান প্রশান্ত।

নীহার বিশ্বাস 

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪ ০৮:৩৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

লোকসভা ভোটে হেরেছেন পুরপ্রধানের ‘মেজদা’। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্র। বিরোধীদের অভিযোগ, সে আক্রোশে গত বুধবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দু’টি ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ এবং শুক্রবার থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত পথবাতি বন্ধ করে রাখা হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল পরিচালিত গঙ্গারামপুর পুর-এলাকায়। বালুরঘাট লোকসভা আসনে বিপ্লবকে হারিয়ে জয়ী বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ‘‘তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করে। শহরের মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন বলে আলো, জলের মতো পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।’’ মন্ত্রী, তাঁর ভাই পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার। তবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাস বলেন, ‘‘হার-জিত থাকবেই। তা বলে নাগরিক পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয়। এ ধরনের কাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরদাস্ত করবেন না।’’

লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে প্রায় ১০ হাজার ভোটে হেরেছেন বিপ্লব। তৃণমূল সূত্রের খবর, দাদাকে জেতাতে পুর-এলাকায় প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন পুরপ্রধান প্রশান্ত। অথচ, তাঁর নিজের ওয়ার্ড তো বটেই, শহরের বাকি কোনও ওয়ার্ডেই প্রশান্ত তৃণমূলকে 'লিড' দেওয়াতে পারেনি। প্রায় ১২ হাজার ভোটে এই শহরে পিছিয়ে যায় তৃণমূল। দলের একাংশের দাবি, বিপ্লবের পরাজয়ের পিছনে এই ১২ হাজার ভোট বড় ভূমিকা নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ভুবন কর্মকার, গৌতম পাল, সুনীল রায়দের দাবি, তার পর বুধবার থেকে ১ নম্বর ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার বিপ্লবের পাড়ার দোকানগুলিতে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে তাঁর ‘অনুগামীদের’ একাংশের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সন্ধে থেকে শহরের সমস্ত পথবাতিও জ্বলছে না।

পুরসভার এক পাম্প অপারেটরের দাবি, এলাকার পুরপ্রতিনিধি পাম্প বন্ধ রাখার ‘হুমকি’ দেওয়ায়, জল বন্ধ করা হয়। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি মানিক রায় বলেন, ‘‘কাউকে হুমকি দেওয়া হয়নি। আলো, জল বন্ধ করাও হয়নি। যান্ত্রিক ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে।’’ পাম্পে সমস্যা নেই বলে দাবি পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার জীতাদিত্য ঘোষের। তা হলে? সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জল সরবরাহ যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছি।’’ এ দিন সকালে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে পথবাতি বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, কেন পথবাতি বন্ধ, খোঁজ
নেওয়া হচ্ছে।

গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূলের এই অত্যাচার মানুষ বেশি দিন সহ্য করবেন না।’’ সিপিএমের এরিয়া সম্পাদক অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এমন অমানবিক কাজকর্মের তীব্র
নিন্দা করছি।’’

উপ-পুরপ্রধান জয়ন্ত দাস, তৃণমূলের শহর সভাপতি কাঞ্চন সেনের সঙ্গেও এ দিন ফোনে বা মেসেজে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিপ্লব মিত্রের ‘ছায়াসঙ্গী’, তাঁর ভাই শার্দুল মিত্র বলেন, ‘‘ওঁরা (সুকান্ত, সত্যেন) কেউ কি এ শহরে থাকেন? শহরের কেউ তো কিছু বলছেন না। আমরা কেন পরিষেবা বন্ধ করব? যান্ত্রিক সমস্যা কিছু হলে, ঠিক
হয়ে যাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 gangarampur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy