সকালে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে এ বার ‘বাউন্ডারি হাঁকাবেন’ তিনি। বিকেলে তার জবাব দিলেন বিজেপি প্রার্থী তথা কল্যাণেরই প্রাক্তন জামাই কবীরশঙ্কর বসু। প্রাক্তন শ্বশুরকে ‘বোল্ড আউট’ করার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
শ্রীরামপুরে তিন বারের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই এ বার তাঁর প্রাক্তন জামাই কবীরশঙ্করের সঙ্গে। কবীরশঙ্করকে শ্রীরামপুরে প্রার্থী করেছে বিজেপি। সোমবার দোল উৎসবে জনসংযোগে বেরিয়ে প্রতিপক্ষ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেছিলেন, ‘‘গত বার হ্যাটট্রিক করেছি। এ বার বাউন্ডারি হাঁকাব। বিরোধীরা কোনও ফ্যাক্টরই হবে না।’’ এর পর বিকেলে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে কবীরশঙ্কর পাল্টা বললেন, ‘‘উনি বোল্ড হবেন। ৪ জুন (লোকসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার দিন) ব্যাগপত্র গুছিয়ে ওঁকে চলে যেতে হবে।’’
কবীরশঙ্কর পেশায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। গত ২০১৯ সাল থেকে শ্রীরামপুরের রাজনীতিতে তাঁর উদয়। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান পরিবৃত অবস্থায় তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন শহরবাসী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তিনিও জোরকদমে প্রচার চালিয়েছেন। এর পরেই গত বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের সুদীপ্ত রায়ের কাছে পরাজিত হন কবীরশঙ্কর। তাঁকে এ বার লোকসভাতেও প্রার্থী করল পদ্মশিবির। কয়েক দিনে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া এবং চাঁপদানি বিধানসভা এলাকায় কবীরের যাতায়াত বেড়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই জল্পনা ছিল, তাঁকে এ বার কল্যাণের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে বিজেপি। রবিবার সেই জল্পনাই সত্যি হল।
কল্যাণের কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কবীরের। ২০১৭ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কল্যাণ ও কবীর একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় তাঁদের পুরনো সম্পর্ক নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। সে প্রসঙ্গে কবীরশঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক ময়দানে আছি। সকলেরই পাস্ট (অতীত) আছে। আবার সকলেরই প্রেজেন্ট (বর্তমান) আছে।’’ এর পরেই কল্যাণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘উনি একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী। আমিও একজন আইনজীবী। আইনজীবী হিসাবে আমি ওঁকে সম্মান করি। কিন্তু উনি যে দলের প্রতিনিধি হয়ে এখানে দাঁড়িয়েছেন, সেই দল দুর্নীতিতে ডুবে আছে। আজ তাদের এই বাংলায় মুখ রাখার জায়গা নেই। উনি সেই দল থেকে এখানে দাঁড়িয়েছেন। চোখে চোখ রেখে লড়াই হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)