Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

ক্ষুব্ধ অর্জুনকে ফোন ববির, ব্যারাকপুরের সিংহ খানিক দোনামোনায়, নতুন প্রস্তাব নিয়ে শাসক তৃণমূলে জল্পনা

রবিবার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হতেই শুরু হয়ে যায় অর্জুন সিংহকে নিয়ে জল্পনা। তিনি তৃণমূলে থাকবেন না বিজেপিতে ফিরবেন এখনও জানাননি অর্জুন। তবে নানা মন্তব্যে জল্পনা বাড়িয়েই চলেছেন।

TMC leader Firhad Hakim talks with Arjun Singh

(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ, ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ২১:২৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরে প্রার্থী হতে না পারায় ‘ক্ষুব্ধ’ অর্জুন সিংহকে দলে ধরে রাখতে তৎপরতা তৃণমূলে। শাসকদল সূত্রের খবর, সোমবার একের পর এক মন্তব্যে নিজের ক্ষোভের কথা জানানোর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম অর্জুনকে ফোন করেন। সেই ফোনে অর্জুনের ক্ষোভ প্রশমনে দলের পক্ষে ফিরহাদ কিছু ‘বার্তা’ দিয়েছেন। অর্জুনকে সাংসদের পরিবর্তে রাজ্য প্রশাসনের অংশ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ‘প্রস্তাব’ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও পক্ষই আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি। অর্জুন মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ‘নতুন’ প্রস্তাবটি পেয়ে তিনি কিঞ্চিৎ দোনামোনায় রয়েছেন।

ব্যারাকপুর তাঁর ‘পাখির চোখ’। পাঁচ বছর আগে ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুনকে ওই লোকসভা আসনের টিকিট দেয়নি বলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। জিতেওছিলেন। পরে আবার তৃণমূলে ফিরেছেন। এ বারেও কি দলের টিকিট না পেয়ে তিনি বিজেপিতে ফিরবেন? রবিবার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পরে জানা যায়, এ বারেও ওই আসনে অর্জুন তৃণমূলের প্রার্থী নন। টিকিট পাচ্ছেন নৈহাটির বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। জেলা রাজনীতির অঙ্কে যিনি আবার অর্জুনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে নেমেই ‘অখুশি’ অর্জুন নানা মন্তব্য করতে শুরু করেন। তিনি বিজেপিতে ফিরে যেতে পারেন, এমন ইঙ্গিত দিতে শুরু করেন। বিজেপিতে ফিরবেন কি না, সেই প্রশ্নে প্রথমে বলেন, ‘‘কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেব।’’ পরে এমনও বলেন যে, ‘‘দল আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। দলে ফেরার আগে লোকসভায় প্রার্থী করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।’’ রবিবার অর্জুন যেখানে থেমেছিলেন সোমবার সেখান থেকেই আবার তৃণমূলকে আক্রমণ করা মন্তব্য করতে শুরু করেন। তিনি এমনও বলেন, ‘‘বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা ভুল হয়েছে।’’ এমনও বলেন যে, ‘‘কর্মীদের ক্ষোভ রয়েছে। ওদের শান্ত থাকতে বলেছি। আমার সঙ্গে কারও সম্পর্ক খারাপ নয়। এখনও দলেই আছি। তাই কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না।’’ সেই সঙ্গে কিছুটা দলকে সতর্ক করার সুরেই বলেন, ‘‘টিকিট পাইনি। আমার দুর্ভাগ্য! আমাকে সভায় (ব্রিগেডে) ডাকা হয়েছিল। তা-ও টিকিট দেওয়া হল না। দলই বলতে পারবে আমাকে প্রয়োজন আছে কি না। ব্যারাকপুরের ভোটে আমাকে ছাড়া জেতা যাবে কি না।’’ সেই সঙ্গে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্টও করেছেন অর্জুন। সেখানে লিখেছেন, ‘‘ব্যারাকপুরের মাটি আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছেন আর আমি ব্যারাকপুরকে হৃদয়ে ধারণ করেছি।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই অর্জুনকে ফোন করেন ফিরহাদ। দু’জনের মধ্যে কী বিষয়ে কথা হয়েছে, তা জানা না গেলেও অর্জুন-ঘনিষ্ঠেরা দাবি করছেন, তাঁকে বরাহনগর আসন থেকে বিধায়ক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওই আসনের বিধায়ক তাপস রায় ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অর্জুনকে ওই আসন থেকে জিতিয়ে রাজ্যে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও নাকি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে অর্জুন ব্যারাকপুরের মাটি ছাড়তে চান না বলেই আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ফিরহাদের তরফে অর্জুনকে দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের মতেই প্রস্তাবটি ‘সম্মানজনক’। অর্জুনের তা বিবেচনা করা উচিত। আবার অনেকেই বলছেন, অর্জুনের কাছে দলের ‘সন্ধিপ্রস্তাব’ দেওয়া ঠিক হবে না। এক নেতার কথায়, ‘‘ব্যারাকপুর এমনিতেই আমাদের হারা আসন। কিন্তু ব্যারাকপুর জিততে গিয়ে অর্জুনের সঙ্গে দল কেন সমঝোতা করবে? বরং অর্জুনকে টিকিট না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভাল। তাতে নিচুতলায় বার্তা যাবে যে, দল আপস করছে না।’’

অর্জুন-ঘনিষ্ঠেরা ওই প্রস্তাব সংক্রান্ত দাবি করলেও তিনি নিজে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ফিরহাদের সঙ্গে তাঁর যে কথা হয়েছে, তা-ও স্বীকার করেননি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমি এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। আরও সময় আছে ভাবার।’’ তবে এটা মেনে নেন যে, তাঁর কর্মী-সমর্থকরা নানা রকমের মতামত দিয়েছেন। সেগুলি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন। অর্জুনের এই কথাতেই ধোঁয়াশা কর্মীদের মধ্যে। কেউ মনে করছেন, তৃণমূলেই থেকে যাবেন তাঁদের নেতা। আবার অনেকে বলছেন, নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না অর্জুন। বিজেপি ব্যারাকপুরের প্রার্থী ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখবে কি না, এমন প্রশ্নও জন্ম নিয়েছে অর্জুনের ফিরে আসার জল্পনা ঘিরে। এই রাজ্যের ২০টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল বিজেপি। তার মধ্যে এক জন প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অর্থাৎ, বিজেপিকে এখনও ২৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে হবে। ব্যারাকপুরও তার মধ্যে রয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE