তিনটি আসনই নিজেদের হাতে রেখে রাখতে পেরেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু পাহাড়ে পায়ের তলা থেকে যে মাটি সরছে, তা-ও বুঝতে পেরেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।
দার্জিলিং, কার্শিয়াং আর কালিম্পং কেন্দ্রে প্রতিপক্ষের সঙ্গে মোর্চা প্রার্থীদের ব্যবধান আগের তুলনায় অনেক কমেছে। কালিম্পংয়ে মোর্চার সরিতা রাই ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে তৃণমূল সমর্থিত হরকাবাহাদুর ছেত্রীকে হারিয়েছেন। তাতেই গুরুঙ্গের পাহাড়ে একাধিপত্য নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, সুবাস ঘিসিঙ্গের আমল থেকেই বিধানসভা ভোটে পাহাড়ের যে দল ক্ষমতায় থাকে, তাদের প্রার্থীরা রেকর্ড ভোটে জিতে থাকেন। মোর্চার আমলেও তার অন্যথা হয়নি। ২০১১ সালে দার্জিলিং আসনে মোর্চার প্রার্থী ত্রিলোক দেওয়ান জিতেছিলেন ১ লক্ষের বেশি ভোটে। এবার মোর্চা জিতেছে ৪৯,৯১৩টি ভোটে। কার্শিয়াং আসনে মোর্চা জিতেছে ৩৩,৭২৬টি ভোটে। গতবার মোর্চা প্রার্থী জিতেছিলেন ৯৩,০৯৬ ভোটে। কালিম্পং আসনেও গতবারের মোর্চার ব্যবধান ছিল ১ লক্ষ ১৬৭৫টি ভোট। এবার কমে তা দাঁড়িয়েছে ১১,৪৩১টি ভোটে।
এ বার সেই ধারায় ধাক্কা লাগল। দল সূত্রের খবর, সে জন্য কপালে ভাঁজ পড়েছে গুরুঙ্গেরও। বিজয়োৎসবেও যেন উৎসাহে ভাঁটার টান চোখে পড়েছে। দল সূত্রে খবর, কালিম্পং নিয়ে গোড়া থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন গুরুঙ্গও। সকাল থেকেই কালিম্পঙেই ছিলেন তিনি। মোর্চা সভাপতির যুক্তি, ‘‘ভোটের ব্যবধান কেন কমল, তা সমীক্ষা করে দেখা হবে। দলীয় স্তরে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে পুরসভা ভিত্তিক কিছু অদল বদল করা হবে।’’
এই নির্বাচনে মোর্চাকে তৃণমূলের সঙ্গেও লড়তে হয়েছে। লড়তে হয়েছে জিএনএলএফের সঙ্গেও। গত পাঁচ বছরে রাজ্য সরকার পাহাড়ে একাধিক উন্নয়ন বোর্ড গড়েছেন। তার প্রভাব ভোটের ফলে পড়েছে। কালিম্পংয়ে আরেকটু হলেই মোর্চা বেকদায় পড়তে পারত বলেও মনে করছেন দলের নেতাদের একাংশ।
এই রকম লড়াই বা এত কম ব্যবধানে জয় পাহাড়বাসী শেষ কবে দেখেছিলেন, তা মনে করতে পারছেন না। হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের বয়স মাত্র ৩ মাস। তাতেই মানুষ যা সাড়া দিয়েছেন, আমরা কৃতজ্ঞ।’’ তৃণমূলের দার্জিলিঙের প্রার্থী সারদা সুব্বা বলেন, ‘‘আমরা ভোটের ফল মেনে নিচ্ছি। তবে বিরোধীদের ভোট যে পাহাড়ে বেড়ে চলেছে, তা প্রমাণ হয়ে গেল। মোর্চার একাধিপত্য কমছে। আগামী দিনে লড়াই আরও জমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy