Advertisement
E-Paper

ভোট মিটতেই ‘চড়াম চড়াম’, হামলা জেলায়

১৯ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে ‘চড়াম চড়াম’ ঢাকের বোল বাজবে বলে আগেই শুনিয়ে রেখেছেন তাঁর ভাইয়েরা। কেউ আবার বলেছেন, ‘‘ফল বেরোনোর পরে এ বার আর রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজবে না!’’ আর সদ্য মেরুদণ্ড খুঁজে পাওয়া পুলিশকে শাসিয়ে দিদি স্বয়ং বলছেন, ‘‘আগামী দিনে সব উত্তর বুঝে নেব।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ০৪:১৫

ভোট মিটতেই ‘চড়াম চড়াম’, হামলা জেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদন

১৯ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে ‘চড়াম চড়াম’ ঢাকের বোল বাজবে বলে আগেই শুনিয়ে রেখেছেন তাঁর ভাইয়েরা। কেউ আবার বলেছেন, ‘‘ফল বেরোনোর পরে এ বার আর রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজবে না!’’ আর সদ্য মেরুদণ্ড খুঁজে পাওয়া পুলিশকে শাসিয়ে দিদি স্বয়ং বলছেন, ‘‘আগামী দিনে সব উত্তর বুঝে নেব।’’

দলের উপর মহল থেকে এই ‘বার্তা’ পেয়ে উজ্জীবিত ভাইদের অবশ্য আর তর সইছে না। অভিযোগ, ভোট মিটতেই দিকে দিকে ‘উত্তর বুঝে নিতে’ নেমে পড়েছে তৃণমূলের বাহিনী। যাঁরা হেনস্থা, আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ, সকলেই তৃণমূলের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধীরা। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোমবার লালবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয় কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। কংগ্রেস নেতৃত্ব মিছিল করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যান। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পরে বলেন, ‘‘কমিশনকে বলেছি, এখনও ভোট প্রক্রিয়া চলছে। ফলে প্রশাসন আপনাদের অধীনে। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস যে ভাবে চলছে, তা আপনাদের দেখা উচিত।’’

‘সন্ত্রাস’ চলছে জেলাতেও। ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অর্ণব রায়কে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ বিরোধী দলের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার বিকেলে ক্যানিঙের হাটপুকুরিয়া অঞ্চলের দেবিশাবাদের ঘটনা। রেয়াত করা হয়নি মহিলাদেরও। ৭ মহিলা, ১ কিশোরী-সহ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। গ্রামের লোক জানিয়েছেন, হামলাকারীরা মারধরের সময় বলেছে, ‘‘বারণ করার পরেও ভোট দিতে গিয়েছিল, তোদের সব্বাইকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেব!’’ তৃণমূল নেতা শৈবাল লাহিড়ির অবশ্য দাবি, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।

অর্ণববাবুর হয়েই দিঘিরপাড় বুথে এজেন্ট হয়েছিলেন পবিত্র নস্কর। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁকেও তৃণমূলের লোকজন মারধর করেছে বলে অভিযোগ। বাসন্তীর আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্করকে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ ফুলমালঞ্চ অঞ্চলের খেড়িয়ায় দু’টি দোকান তৃণমূলের লোকজন বন্ধ করেছে। আরএসপি-র এক কর্মী প্রহৃত হয়েছেন। আঠারোবাঁকিতে সুভাষবাবুর কয়েক জন এজেন্ট হুমকির জেরে বাড়িছাড়া। কোনও ক্ষেত্রেই অভিযোগ স্বীকার করেনি তৃণমূল।

হুগলিতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠছে আরামবাগের পুইন, বসন্তবাটি, রাংতাখালি, চাঁদুর, ঘরগোয়াল, বাছানরী, সালেপুর, গোঘাটের কামচে, চুঁচুড়া ও ধনেখালির একাধিক এলাকায়। ধনেখালিতে সিপিএমের এক এজেন্টের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক এজেন্টের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। চুঁচুড়ায় সিপিএমের এজেন্টের বাড়ি হামলার অভিযোগে দুই তৃণমূল সমর্থক ধরা পড়েছে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী, দেবব্রত ঘোষ, মিতালি কোনার-সহ সিপিএম নেতৃত্ব সোমবার গোঘাটের কামচে গ্রামে ‘আক্রান্ত’ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। এই গ্রামে দুই মহিলা তৃণমূল কর্মী আবার সিপিএমের লোকজনের ছোড়া গুলতির ঢিলে জখম হন বলে অভিযোগ। যে কথা অস্বীকার করে সুদর্শনবাবু বলেন, “ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে তৃণমূল। পুলিশের সামনেই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট চলেছে। মহিলা, শিশুকেও মারধর করেছে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি, ‘‘৫ মে-র ভোটে যাতে মানুষ অংশ না নেন সে জন্যই সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল।’’ তৃণমূল নেতা তথা আরামবাগের পুরপ্রধান স্বপন নন্দী অবশ্য জানান, অভিযোগ মিথ্যা। পুইন, ঘরগোয়াল, চাঁদুর, গোঘাটের কামচে— সর্বত্র তাঁদের লোকজনই বরং সিপিএমের হাতে আক্রান্ত।

assembly election 2016 violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy