সহাবস্থান। জোরকদমে ছাপা চলছে কংগ্রেস-তৃণমূলের পোস্টার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
ছোটবেলা থেকে ভোট মানেই আমার কাছে ছিল ছুটির দিন। সে দিন বড় রাস্তায় ক্রিকেট খেলা যায়। তখন বাস, ট্রাম কম চলে। পাড়ার সেই সব দাদারা যাঁদেরকে অন্যান্য দিন অফিস যেতে, দোকান খুলতে কিংবা পাড়ার রকে আড্ডা মারতে দেখি তাঁদেরকে খুব গম্ভীর মুখ করে একটা অস্থায়ী মণ্ডপে (মণ্ডপই বলাটা শ্রেয় মনে করলাম) বসে থাকে। ভোট মানেই সিপিএম কিংবা কংগ্রেস। আমার পাড়া অর্থাৎ শ্যামবাজার অঞ্চল মানেই অজিত পাঁজার জয়। উল্টো দিকে যেই থাকুক না কেন।
যখন ভোট দেওয়ার অধিকার এল তখন খালি মনে হত ভোট দেওয়ার কোনও মানেই হয় না। কারণ যে প্রক্রিয়া বা সিস্টেমের অন্তর্গত আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা সেটা ভীষণ পচা-গলা মানে রটেন— এরকমই ভাবতাম। এখন যে এই ভাবনা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে গিয়েছি তাও নয়। তবে এখন আমি অনেক বেশি পজিটিভ ভাবি। যত বেশি আমাদের দেশে করাপশন বাড়ছে, আমি তত আশাবাদী হচ্ছি। কেবলই ভাবছি, এই বার বোধহয় সব ঠিক হবে। যত সবাই বলছে এই রাজ্যের আর কিছু হবে না। শিল্প নেই, শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্যের অবস্থা তথৈবচ। তাও আমার মনে হয়, আমাদের প্রার্থীকে আমি মনোনীত করি। কারণ উনি বা ওনার দল নিশ্চয়ই আমার ইচ্ছের মান রাখবেন।
আমার খুব ইচ্ছে, এক জন সঙ্গীতকার হিসেবে, সরকার নিয়ম করে পাইরেসি বন্ধ করে দিক। যত বেআইনি ওয়েবসাইট আছে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাক। যাতে সুষ্ঠুভাবে মানুষ স্বাভাবিক গানবাজনা শুনতে পারেন। স্বাভাবিক মানে এটা বলতে চাইছি যে, মানুষ ভেবে নিয়েছেন গান কিনতে হয় না। মাগনায় শোনা যায়। এদের মুখে ঝামা ঘষা যাবে যদি আইন লাগু হয়।
আমার মনে হয়, পরিবহণ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হওয়া উচিত। সারা বাইপাস জুড়ে ১০০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালিয়ে হঠাৎই সল্টলেক স্টেডিয়ামের সামনে গাড়ির স্পিড ২০ কিলোমিটারে নামিয়ে দেওয়া হয়। কারণ ওই স্থানে স্পিডোমিটার লাগানো আছে। এই প্রহসনটি বন্ধ হোক। পুলিশ ঘুষ নেওয়াটা বন্ধ করুক। বিশেষত রাস্তায় (রোজই দেখতে পাই)। হাইওয়েতে মালবাহী গাড়ি ঠিকমতো চেকিং করা হোক-- একশো, দুশো টাকার বিনিময়ে ছেড়ে না দিয়ে। যত্রতত্র অটোতে সাত-আট জন যাত্রী নেওয়া বেআইনি হোক। ধরলে জরিমানা নেওয়া হোক।
যে সব রাজনীতিবিদ মন্ত্রী হবেন, কিংবা এমএলএ হবেন তাঁরা ভীষণ সৎ হোন। তাঁরা মানুষের জন্যই শুধু কাজ করুক। তাঁর জন্য যদি তাঁদের মাইনে খুব কম হয়ে থাকে (স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে) তাহলে তাঁদের মাইনে বাড়ানো হোক।
সর্বোপরি আমরা ওরা এই তকমাটা সংস্কৃতির মঞ্চ থেকে সরে যাক। খুব অস্বস্তিতে পড়তে হয় মাঝেমধ্যে কখন দাঁত ক্যালাব আর কখন গম্ভীর থাকব এই সিদ্ধান্ত নিতে। জয় বাংলা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy