Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

আরামবাগে ‘আরামদায়ক’ নয় তৃণমূল! তাই কি সেখানে সরকারি কর্মসূচি করছেন মুখ্যমন্ত্রী? জল্পনায় প্রশাসন

আরামবাগ লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে একটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা। বাকি ছ’টি হুগলি জেলারই। গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল বলছে, ওই সাতটির মধ্যে চারটি আসনে জিতেছিল বিজেপি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০০
Share: Save:

গত লোকসভা ভোটে আরামবাগে তৃণমূলের অপরূপা পোদ্দার (আফরিন আলি) জিতেছিলেন। কিন্তু জয়ের ব্যবধান ছিল অত্যন্ত কম। কার্যত পুরসভায় কাউন্সিলর ভোটে জেতার মতো— ১১৪২ ভোট। সেই থেকেই আরামবাগ লোকসভা এলাকায় তৃণমূলের ‘রক্তক্ষরণ’ থামেনি। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় লোকসভা ভোটে বিজেপির ‘উত্থান’ ২০২১ সালের বিধানসভায় ঠেকিয়ে দিতে পেরেছিল তৃণমূল। কিন্তু আরামবাগে পদ্মশিবির ক্রমেই তাদের জমি শক্ত করেছে। তুলনায় দুর্বল হয়েছে শাসক শিবির। লোকসভা ভোট যখন আসন্ন, তখন সেই আরামবাগেই সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরামবাগের কালীপুরে মমতার ওই সভা হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে।

প্রশাসনের অন্দরে জল্পনা— কেন আরামবাগকেই বেছে নেওয়া হল মুখ্যমন্ত্রী মমতার সরকারি কর্মসূচির জন্য? এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কেউ কিছু বলেননি। তবে হুগলি জেলা তৃণমূলের নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় খোলাখুলিই বলছেন, ওই দিন থেকেই লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দেবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। রবিবার জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে জেলায় তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন। হুগলি জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘প্রথমে ভাবা হয়েছিল বলাগড় বা পান্ডুয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি কর্মসূচি হবে। কিন্তু পরে তা বদল করা হয়।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

গত লোকসভা ভোটে হুগলিতে জিতেছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে নানাবিধ কারণে হুগলি লোকসভায় হারের ক্ষত তৃণমূল ক্রমশ সারিয়ে তুলেছে। অন্তত বিধানসভা ভোট এবং তার পরবর্তী ভোটের ফলাফল সে কথাই বলছে। কিন্তু আরামবাগ ‘পুনরুদ্ধার’ করার কোনও সঙ্কেতই পাঁচ বছর ধরে মেলেনি। বরং ক্রমে তৃণমূলের ক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা সময় আরামবাগ ছিল সিপিএমের ‘গড়’। ২০১১ সালের পালাবদলের পর থেকেই সেই দুর্গে ভাঙন ধরেছিল। সিপিএমের প্রতাপও কালের নিয়মে মিলিয়ে যায়। কিন্তু সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর আরামবাগে তাদের ক্ষয় শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো। ক্ষমতাসীন অবস্থাতেই আরামবাগে তৃণমূল সেই ‘আরামদায়ক’ পরিস্থিতিতে নেই। এবং সেই পরিস্থিতি ধারাবাহিক ভাবে জারি রয়েছে।

আরামবাগ লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে একটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়। বাকি ছ’টি হুগলি জেলার অন্তর্গত। গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল বলছে, মোট সাতটির মধ্যে চারটি বিধানসভায় জিতেছিল বিজেপি। সেগুলি হল আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়া এবং গোঘাট। বাকি তিনটি হরিপাল, তারকেশ্বর এবং চন্দ্রকোণায় জয় পেয়েছিল তৃণমূল। বিধাসনভা ভিত্তিক লোকসভার ফলাফল দেখলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি প্রায় ৬০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে। যা তৃণমূলের জন্য খুব ‘স্বস্তিদায়ক’ সঙ্কেত নয়। অনেকের মতে, মমতার মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিক সেটা ভাল করে জানেন বলেই আরামবাগে সরকারি কর্মসূচি করবেন বলে স্থির করেছেন।

হুগলির এই লোকসভাটি তফসিলি সংরক্ষিত। সাংসদ অপরূপার কাজকর্ম নিয়ে দলের মধ্যেও নানাবিধ আলোচনা রয়েছে। মাঝে একটা বড় সময় অপরূপার ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে জেলা পার্টিতে বিস্তর আলোচনা ছিল। যদিও বছর দেড়েক ধরে অপরূপা ‘সক্রিয়’। কিন্তু তৃণমূলে কে প্রার্থী হবেন বা হবেন না, তা এই সব কোনও সূচক দিয়েই বোঝা যায় না। শেষ পর্যন্ত মমতাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। ইদানীং তাতে অভিষেকেরও মতামত থাকে। তবে আসন্ন লোকসভায় প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে দলের ‘সেনাপতি’ অভিষেকের মতামত কতটা থাকবে, বা তিনি আদৌ মতামত দেবেন কিনা, তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। তবে দলের নেতারা মানছেন, সরকারি কর্মসূচি থেকেই ভোটের দিকে তাকিয়ে ‘দরকারি’ কথাগুলি বলে দিতে চাইবেন মমতা।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE