Advertisement
E-Paper

বিজেপি-বিরোধিতার ফায়দা তৃণমূলেই, মত সিপিএমের

ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, সামগ্রিক ভাবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তেমন কোনও ফারাক হয়নি। তৃণমূল, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস প্রায় তিন বছর আগের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪ ০৮:২৮
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

প্রচারে সাড়া মিললেও ভোটের বাক্সে তার প্রতিফলন ঘটেনি। আসনের খাতায় এ বারও শূন্য! রাজ্যে লোকসভা ভোটের ফলাফলের প্রাথমিক পর্যালোচনায় বসে সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, মানুষের মধ্যে বিজেপি-বিরোধী মনোভাব যেখানে কাজ করেছে, সেখানে তার ফায়দা নিয়ে গিয়েছে তৃণমূল ক‌ংগ্রেসই। বিজেপিকে হারানোর প্রশ্নে মানুষ শাসক দলের উপরেই ভরসা রেখেছেন, বামেদের উপরে নয়। তবে সার্বিক ভাবে বাংলায় বিজেপির প্রভাব যে কিছুটা কমানো গিয়েছে, তাকে ‘স্বস্তিদায়ক’ মনে করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কী করলে মানুষের বেশি ভরসা ফিরে পাওয়া যাবে, তার উত্তর অবশ্য সিপিএম নেতৃত্বের কাছে এই মুহূর্তে নেই। ময়দান না ছেড়ে আন্দোলনের রাস্তায় থাকাই দলের কতর্ব্য বলে তাঁরা মনে করছেন।

লোকসভা নির্বাচনের পরে শনিবারই প্রথম বৈঠকে বসেছিল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, সামগ্রিক ভাবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তেমন কোনও ফারাক হয়নি। তৃণমূল, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস প্রায় তিন বছর আগের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে। তবে রাজ্যে গত বারের চেয়ে ৬টি লোকসভা আসন হারিয়ে ফেলায় বিজেপি শিবির ধাক্কা খেয়েছে বেশি। লোকসভার ফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে অন্তত ১২ থেকে ১৪টি আসনে সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট-প্রার্থীরা যে ভোট পেয়েছেন, তার প্রভাবে ওই কেন্দ্রগুলিতে তৃণমূল জিততে পেরেছে। অর্থাৎ বাম-কংগ্রেসের ভূমিকা বিজেপির পরাজয়ে সহায়ক হয়েছে। বাম-কংগ্রেস ভোট পাওয়ার ধাক্কায় বিজেপি জয়ী হয়েছে, এমন আসনের সংখ্যা গোটাচারেক। সিপিএম নেতৃত্বের প্রাথমিক মত, রাজ্যে বিজেপির অগ্রগতি থমকে যাওয়ার পিছনে বাম-কংগ্রেস জোটের ভূমিকা রয়েছে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপির সরকার বদলের ডাক দিয়ে আমরা এবং কংগ্রেস ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে আছি। প্রচারে বিজেপির বিরুদ্ধে বলেছি, তৃণমূলের দুর্নীতি ও অপশাসনের কথাও বলেছি। বাংলায় তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’য় থাকেনি। তারা বিজেপির বিরুদ্ধে বলেছে, আমাদের বিরুদ্ধেও বলেছে। দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ জায়গায় মানুষ মনে করেছেন, বিজেপিকে হারানোর সম্ভাবনা তৃণমূলেরই বেশি। ভোট সেই ভাবে দিয়েছেন।’’ তবে উত্তরবঙ্গ এবং মুর্শিদাবাদের নানা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটের একাংশ বাম ও কংগ্রেসের দিকে এসেছে। দক্ষিণবঙ্গে আবার সেই ভোট প্রায় পুরোটাই তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। ভোটের ফলে এই প্রবণতাও সিপিএম নেতৃত্বের নজরে রয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও সূর্যকান্ত মিশ্র দিল্লি গিয়েছেন দলের পলিটব্যুরো বৈঠকে যোগ দিতে। জেলাভিত্তিক বিশদ রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হবে আগামী ১৯ ও ২০ জুন সিপিএমের রাজ্য কমিটি বৈঠকে।

ভোটের ফল বেরোনোর পরে ‘সন্ত্রাসে’র শিকার কর্মী-সমর্থকদের পাশে যেমন দলের নেতৃত্বকে থাকতে বলা হয়েছে, তেমনই পরাজিত হওয়ার পরে এলাকার মানুষের কাছে ফের পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধরের মতো সিপিএমের তরুণ প্রার্থীরা। যাঁরা তাঁদের ভোট দিয়েছেন এবং যাঁরা দেননি, সকলকেই ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁরা খোলা চিঠিতে বলছেন, ‘আমরা এই ভোটের প্রচার-পর্ব জুড়ে রুজি-রুটি-কাজের বিষয়গুলিকে সামনে এনে তৃণমূল-বিজেপির প্রচলিত তরজার বাইরে এক বিকল্প ভাষ্য গঠনের চেষ্টা করেছি। নির্বাচনের ফল বলছে, ধ্বংসাত্মক বিজেপি কমলো দেশ জুড়ে, রাজ্য জুড়েও। এটা আমাদের পক্ষে অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। তৃণমূল-বিরোধী মানুষের কাছে বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠার প্রয়াস আমাদের জারি রাখতে হবে’।

Lok Sabha Election 2024 TMC CPM BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy