Advertisement
১৮ মে ২০২৪
মালদহ

১৭ বছরে ভোট পাইনি: মমতা

গনি খানের তালুক মালদহের তিনটি জায়গায় সোমবার নির্বাচনী সভা করতে গিয়ে বারবার ‘বরকতদা’র কথা টেনে আনলেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের জোটকে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন।

কালিয়াচকের জনসভায় সুজাপুরের প্রার্থী লেবুবাবুকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি:মনোজ মুখেপোধ্যায়।

কালিয়াচকের জনসভায় সুজাপুরের প্রার্থী লেবুবাবুকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি:মনোজ মুখেপোধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১২
Share: Save:

গনি খানের তালুক মালদহের তিনটি জায়গায় সোমবার নির্বাচনী সভা করতে গিয়ে বারবার ‘বরকতদা’র কথা টেনে আনলেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের জোটকে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এখন সিপিএম কংগ্রেসের কোলে আর কংগ্রেসের সিপিএমের কোলে দোল খাচ্ছে আর ভোট চাইছে। আপনারাও কি কোনওদিন ভাবতে পেরেছিলেন যে সাপ আর নেউল এক সঙ্গে বাস করবে। কিন্তু স্বার্থপর রাজনীতি ওদের একাসনে বসিয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আপনারা ডালু (আবু নাসের খান চৌধুরী) আর মৌসমকে (মৌসম বেনজির নুর) জিতিয়েছেন। কিন্তু জিতিয়ে কী হয়েছে? ওঁরা এলাকার কোনও কাজ করেন না। এমনকি এলাকাতেও আসেন না। শুধু যখন ভোট আসে, তখন নির্বাচনে জিততে সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলায়।’’

তাঁর যুক্তি, ‘‘কংগ্রেস তো লঙ্কাগাছে পরিণত হয়েছে। আর বিজেপি ও সিপিএমকে আমরা মাথা তুলতে দেব না। তবে সব বামপন্থী খারাপ নয়। যাদের আদর্শ আছে তাদের প্রনাম, সালাম জানাই।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ছোট শিশুকে মা যেমন আগলে রাখে তেমনি ছোট গাছকেও আগলে রাখতে হয়। কিন্তু তৃণমূল এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ইদুঁর, বেড়াল খামচালেও আমাদের কিছু হবে না। বাঘ, সিংহ খামচালে নখ ভেঙে যাবে। কাস্তে দিয়ে মারলে কাস্তে ভেঙে যাবে। পদ্মফুল ছুঁড়লে পাপড়ি গুটিয়ে যাবে।’’

কিন্তু মালদহে যে তিনি পায়ের তলায় জমি পাননি, বারবারই তা নিয়ে খেদ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কবুল করেন, মালদহে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতে নেই। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের ১৭ বছর হল, কিন্তু আমরা মালদহে ভোট পাইনি। দয়া করে এবার মালদহে কাজের জন্য আমাদের প্রার্থীদের ভোট দিন।’’

বিজেপি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের উপরে দিল্লির এত রাগ কেন জানেন? ওরা জানে যে তৃণমূল এবার দিল্লির দিকে পা বাড়াবে।’’ মমতা বলেন, ‘‘২০১৬তে আমাদের এগিয়ে দিন। ২০১৯-এ আমাদের দিল্লি দখল করতে দিন। বরকতদার কংগ্রেসের কিছু স্বার্থপর লোক সিপিএমের সঙ্গে গলাগলি করছে। যে যাই করুক, আমরা ২০১৬-তে বাংলা আর ২০১৯-এ দিল্লি জয় করব।’’

এ দিন চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, মালতীপুর ও রতুয়ার চার প্রার্থীকে নিয়ে মমতার সভায় প্রায় একলক্ষ দর্শক এসেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ওই মাঠে তো এক লক্ষ দর্শক ধরার জায়গাই নেই। পুলিশের দাবি, এ দিনের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দু’টো। হেলিপ্যাড ও মুখ্যমন্ত্রী। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র অবশ্য পুলিশের দাবিকে পাগলের প্রলাপ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ শাসকদলের মন রাখতে অবাস্তব কথাবার্তা বলছে।’’

আর জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুরের দাবি, ‘‘ওরা অভিনেতা দেব, সোহম ও সন্ধ্যা রায় আসবেন বলে প্রচার চালিয়েছে। অধিকাংশই এসেছিলেন তাদের দেখতে। কততে একলক্ষ হয় তা পুলিশের পাশাপাশি তৃণমূল মনে হয় ভুলে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE