Advertisement
১১ মে ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: প্রার্থিতালিকা নিয়ে অসন্তোষ, জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ

বৃহস্পতিবারের ক্ষোভ গড়াল পরের দিনে। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা শুক্রবারেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ দেখালেন।

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ, কান্দি, দুবরাজপুর, বালি শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ১৬:২৯
Share: Save:

বৃহস্পতিবারের ক্ষোভ গড়াল পরের দিনে। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা শুক্রবারেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ দেখালেন। সকলেরই ক্ষোভ মনোনীত প্রার্থীকে নিয়ে।

প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও কয়েকদিন আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া বৈশালী ডালমিয়াকে বালি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করায় বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা। বালি বিধানসভা এলাকায় রাজেন শেঠ লেনে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের দাবি, বৈশালী ‘বহিরাগত’। তাঁর ‘দুর্নীতি ও অত্যাচারের’ বিরুদ্ধেই এতদিন লড়াই করেছেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত তাই কেউ মেনে নিতে পারছেন না। দলত্যাগ করে নয়, তাঁরা চান প্রতিবাদ করে এই কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের বার্তা পৌঁছে দিতে। বিজেপি নেতা ছোটু দাসের নেতৃত্বে চলা বিক্ষোভ থেকে বিজেপি কর্মীরা জানিয়েছেন, বৈশালী ‘অবাঙালি’ ও ‘বহিরাগত’। তাই তাঁকে প্রার্থী হিসাবে মানতে চান না তাঁরা।

ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তফজিল আহমেদ বলেন, ‘‘বৈশালী বিধায়ক থাকাকালীন কোনও উন্নয়নের কাজ না করার জন্যই তাঁকে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। বিজেপি এখন সেই তাঁকেই প্রার্থী করেছে। অসন্তুষ্ট বিজেপি সমর্থকরা চাইলে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন।’’

শুক্রবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অপছন্দ হওয়ায় প্রতিবাদে নামেন দলের কর্মী, সমর্থকরা। বিক্ষোভে সামিল হন কান্দি বিজেপি টাউন সভানেত্রী বিনিতা রায়-সহ চারটি মণ্ডলের সভাপতি। তাঁরা সকলেই দাবি করেন, প্রার্থী হিসাবে গৌতম রায়কে মানা হবে না। গৌতম তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপি-তে এসেছেন। তাই তাঁর বদলে দলের দীর্ঘদিনের কোনও নেতা-কর্মীকে প্রার্থী করতে হবে। এই দাবিতে দীর্ঘক্ষণ উত্তাল হয় কান্দির জেমো এলাকা।

বীরভূমের দুবরাজপুরের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়েও দেখা গিয়েছে একই ক্ষোভ। শুক্রবার প্রার্থী অনুপ সাহা-র মনোনয়নের বিরুদ্ধে খয়রাসোল বাসস্ট্যান্ডের কাছে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে চলে কর্মসূচি। কর্মীদের অভিযোগ, বিজেপি-র বীরভূম জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা গোটা জেলাকেই ‘সাহা কোম্পানি’ করে তুলেছেন। কর্মীরা দিলীপ ঘোষের কাছে স্থানীয় প্রার্থী চেয়ে দাবিও জানিয়েছিলেন বলে জানান। কিন্তু সে দাবি মানা হয়নি। বিক্ষোভ থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হুমকি, এই প্রার্থী থাকলে তাঁরা বিজেপি-র হয়ে ভোটে প্রচার করবেন না।

রায়গঞ্জে ইটাহার কেন্দ্র নিয়ে যেমন ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তেমনই বিক্ষুব্ধ করণদিঘির বিজেপি কর্মী সমর্থকরাও। করণদিঘিতেও এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। বহিরাগত কোনও ব্যক্তিকে এখানে প্রার্থী করা হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে শুক্রবার করণদিঘির দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তাঁরা সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, দল বদলে আসা কাউকে প্রার্থী না করে দীর্ঘদিন যাঁরা দলের হয়ে লড়াই করছেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রার্থী করতে হবে। এই জেলারই হরিরামপুর কেন্দ্রেও প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকরা। হরিরামপুর-ইটাহারের রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। তালা মেরে দেন বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে। বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থী হিসাবে নীলাঞ্জন রায়ের নাম ঘোষণা করে বিজেপি। আর তাঁকে প্রার্থী বলে মানতে চাইছেন না কর্মী সমর্থকরা।

রানাঘাটের চিত্রটাও কিছুটা একই। রানাঘাট উত্তর পশ্চিম কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থী পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে বদলানোর দাবি তুলে গেরুয়া শিবিরের একাংশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে নদীয়া জেলায় বিজেপি-র মূল অফিসের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এমন কি বিজেপি-র যুব কর্মীরা তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ভাঙা হয় অফিসের চেয়ার। বিক্ষুব্ধ কর্মী ও সমর্থকদের দাবি, পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে থাকাকালীন নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিজেপি-র কর্মীদের জেল পর্যন্ত খাটিয়েছেন। এক মাস হল বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে প্রার্থী হিসাবে মানতে পারছেন না বিজেপি কর্মীরা। অন্যদিকে, পার্থ জানিয়েছেন, ‘‘বিক্ষোভের ঘটনা ঘটতেই পারে। ওসব সাময়িক, মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE