Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

WB Election: বাঙালির সম্প্রীতি প্রেমে ক্ষুব্ধ আরএসএস

দশ বছর ক্ষমতায় থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্থানীয় স্তরে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, তৃণমূল নেতাদের দলে টেনে সেই ক্ষোভের ফায়দাই বিজেপি তুলতে পারেনি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারী থেকে সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বৈশালী ডালমিয়া— তৃণমূলের নেতাদের বিজেপিতে নিয়ে এসে আখেরে লাভ হল না ক্ষতি?

পশ্চিমবঙ্গের ভোটে হারের পরে আরএসএস-এর একটা বড় অংশ মনে করছে, বিজেপির উচিত এই প্রশ্নের উত্তর খতিয়ে দেখা। কারণ তিনটি। প্রথমত, শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া অধিকাংশ দলবদলু নেতা, বিধায়কই জিততে পারেননি। দ্বিতীয়ত, তাঁদের জন্য বিজেপির অন্দরমহলে আদি বিজেপি ও নব্য বিজেপির সংঘাত শুরু হয়েছে। তৃতীয়ত, দশ বছর ক্ষমতায় থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্থানীয় স্তরে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, তৃণমূল নেতাদের দলে টেনে সেই ক্ষোভের ফায়দাই বিজেপি তুলতে পারেনি।

এই হারের পরেও অবশ্য আরএসএস নেতারা মনে করছেন, বিজেপি ক্ষমতায় না-এলেও ‘হিন্দুত্ব’-কে বাংলার রাজনৈতিক বিতর্কের মূলস্রোতে নিয়ে আসা গিয়েছে। তবে সমস্যা হল, এখনও বাঙালি ভদ্রলোকের মন থেকে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি অন্ধপ্রেম’ উপড়ে ফেলা যায়নি। এক আরএসএস নেতা বলেন, “মুশকিল হল, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি ভদ্রলোক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। তাই তৃণমূল সরকারের সংখ্যালঘু তোষণ নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও তাঁরা বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। তবে তাঁদের মনেও হিন্দুত্বর ধারণা জাগিয়ে তোলা গিয়েছে। সংখ্যালঘু তোষণের বিপদ তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।” আরএসএস-বিজেপির এই ‘প্রচেষ্টা’-র জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটের প্রচারে গিয়ে চণ্ডী পাঠ করতে হয়েছে বলে আরএসএস নেতারা
মনে করছেন।

আরএসএস-এর এই মনোভাব স্পষ্ট করেই সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ তাত্ত্বিক নেতা, রাজ্যসভার সাংসদ রাকেশ সিন্হা মন্তব্য করেছেন, “চলো, কালীপুজো ও চণ্ডী পাঠ তো করিয়ে দিয়েছি!” আরএসএস নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের এই হিন্দুত্বের জাগরণের জন্যই রাহুল গাঁধীকে ভোটের আগে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরতে হয়। অরবিন্দ কেজরীবালকে ভোট জিততে ‘হনুমান চালিশা’ পড়তে হয়।

পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা হবে। কিন্তু কংগ্রেস, বাম নিজেদের ভোট তৃণমূলের ঝুলিতে ফেলাতেই বিজেপি হেরেছে বলেও এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, অন্তত ৯ শতাংশ ভোট বাম-কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। দলবদলু নেতাদের নিয়ে এসে লাভ হল কি না, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, অন্তত ৬৫টি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা খুব সামান্য ব্যবধানে হেরেছেন।

এতদ্সত্ত্বেও বিজেপি তথা আরএসএস নেতৃত্ব মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিধায়ক সংখ্যা ৩ থেকে ৭৬-এ নিয়ে যাওয়া কম কথা নয়। কংগ্রেস-বাম শূন্যে নেমে আসায় বিজেপিই এখন সরকারি ভাবে প্রধান ও একমাত্র বিরোধী দল। আরএসএস-র এক নেতা বলেন, “সংখ্যালঘুরা এককাট্টা হয়ে ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মেই হিন্দুরা এককাট্টা হয়ে বিজেপিকে ভোট দেননি। তবে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠায় আগামী দিনে মমতার পক্ষে আর সংখ্যালঘু তোষণের নীতি নেওয়াটা সম্ভব হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE