সোমবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হুগলির কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠে পুজো দিলেন মিতালি বাগ। নিজস্ব চিত্র।
গত নির্বাচনে ১১৪২ ভোটে ‘মুখরক্ষা’! এ বার দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগের প্রচারে দলের অনেকেই গরহাজির! সব মিলিয়ে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সংগঠনে ‘ছন্দ নেই’ বলে দলের অনেক নেতা-কর্মীই মানছেন। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার মিতালিকে ‘এমপি’ (সাংসদ) বলে ঘোষণা করে বসলেন তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায়। যা ঘিরে বিতর্কও শুরু হয়েছে।
এখানে ভোটের বাকি দেড় মাস। ফল ঘোষণা দু’মাস দূরে। এমন সময় রামেন্দুর এহেন ঘোষণায় বিরোধীরা মনে করছেন, হার নিশ্চিত বুঝেই রামেন্দু ‘ভোকাল টনিক’ দিয়ে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। সভাপতির মন্তব্য নিয়ে চর্চা তৃণমূলের অন্দরেও।
বৃহস্পতিবার মিতালির প্রচার ছিল তারকেশ্বরের আস্তারা, দত্তপুর এলাকায়। প্রচারের মাঝে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রামেন্দু বলেন, ‘‘মানুষের সাড়া নয়, মানুষের ঢল নেমেছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সবাই প্রার্থীকে আশীর্বাদ করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৬৪টি প্রকল্পে সকলে উপকৃত হয়েছেন। জয়জয়কার। আর মিতালি প্রার্থী নন, এমপি।’’
রামেন্দুর এই ‘ঘোষণা’ নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতারাও কিঞ্চিত অস্বস্তিতে। তৃণমূলের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘পুরো জেলার সংগঠনটা ধ্বংস করে এখন ভাল ভাল কথা বলে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে নম্বর বাড়াতে চাইছেন। মিতালিকে প্রার্থী করার আগে উনি অন্য এক জনকে দলের বিভিন্ন সভায় নিয়ে
গিয়ে আগামী দিনের সাংসদ বলে উল্লেখ করতেন।’’
তবে মিতালি বলেন, ‘‘ওটা রামেন্দুদা কেন বলেছেন, তিনিই বলতে পারবেন। মানুষ তীব্র গরমেও সাড়া দিচ্ছেন। সেই আবেগেই হয়তো বলতে পারেন! মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে বলতে পারেন! বিরোধীরা যদি আমি প্রার্থী হওয়ায় ওয়াকওভার পেয়েছে বলতে পারে, তা হলে আমাদের তো উন্নয়নে ভরা। সে ক্ষেত্রে তো রামেন্দুদা বলতেই পারেন।’’
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝেই রামেন্দুবাবু আগেই আনন্দ করে নিচ্ছেন!’’ সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁরা তো গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে কায়দায় ভোট করেছেন, সেই অঙ্ক কষেই লোকসভার প্রার্থীকেও সাংসদ বানিয়ে দিয়েছেন।’’ আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী বিপ্লব মৈত্রর বক্তব্য, ‘‘ভোটের আগে কী ভাবে উনি ঘোষণা করতে পারেন! ২০১১ সালের পর থেকে তৃণমূল ভোট করতে দেয়নি। তবে এ বার মানুষ ভোট দেবেন। তৃণমূলের প্রার্থী হারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy