কড়া পাহারায় প্রস্তুতি। বুধবার, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের গণনাকেন্দ্রে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
শুধু গণনা কেন্দ্র নয়। ভোট গণনা শেষে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে শহরের নিরাপত্তা কী থাকবে, বরং তা নিয়েই বেশি চিন্তিত লালবাজার। পাশাপাশি, একই আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করেছে বিধাননগর কমিশনারেট।
কলকাতা পুলিশের একাংশের আশঙ্কা, ফল যে দিকেই যাক না কেন তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে শহর। নির্বাচন পর্ব মেটা মাত্র শহরের চার-পাঁচটি থানা এলাকায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। সে কারণেই আরও হিংসার আশঙ্কা করছে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই গণনা কেন্দ্রের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করেছে পুলিশ। ঠিক হয়েছে, কলকাতা পুলিশের আটটি ডিভিশনের ডিসি-দের অধীনে একটি করে ২০ জনের বাহিনী তৈরি রাখা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতিটি ডিভিশনকে লালবাজার থেকে দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত বাহিনী। যা দিয়ে প্রতিটি ডিভিশন একটি করে বিশেষ বাহিনী তৈরি করেছে। শহরের কোথায় কোথায় হিংসার আশঙ্কা রয়েছে, তার তালিকা তৈরি করে সেই সব জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এ বার। যার জন্য গোটা শহরে বসানো হচ্ছে ২৩৩টি পুলিশ পিকেট। যাতে থাকবেন ছ’জন করে পুলিশকর্মী।
লালবাজার জানিয়েছে, বুধবার থেকেই শহরের রাস্তায় ৪০টির বেশি টহলদারি গাড়ি মোতায়ন করা হয়েছে। শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য থানার পুলিশ ছাড়াও দু’হাজারের বেশি অতিরিক্ত কর্মী মজুত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও যে সব জায়গায় গোলমালের আশঙ্কা বেশি, তেমন এলাকায় কলকাতা গোয়েন্দা বিভাগের আটটি বাহিনী মোতায়ন করা হচ্ছে। তারা সাদা পোশাকে এলাকায় টহল দেবে।
কলকাতার ন’টি জায়গায় গণনার জন্য সাত কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হচ্ছে। গণনা কেন্দ্রগুলির ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে যেখানে গণনা হবে, সেই জায়গায় ঢোকার অনুমতি নেই কলকাতা পুলিশের। সেখানে মোতায়ন থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১০০ মিটারের মধ্যে রাজনৈতিক দলের এজেন্ট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সেখানে বাঁশের ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হবে রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের। গণনা কেন্দ্রের মূল গেটে মোতায়ন থাকবে বাহিনী। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রের জন্য তৈরি করা হচ্ছে স্পেশ্যাল কন্ট্রোল রুম।
লালবাজার জানিয়েছে, নির্বিঘ্নে ভোট গণনা করতে প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে দু’টি করে আর টি মোবাইল গাড়ি এবং পাঁচটি মোটরবাইকের পুলিশ বাহিনী থাকবে। ন’টি গণনার জায়গার জন্য কলকাতা পুলিশের বিভাগীয় এক জন ডিসি ছাড়াও ১৪ জন আইপিএস অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে লালবাজার। বুধবার শহরের বিভিন্ন গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিন খতিয়ে দেখেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy