ভাঙড়ে আক্রান্ত হল তৃণমূল। অবশ্য তৃণমূলের হাতেই আক্রান্ত হতে তৃণমূল কর্মীদের। প্রার্থী রেজ্জাক মোল্লার অনুগামীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ আরাবুল ইসলাম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। মাথাও ফেটেছে রেজ্জাক অনুগামীর। প্রথম দিকে গোষ্ঠীকোন্দল চাপা দেওয়ার চেষ্টায় মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দিনভর ধাক্কা খেয়ে নাজেহাল রেজ্জাক দুপুরের দিকে আরাবুল ইসলামকে খোলাখুলিই আক্রমণ করতে শুরু করলেন।
তৃণমূল ভাঙড়ের প্রার্থী হিসেবে রেজ্জাক মোল্লার নাম ঘোষণা করার পর দলের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল গোষ্ঠীকোন্দল তুঙ্গে পৌঁছনো নিয়ে। আরাবুল ইসলাম আর কাইজার আহমেদের গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইতে এমনিতেই জেরবার ভাঙড়ের তৃণমূল। এই দু’জনের কাউকে না দিয়ে তৃতীয় কাউকে টিকিট দেওয়া গেলে গোষ্ঠীকোন্দল থামানো যাবে বলে হয়তো মনে করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু প্রার্থীর নাম রেজ্জাক মোল্লা হওয়ায় হিতে বিপরীত হয়েছে। প্রচারাভিযান চলার সময়েই টের পাওয়া যাচ্ছিল ঘরোয়া কোন্দলের। ভোটগ্রহণের দিনে তা ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছল।
ভাঙড়ের যে সব এলাকায় আরাবুল অনুগামীদের হাতে তৃণমূল প্রার্থীর অনুগামীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর, তার মধ্যে নারকেলবেড়িয়া, পোলেরহাটের নাম শোনা গিয়েছে বার বার। পোলেরহাট-১ নম্বর অঞ্চলের শম্ভু মোল্লা, নজরুল মোল্লাদের অভিযোগ, ভোটের আগের দিন থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ভোট দিতে যেতে বারণ করা হয়েছিল। নিষেধ না মেনে ভোট দেওয়ায় বুথ থেকে বেরোতেই আরাবুলের লোকজন হামলা করে। বন্দুকের বাট দিয়ে মাথায় মারা হয়। পূর্ব সাঁটুলিয়া এলাকায় ইটের গায়ে এক জনের মাথা ফাটে। তিনিও রেজ্জাক মোল্লার অনুগামী বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকেই দলের গোষ্ঠীকোন্দল ঘনিয়ে ওঠার খবর পাচ্ছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। বিভিন্ন এলাকায় বুথ থেকে তাঁর পোলিং এজেন্টদের বার করে দেওয়া হচ্ছিল বলেও খবর ছিল। তা সত্ত্বেও দীর্ঘক্ষণ মুখ খোলেননি রেজ্জাক মোল্লা। বেলা বাড়ার পর অবশ্য আর ধৈর্য ধরতে পারেননি। সরাসরি আঙুল তোলেন আরাবুলের দিকে। তীব্র ক্ষোভ আর বিরক্তি মেশানো উষ্মা নিয়ে বললেন, ‘‘আরাবুল আগে ফ্যাক্টর ছিল, এখন ট্রাক্টর হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
আজকের ভোটের তারকা প্রার্থীরা
রেজ্জাক মোল্লার অনুগামীদের বিরুদ্ধেও অবশ্য ভোট লুঠের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশের তৎপরতায় বুথ দখল বা ছাপ্পা ভোটের চেষ্টা সারা দিন ব্যর্থ হলেও, বিকেলের দিকে ভাঙড়ের বিভিন্ন অংশে রিগিং-এর অভিযোগ উঠেছে। ভোট যত শেষ দিকে এগিয়েছে, ততই ছাপ্পা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা দেখা গিয়েছে। ভাঙড়ের যে সব এলাকায় সংগঠন খুব মজবুত এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া নেই, সেখানকার তৃণমূল নেতারা রসিকতার সুরে বলেছেন, স্লগ ওভারে একটু চালিয়ে না খেললে চলবে কী করে? দিনভর ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় বাম কর্মী-সমর্থকদের বুথে যাওয়ার আটকানোর চেষ্টা হয়েছে বলেও অভিযোগ। সিপিএম প্রার্থী রশিদ গাজী অবশ্য সারা দিন সে সব রুখতে সক্রিয় ছিলেন। কোথাও ভোটারদের আটকানোর খবর পেলেই কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ পেয়েই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ পাঠিয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোটারদের বুথে পৌঁছে দেওয়া এবং বুথ থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy