পটাশপুরে শুভেন্দুকে নিশানা মমতার।
মাস তিনেক আগে পর্যন্তও ‘সহযোদ্ধা’ হিসেবেই তাঁদের চিনতেন পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ। কিন্তু সেখানে শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারীরই ‘একচেটিয়া আধিপত্য’ ছিল বলে দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সরাসরি শুভেন্দুর নাম মুখে আনেননি তৃণমূল নেত্রী। বরং একটি ‘নির্দিষ্ট মানুষের’ অনুমতি ছাড়া তাঁরও পূর্ব মেদিনীপুরে ঢোকার অনুমতি ছিল না বলে দাবি করেছেন। এই নির্দিষ্ট মানুষটি যে শুভেন্দুই, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।
শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের তিনটি সভা করেন মমতা। পটাশপুরের সভাতেই এমন অভিযোগ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘আগেও একাধিক বার পটাশপুরে এসেছি আমি। কিন্তু সেই সময় মেদিনীপুর জেলায় শাসন ছিল একটি নির্দিষ্ট মানুষের হাতে, যেখানে অন্য কেউ পাত্তা পেত না এবং আমাকেও আসতে দেওয়া হত না। কিন্তু আজ আমি স্বাধীন। আজকের দিনে মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের যে কোনও জায়গায় যেতে পারি। আগে আসার আগে অনুমতি নিতে হত। জিজ্ঞেস করতে হত, এগরায় যাব? পটাশপুরে যাব? ভগবানপুরে যাব? তমলুকে যাব? হলদিয়ায় যাব?’’
অমিত শাহের হাতে গলায় পদ্মের উত্তরীয় পরার সময়ই শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সাল থেকে বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। তা নিয়ে এত দিন জনসমক্ষে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি তৃণমূল নেত্রীকে। কিন্তু পটাশপুরের সভায় খানিকটা স্বগতোক্তির সুরেই মমতাকে বলতে শোনা যায় যে, ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’-এর অভিসন্ধি বুঝতে পারেননি তিনি। মমতা বলেন, ‘‘এত অন্ধ স্নেহ দিয়েছিলাম তাদের। কিন্তু পরিবর্তে তারা গদ্দারি করল। গদ্দার যারা ছিল, তারা গদ্দারি করবেই। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু এটা ভাবতে পারিনি যে ২০১৪ সাল থেকে বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল তারা। আজকে সে কথা স্বীকার করছে। অর্থাৎ ঘর শত্রু বিভীষণ ছিল। আমি বুঝতে পারিনি। তাই এত কষ্ট হয়েছিল। আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।’’
মমতার মন্তব্যে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি শুভেন্দু বা অধিকারী পরিবারের তরফে। বরং শিশির অধিকারীর বিজেপি-তে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরাল হচ্ছে। শিশির জানিয়েছেন, শুভেন্দুর কথা মেনেই তিনি অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদীর সভায় যাবেন। যা আগেই শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, পটাশপুরে মমতার সভার ঠিক আগে সেখান থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে নীলবাড়ির লড়াইয়ের ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রামে শুক্রবারও প্রচারে নামেন শুভেন্দু। সমর্থকদের নিয়ে পদযাত্রায় বেরোন। পথে মহিলাদের দেখে হাতজোড় করে স্লোগান তোলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম মা, মমতাজ বেগমকে একদম না’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy