Advertisement
E-Paper

দু’দলের দ্বন্দ্বে বোমাবাজি

বিজয় মিছিলে এসে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধল গলসিতে। চলল বোমাবাজিও। বুধবারের ওই ঘটনায় দু’দলের চার জন আহত হয়েছেন। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। দলনেত্রীর স্পষ্ট নির্দেশের পরেও বিজয়মিছিল হচ্ছে কী করে, তার জবাবও মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০১:০১
বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি আহতেরা। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি আহতেরা। নিজস্ব চিত্র।

বিজয় মিছিলে এসে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধল গলসিতে। চলল বোমাবাজিও। বুধবারের ওই ঘটনায় দু’দলের চার জন আহত হয়েছেন। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। দলনেত্রীর স্পষ্ট নির্দেশের পরেও বিজয়মিছিল হচ্ছে কী করে, তার জবাবও মেলেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গলসির ভাসাপুল গ্রামে সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূলের গলসি ব্লক সভাপতি ও গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীরা বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিল যাওয়ার রাস্তায় ভাসাপুল বাজারের কাছে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন শেখ জহিরুল নামে গ্রামেরই এক জন। তিনি জনার্দনবাবুর বিরোধী জেলা পরিষদ সদস্য পরেশ পালের অনুগামী বলে পরিচিত এলাকায়। অভিযোগ, মিছিল কাছে আসতেই জহিরুলকে লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয়। বোমার আঘাতে ডান হাতের নীচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পায়ে, মাথায়ও আঘাত লাগে তাঁর। পরে খবর পেয়ে পরেশ পালের অনুগামীরাও পাল্টা মিছিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বোমাবাজিতে আরও তিন জন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত চার জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এ দিন দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন শেখ জহিরুল, শেখ জামালউদ্দিন, শেখ দোলন এবং শেখ মোজাম্মেল নামে ওই চার জন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জহিরুলের ডান হাতের একটা অংশ বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত। বাকিদের মাথায়, পায়ে আঘাত রয়েছে। ওই অবস্থাতেই জহিরুল কাঁদতে কাঁদতে বলেন দাবি করেন, ‘‘চায়ের দোকানে বসেছিলাম। আচমকা মিছিল থেকে জনার্দনের লোকেরা আমাকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে। তাতেই হাতে লেগেছে। হাত আর ফিরে পাব কিনা জানি না।’’ পাল্টা জনার্দন গোষ্ঠীর শেখ দোলন বলেন, ‘‘ভ্যান চালাই। মিছিলে গিয়ে এমন ভাবে আঘাত পাব বুঝতে পারিনি।’’ তাঁর মা সোনালি বিবিও বলেন, ‘‘ছেলে গাড়ি চালায়। মিছিলে গিয়েছে জানতাম না। পরে খবর আসে সে গ্রামের বোমাবাজিতে আহত হয়েছে। পরে গ্রামের লোকেরাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।’’ শেখ মোজাম্মেল ও শেখ জামালউদ্দিন কোনও কথা না বলে শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে ছিলেন।

তবে রাজনৈতিক দলাদলি নয়, বরং গ্রাম্য বিবাদের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন দু’পক্ষের নেতারা। জনার্দনবাবুর দাবি, গ্রামের মিছিল থেকে কেউ বোমা ছুড়েছে বলে মনে হয় না। পুরনো কোনও বিবাদের জেরে দু’দল লোকের মধ্যে গোলমাল হয়েছে বলে জানি।’’ আবার পরেশ পালের দাবি , ‘‘আমি আমার এক আত্মীয় মারা যাওয়ায় গলসির বাইরে আছি। গোলমাল একটা হয়েছে তা জানি। কিন্তু কিভাবে গোলমাল বেধেছে তা বলতে পারব না।’’

গলসি থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই গ্রামে একটি মিছিলে কিছু লোকের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। মিছিলের মধ্যে থেকে কেউ বাজি ছুড়ে থাকতে পারে। তাতেই চার জন আহত হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে। তবে বোমাবাজি হয়েছে কি না বা বোমার আঘাতে ওই চার জন জখম হয়েছেন কি না তা স্পষ্ট করে বলেনি পুলিশ।

আর নেত্রীর নির্দেশের পরেও বিজয় মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে কেন, সে প্রশ্নের উত্তরে দুই নেতারই জবাব, ‘‘গ্রামে অতি উৎসাহী কিছু মানুষ আছেন। যাঁদের জয়ের আনন্দ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’’ কিন্তু আনন্দের মাসুলে রক্ত ঝরছে কেন, তার উত্তর নেই কারও কাছে

assembly election 2016 TMC Bomb
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy