Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পা পড়েনি প্রার্থীদের, ফোঁস করছে সন্ন্যাসীডাঙা

দুয়ারে ভোট। নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন প্রার্থীরা। ভোট চেয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে জুতোর সুখতলা খুইয়ে ফেলেছেন অনেকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ‘হেভিওয়েট’ হোক বা ‘চুনোপুঁটি’ কোনও প্রার্থীরই পা পড়েনি নওদার সন্ন্যাসীডাঙায়।

এ ভাবেই বসবাস। —নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই বসবাস। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নওদা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২২
Share: Save:

দুয়ারে ভোট। নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন প্রার্থীরা। ভোট চেয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে জুতোর সুখতলা খুইয়ে ফেলেছেন অনেকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ‘হেভিওয়েট’ হোক বা ‘চুনোপুঁটি’ কোনও প্রার্থীরই পা পড়েনি নওদার সন্ন্যাসীডাঙায়।

বন্যায় বাড়ি যখন ভাঙে তখন খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছিলেন এলাকার বড়-মেজো-ছোট নেতারা। প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন। নেতাদের লম্বা-চওড়া কথায় বড় ভরসা মিলেছিল। তার পরে দিনের পিঠে দিন গিয়েছে। মেলেনি কিছুই। তাই ফের ফিরে যেতে হয়েছে সেই ভাঙা বাড়িতে। বেঁধেছেঁদে কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই বানানো হয়েছে। তাতেই হাঁস-মুরগি গরু-ছাগল নিয়ে সংসার। কেউ আবার প্রস্তুতি নিচ্ছে মাধ্যমিক দেওয়ার।

বর্ষায় নওদার সুতি নদীর ভাঙনে বাড়ি ভেঙেছে তিনটি। নওদা ব্লকের সদর আমতলা যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই চলে গিয়েছে নদী গর্ভে। প্রায় ৫০ জন মানুষের বাড়ি কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার সকলেই গরিব ও পেশায় জেলে। গ্রীষ্মে মাছ না পেয়ে দিনমজুরের কাজ করেন। প্রায় ১০ মাস এরা গৃহহীন। কেউ অন্যের বারান্দায় কেউ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিন কাটিয়েছেন। এখনও অনেকেই গৃহহীন।

যাদব হালদারের স্ত্রী সরস্বতীদেবী নিজের একমাত্র রান্নাঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে ভাঙনের ধারে বসে রান্নার কাজ করতে করতে বলেন, ‘‘তখন সব ছোট, বড় নেতা গলা ফুলিয়ে প্রতিশ্রুতির বান ছুটিয়ে দিয়েছিলেন। বিডিও এসে বললেন ঘর করে দেবে। বাড়ির পাশের রাস্তা চলাচলের উপযুক্ত করে দেবে। কিন্তু কোথায় কি? গত কয়েক মাস গ্রামের গৃহহীনদের পাশে কেউ নেই।’’

২১ এপ্রিল জেলায় নিবাচর্ন। কিন্তু বিধানসভার কোনও প্রার্থীই আসেননি এলাকায়। গ্রামবাসীদের দাবি আগে তারা এলাকায় এসে যা বলেছেন তার কোনও কাজই হয়নি। তাই তাঁরা ভোটের এক সপ্তাহ আগেও প্রচারে এড়িয়ে গিয়েছেন সন্ন্যাসীডাঙা।

গ্রামের বাসিন্দা অসিত হালদার ও উত্তম হালদার। তাঁদের বাড়িও ভেঙেছে গত বর্ষায়। তাঁদের কথায়, ‘‘দু’মাস স্থানীয় রত‌‌নপুর প্রাথমিক স্কুলে সংসার নিয়ে ছিলাম। তখন নেতা ও ব্লকের অফিসারেরা আসত। কিন্তু বেশ কয়েকমাস কেটে গেল কোনও সাহায্য পেলাম না।’’

ওই ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ সেই যাদব হালদার বলেন, ‘‘পাড়ার পঞ্চাশটা ভোট না হলেও তাদের চলবে। তাই কারও পা পড়েনি।’’

বিদায়ী বিধায়ক কংগ্রেস প্রার্থী আবু তাহের খান ওই এলাকায় যান। তবে ভাঙন নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কোনও কথা বলেলনি বলে অভিযোগ। আরএসপির আব্দুল বারি মোল্লা বলেন, ‘‘গত বন্যায় যখন বাড়ি ভাঙল তখন কংগ্রেস অনেক প্রতিশ্রুতি দিল। কিন্তু আজও তাঁরা গৃহহীন। রাস্তার সংস্কারও হয়নি। তবে আমরা ওখানে যাব।’’

নওদা ব্লকের বিডিও লিটন সাহা বলেন, ‘‘নিবাচর্নের কাজে ব্যস্ত আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 congress Naoda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE