Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Biman Bose

Bengal Polls: বিপর্যয়ের পরে বিতণ্ডা, সংযমের বার্তা বিমানের

জোট গড়ে ভোটে লড়ার বিষয়ে শরিকদের আপত্তি ছিল, বিষয়টা অবশ্য এমন নয়। কিন্তু তাঁদের আপত্তি পদ্ধতিগত প্রশ্নে।

বিমান বসু।

বিমান বসু। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২১ ০৭:১৭
Share: Save:

বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরে বামফ্রন্টের প্রথম বৈঠকেই উত্তাপ ছড়াল। জোট-সহ নানা বিষয়েই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে তার পরে তা বাকিদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং ভোটের সাংগঠনিক প্রক্রিয়াতেও তার প্রভাব পড়ে, এই অভিযোগে সরব হলেন বাম শরিক নেতৃত্বের একাংশ। আলোচনায় উঠল ভরাডুবির পরে একের পর সিপিএম নেতার অন্য নেতাদের দিকে প্রকাশ্যে আঙুল তোলার প্রসঙ্গও। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য সঙ্কটের সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে চলার জন্যই সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন।

জোট গড়ে ভোটে লড়ার বিষয়ে শরিকদের আপত্তি ছিল, বিষয়টা অবশ্য এমন নয়। কিন্তু তাঁদের আপত্তি পদ্ধতিগত প্রশ্নে। আলিমুদ্দিনে বৃহস্পতিবার ফ্রন্টের বৈঠকে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন-সমঝোতার খুঁটিনাটি সিপিএম ঠিক করে শরিকদের উপরে চাপিয়ে দিয়েছিল। তার ফল ভাল হয়নি। এ বারও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুধু সিপিএমের সঙ্গে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন। কংগ্রেস হোক বা আইএসএফ-কে আসন ছাড়া— সিপিএম সব সিদ্ধান্ত ঠিক সময়ে শরিকদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়নি। এই ভাবে চলার চেয়ে ফ্রন্ট ভেঙে দেওয়াই ভাল, এমন মন্তব্যও এ দিন করেন নরেনবাবু। তাঁর অভিযোগকে সমর্থন করেছেন আরএসপি, সিপিআইয়ের নেতৃত্ব। তাঁদের যুক্তি, হেরে শূন্য হয়ে যাওয়ার পরে সব শরিকই এখন সমান! বিমানবাবু আশ্বাস দিয়েছেন, শরিকদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সব ক্ষোভ-অভিযোগ শোনা হবে। এত বছরের বামফ্রন্ট ভেঙে দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।

ফল প্রকাশের পরে সিপিএমের পরাজিত বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য, পরাজিত প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়েরা জোট-সহ নানা সিদ্ধান্তের জন্য দলের নেতৃত্বের একাংশকে প্রকাশ্যেই কাঠগড়ায় তুলছেন। আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যের মতো বাম নেতৃত্বের একাংশ বিমানবাবুর কাছে আর্জি জানিয়েছেন, এ ভাবে দোষারোপের পালা চললে বামপন্থী ঘরনার লেশটুকুও আর অবশিষ্ট থাকবে না! নানা দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে তৃণমূলকেই মানুষ কেন বিজেপির মোকাবিলায় বেছে নিয়েছেন এবং বামেদের এখন কী করণীয়, সেই বিষয়ে বরং যুক্তিনির্ভর আলোচনা হোক, এমন প্রস্তাবই দিয়েছেন মনোজবাবুরা। পরে তন্ময়বাবু, কান্তিবাবুদের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ দিন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘বিপর্যয়ের পরে যাঁর যা মনে হয়েছে, বলেছেন। তবে দল কাউকেই কোনও লাইসেন্স দেয়নি!’’

ফ্রন্টের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ফল প্রকাশের পরে ঘটে চলা সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে, দরবার করা হবে স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছেও। জেলায় পুলিশ সুপার বা জেলাশাসকের কাছেও যাওয়া হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিনই আইএসএফের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী। সেলিমের অভিযোগ, রাজনৈতিক সন্ত্রাস যেমন হচ্ছে, তেমনই তাতে বিজেপির সাম্প্রদায়ির রং লাগানোর চেষ্টাও অব্যাহত। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন, তাঁকেই দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE