Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সিপিএম কর্মীদের ‘মুণ্ডু’ চেয়ে পোস্টার

দেওয়ালে সাঁটা ছোট একটা পোস্টার। তাতে লাল কালিতে লেখা তিন সিপিএম কর্মীর নাম। তার নীচেই কালো কালিতে লেখা ‘এদের মুণ্ডু চাই’! এর সামনেই ফেটেছে একটা বোমাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০১:০৩
Share: Save:

দেওয়ালে সাঁটা ছোট একটা পোস্টার। তাতে লাল কালিতে লেখা তিন সিপিএম কর্মীর নাম। তার নীচেই কালো কালিতে লেখা ‘এদের মুণ্ডু চাই’! এর সামনেই ফেটেছে একটা বোমাও।

না, জঙ্গলমহলের কোনও মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা নয়। কিংবা মাওবাদীদের দেওয়া পোস্টারও নয়। বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার তিন দিন আগে ‘কাটা মুণ্ডু’র দাবিতে এমনই পোস্টার পড়েছে হাওড়ায়। যারা হুমকি দিয়েছে, তারা শুধু ওই তিন সক্রিয় সিপিএম কর্মীর মুণ্ডু চেয়েই ক্ষান্ত থাকেনি। রীতিমতো ১২ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডে ‘মধ্য হাওড়া ব্যায়াম সমিতি’ ক্লাবের সামনে একটি বোমার আওয়াজ পান বাসিন্দারা। তখন ভয়ে কেউ বেরোননি। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়েরা বাইরে এসে ক্লাবের সামনে বোমার পোড়া সুতলি দড়ির খোল পরে থাকতে দেখেন। ক্লাবের দেওয়ালে সাঁটা ওই পোস্টারটি দেখতে পান। তাতেই প্রথমে লাল কালিতে জীবন বিশ্বাস, শ্যামল হাজরা এবং বাচ্চু মুদির নাম লেখা। তলায় কালো কালিতে লেখা, ‘এদের মুন্ডু চাই চাই চাই’। তারও নীচে লেখা, ‘তারিখ, ১৯/৫ থেকে ৩০/৫-এর মধ্যে’।

এ দিন সকালে পোস্টারটি দেখার পরে সিপিএম অবশ্য অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসক দলের দিকেই। সিপিএমের তরফে ব্যাঁটরা থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। সিপিএমের মুখপাত্র অরূপ রায় বলেন, ‘‘বুথ ফেরত সমীক্ষা দেখা মাত্রই এই কাণ্ড শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু সমীক্ষার ফলের সঙ্গে ভোটের ফল মিলবে না। তৃণমূলও ক্ষমতায় আসবে না। তাই বুঝতে পেরেই এ সব করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

তবে যে তিন ব্যক্তির নামে ওই পোস্টার পড়েছে, তাঁরা সিপিএমের কোনও সদস্য বা হেভিওয়েট নেতাও নন। তা সত্ত্বেও তাঁদের নামে ওই হুমকি পোস্টার কেন? স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার সক্রিয় কর্মী হিসেবে বিধানসভা ভোটের দিন বুথে এজেন্ট বসানো থেকে সমস্ত কাজই পরিচালনা করেছিলেন ওই তিন কর্মী। যে ক্লাবকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে, সেটি সিপিএম প্রভাবিত বলেই স্থানীয়েরা জানান। আর ওই তিন ব্যক্তি ওই ক্লাবের‌ই সদস্য।

তবে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের যোগ নেই বলেই এ দিন দাবি করে মধ্য হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘মানুষকে মারধরে আমরা বিশ্বাসী নই। আমরা রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে কোনও কাজ করি না। ২০১১-র পরে যদি মনে করতাম হাওড়া থেকে সিপিএমকে নিশ্চিহ্ন করে দেব, তবে এত দিনে এক জনও থাকতেন না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার তদন্তে নেমে ওই এলাকার সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে ওই ক্লাবের গলিতে কাউকে ঢুকতে দেখা যায়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE