Advertisement
E-Paper

অনাস্থা-বৈঠক আজ

দীর্ঘ ৪৯ বছর পরে আউশগ্রামে ফুটেছে ঘাসফুল। কিন্তু জয়ের স্বাদ উপভোগ করার আগে ফের আরও এক পরীক্ষার মুখে তৃণমূল। আজ, সোমবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গুসকরা পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক রয়েছে। তার আগে, কাউন্সিলররা দলেরই নির্দেশ মানবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা লুকোচ্ছেন না আউশগ্রামের বিধায়ক অভয়ানন্দ থান্ডার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০৩:৫৩

দীর্ঘ ৪৯ বছর পরে আউশগ্রামে ফুটেছে ঘাসফুল। কিন্তু জয়ের স্বাদ উপভোগ করার আগে ফের আরও এক পরীক্ষার মুখে তৃণমূল। আজ, সোমবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গুসকরা পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক রয়েছে। তার আগে, কাউন্সিলররা দলেরই নির্দেশ মানবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা লুকোচ্ছেন না আউশগ্রামের বিধায়ক অভয়ানন্দ থান্ডার।

পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের সঙ্গে দলেরই কাউন্সিলরদের একাংশের বিরোধে কয়েক মাস ধরেই অচলাবস্থা চলছিল গুসকরা পুরসভায়। গত ৫ এপ্রিল গুসকরা পুরসভার তিন কাউন্সিলর দলেরই পুরপ্রধানকে সরানোর জন্য তলবি সভা ডেকেছিলেন। সেই সভায় তৃণমূলের পাঁচ ও সিপিএমের পাঁচ জন হাজির থেকে পুরপ্রধানকে সরানোর পক্ষে রায় দেন। সভার সভাপতি, প্রবীণ কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় পুরপ্রধানকে সরানোর জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দেন। প্রশাসন চুপ থাকায় পরে হাইকোর্টেও মামলা করেন তিনি। তার প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় রায় দেন, ২৩ মে পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করাতে হবে পুরপ্রধানের বিরোধীদের। সেই প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলে জেলাশাসক বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে নতুন পুরপ্রধান নিয়োগ করতে হবে।

যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, পুরপ্রধান বদলাতে হলে দলের মধ্যেই আলোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ সোমবার কতখানি কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই। রবিবার অভয়ানন্দবাবু বলেন, ‘‘দলের সব কাউন্সিলরকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনও ভোটাভুটির মাধ্যমে বা অনাস্থা জানিয়ে পুরপ্রধান নির্বাচন করা যাবে না। কোনও পরিস্থিতিতেই সিপিএমের সমর্থন নেওয়া চলবে না। তবে সব কাউন্সিলররা নির্দেশ মানবেন কি!’’

পুরসভা সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক নিয়ে সাজোসাজো রব বুর্ধেন্দু, নিত্যানন্দ, উভয় শিবিরেই। দলে নিত্যানন্দ গোষ্ঠীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত রত্না গোস্বামী বলেন, ‘‘বুর্ধেন্দুবাবুকে সরানোর লক্ষ্য নিয়েই আমরা বৈঠকে যাচ্ছি।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, পুরসভায় নিত্যানন্দবাবু ও বুর্ধেন্দুবাবুর অনুগামী কাউন্সিলরের সংখ্যা যথাক্রমে ৬ ও ৫ জন। পুরসভায় সিপিএমের ৫ জন রয়েছেন। সিপিএম কাউন্সিলরেরা আজকের বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি পুরসভায় বিরোধী দলনেতা মনোজ সাউ। মনোজবাবুর বক্তব্য, ‘‘এখনও ওই বৈঠকে যাব কিনা সিদ্ধান্ত হয়নি। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ এই এলাকার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই ‘চড়াম চড়ামে’র শব্দ শোনা গিয়েছে এলাকায়। সভায় যাতে না কেউ না যান, তার জন্য ইতিমধ্যেই সিপিএম কাউন্সিলরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

এই পরিস্থিতিতে দু’এক জন তৃণমূল কাউন্সিলর বৈঠকে যোগ না দিলে যে কোনও পক্ষই শেষ ওভারে বাজিমাত করতে পারে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। এই অবস্থায় জয় নিয়ে মরিয়া দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল বাধার শঙ্কা রয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের ধারণা। শনিবার রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় মোটরবাইক বাহিনীর দাপাদাপি দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

গোলমাল এড়াতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। বর্ধমান (সদর) মহকুমাশাসক মুক্তি মহমম্মদ শামিম বলেন, ‘‘আমি বৈঠকে উপস্থিত থাকব। যথেষ্ট পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।’’ রবিবার দিনভর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর অনুগামী রাখী মাঝি বলেন, ‘‘ওঁর বুকে ব্যথা। ফোন ধরতে পারছেন না।’’ বুর্ধেন্দুবাবু শুধু বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’

assembly election 2016 Guskura TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy