Advertisement
E-Paper

বাগানে ব্যতিক্রমী দুই কেন্দ্র

ভাগ্য ফেরাল কাস্তে-হাতুড়ি-তারা। তবে লড়াই ছিল চরম উত্তেজনার। শুরু থেকে ১৫টি রাউন্ডে পিছিয়ে থেকেও যখন জোট শিবিরে ক্রমে ম্রিয়মাণ, তখন ১৬তম রাউন্ডে বাজিমাত করলেন বসিরহাট উত্তরের সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০২:৫১
জয়ী প্রার্থীর ছবি তুলেছেন নির্মল বসু।

জয়ী প্রার্থীর ছবি তুলেছেন নির্মল বসু।

ভাগ্য ফেরাল কাস্তে-হাতুড়ি-তারা। তবে লড়াই ছিল চরম উত্তেজনার। শুরু থেকে ১৫টি রাউন্ডে পিছিয়ে থেকেও যখন জোট শিবিরে ক্রমে ম্রিয়মাণ, তখন ১৬তম রাউন্ডে বাজিমাত করলেন বসিরহাট উত্তরের সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মণ্ডল।

কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূলের টিকিটে এর আগে ভোটে লড়েছেন রফিকুল। হাসনাবাদ কেন্দ্রে (অধুনা বসিরহাট উত্তর) তিনি একাধিক বার মুখোমুখি হয়েছেন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের। প্রতি বারই রফিকুলকে পিছনে ফেলেছেন গৌতমবাবু। কিন্তু রাজনীতি তাঁর রক্তে। হাল ছাড়েননি রফিকুল। তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা ভোটের আগে আগে আবার দলবদলে এসেছেন সিপিএমে। যে গৌতম দেবের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বৈরিতা দীর্ঘ বছরের, সেই গৌতমবাবুর হাত থেকেই লাল পতাকা নিয়ে রক্তিম পথচলা শুরু করেছেন। রফিকুলকে সিপিএম ভোটের টিকিটও দিয়েছে।

এ হেন রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের রফিকুলের বামেদের উপরে বামেদের একাংশও শুরুতে ভরসা রাখতে পারেননি। এত বার দল বদলের ফলে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলবেন কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। তার উপরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর কিছু বেফাঁস মম্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল দল তথা খোদ প্রার্থীকেও। যদিও সে সব দ্রুত কাটিয়ে উঠে প্রচারে বিস্তর গা ঘামিয়েছেন স্কুলশিক্ষক মানুষটি। ফলও মিলেছে। ব্যবধান কম হলেও ভোটের ফলে শেষ হাসি হেসেছেন তিনিই। রফিকুলের প্রাপ্ত ভোট ৯৭,৮২৮। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রনি পেয়েছেন ৯৭,৩৩৬টি ভোট। ব্যবধান ৪৯২টি ভোটের। রফিকুল বলেন, ‘‘এখানে পানীয় জলের সঙ্কট দীর্ঘদিনের। বিধায়ক হয়ে আমার প্রথম কাজই হবে জলের সমস্যা কাটানো। দরিদ্র মানুষের ঘর তৈরির ব্যাপারেও পদক্ষেপ করব।’’ কিন্তু যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকারে আসতে চলেছে তৃণমূল, তার পরে বিরোধী আসনে থেকে কাজ করতে অসুবিধা হবে না তো? রফিকুল বলেন, ‘‘সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে আশা করি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না।’’ বাদুড়িয়া আসনটি ধরে রেখেছে কংগ্রেস। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা দীর্ঘদিনের বিধায়ক কাজি আবদুল গফ্‌ফরের ছেলে আব্দুর রহিম দিলু এ বার দলের টিকিট পেয়েছিলেন। শারীরিক কারণেই গফ্‌ফরকে টিকিট দেয়নি দল। কিন্তু উন্নয়ন নিয়ে যতই অভিযোগ থাকুক না কেন এলাকায়, কংগ্রেসের দিক থেকে কখনওই মুখ ফিরিয়ে নেননি বাদুড়িয়ার মানুষ। ব্যতিক্রম নয় এ বারও। দিলু পেয়েছেন ৯৭,৯১৩টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের আমির আলি ৭৬,০০২টি ভোট। ব্যবধান ২১,৯১১টি।

আমির আলি কবি মানুষ। রাজনীতির আঙিনায় তেমন প্রভাব-প্রতিপত্তি নেই। বাদুড়িয়ার মতো কংগ্রেসের শক্তঘাঁটিতে এ হেন মানুষটির উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা রাখায় দলের অন্দরেও প্রশ্ন কম ওঠেনি। স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা ছিলেন টিকিটের দাবিদার। তিনি শেষমেশ প্রার্থীর পাশে থাকছে কিনা, তার উপরে তৃণমূলের জয়-পরাজয় অনেকটাই নির্ভর করবে বলে মনে করেছিলেন জেলা তৃণমূলের একাংশ। ওই নেতা ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অবশ্য শুরু থেকেই আমিরের পাশে দেখা গিয়েছে। ২১ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে আমিরের পরাজয়ের অন্য কারণ আছে কিনা, তা ভাবাচ্ছে স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশকে। বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে পর্যালোচনা দরকার বলে মনে করেন তাঁরা। বিরোধী আসনে থেকে উন্নয়ন নিয়ে কী ভাবছেন? দিলু বলেন, ‘‘আগেও বিরোধী আসনে থেকে কাজ করেছে কংগ্রেস। আশা করি অসুবিধা হবে না।’’

assembly election 2016 tmc CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy