প্রতীকী ছবি।
গত লোকসভা নির্বাচনে পড়শি রাজ্য থেকে প্রচুর লোক পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। এ বার বিধানসভা নির্বাচনের বিভিন্ন পর্বেও সীমানা পেরিয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই পরিস্থিতিতে বাংলার সীমানাবর্তী চার রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিজি-দের সঙ্গে সীমানা সুরক্ষা নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। সেই বৈঠকে পড়শি চার রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও অসমের প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বঙ্গ প্রশাসনের কর্তারাও ছিলেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সীমানা সুরক্ষা নিয়ে কমিশন এক গুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যগুলিকে। পড়শি রাজ্যগুলি থেকে যাতে কোনও ভাবেই দুষ্কৃতীরা ঢুকে ভোটে গোলমাল পাকাতে না-পারে, সে-দিকে সতর্ক নজর রাখতে বলেছে তারা। অবৈধ টাকা, মদ, মাদক, অস্ত্র ইত্যাদির অনুপ্রবেশ রুখতেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে পরস্পরের মধ্যে প্রশাসনিক ও গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। গোটা ভোট পর্বে এই সমন্বয় রাখতে হবে প্রতিটি রাজ্যকেই। কমিশন সূত্রের খবর, সমন্বয়ের স্বার্থে পৃথক এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে রাজ্যে। স্থির হয়েছে, ৫০টির বেশি সীমানা এলাকায় ‘লাইভ নাকা’ থাকবে। সেই সব নাকা কেন্দ্রে ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে তোলা ভিডিয়ো ফুটেজ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। কন্ট্রোল রুম থেকে এই কর্মকাণ্ডে নজর রাখতে পারবে কমিশন।
এ দিনই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। নবান্ন সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালনে কোনও রকম ভুলত্রুটি যাতে না-হয়, সেই ব্যাপারে ওই বৈঠকে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সেখানেও পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা, কোভিড, ভোট ব্যবস্থাপনায় নজর দেওয়ার মতো সব ব্যাপারেই সতর্ক ভাবে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার কটন স্ট্রিটে একটি গুরুদ্বারের চৌহদ্দির মধ্যে একটি স্কুলে বুথ করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গুরুদ্বার কমিটির সদস্যেরা। সিইও-কে তাঁরা জানিয়েছেন, গুরুদ্বারে উৎসব থাকায় ভোটের দিন প্রার্থনা রয়েছে। তাই কমিশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সিইও-র দফতর।
প্রথম দফার ভোটের (শনিবার) আগে বৃহস্পতিবার থেকেই সংশ্লিষ্ট এলাকার মদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে আশেপাশের নিকটবর্তী জেলায় থাকা মদের দোকানগুলিও। সিইও দফতর সূত্রের খবর, চতুর্থ দফার ভোটে ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ৩৮২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে পাঁচটি মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তার মধ্যে আছে তুফানগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়নপত্রও। অন্য যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন লোক জনশক্তি পার্টির প্রার্থী, তিন জন নির্দল। পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই মনোনয়ন বাতিল হয়েছে বলে কমিশনের খবর। ওই দফায় বৈধ মনোনয়নের সংখ্যা ৩৭৭।
কমিশনের সিদ্ধান্ত, এ বারেও বিদেশিদের ভোট-প্রক্রিয়া দেখানো হবে। তবে তাঁরা কোভিড পরিস্থিতির কারণে সশরীরে তা দেখতে পারবেন না। ভিডিয়োয় ভোটচিত্র তুলে ধরা হবে। সাতগাছিয়া কেন্দ্রের একটি বুথে ভোটের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ভিডিয়ো-বন্দি করে তা বিদেশিদের দেখানো হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy