Advertisement
১০ মে ২০২৪

কার ভাগ্যে মন্ত্রিত্ব, জল্পনা শুরু তৃণমূলে

বাম আমলে সংখ্যাটা ছিল দুই। তৃণমূলের প্রথম পাঁচ বছরের শাসনকালে তা কমে দাঁড়ায় এক। কিন্তু এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে অভাবনীয় ভাল ফল করেছে তৃণমূল। ১৯টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জিতেছেন ঘাসফুলের প্রার্থীরা। এবং এক সময়ের বাম দুর্গ এই জেলা থেকে মুছে গিয়েছে লাল। ফলে, নতুন মন্ত্রিসভায় জেলার কত জন ঠাঁই পাবেন তা নিয়ে জেলা তৃণমূলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০১:৩৫
Share: Save:

বাম আমলে সংখ্যাটা ছিল দুই। তৃণমূলের প্রথম পাঁচ বছরের শাসনকালে তা কমে দাঁড়ায় এক। কিন্তু এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে অভাবনীয় ভাল ফল করেছে তৃণমূল। ১৯টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জিতেছেন ঘাসফুলের প্রার্থীরা। এবং এক সময়ের বাম দুর্গ এই জেলা থেকে মুছে গিয়েছে লাল। ফলে, নতুন মন্ত্রিসভায় জেলার কত জন ঠাঁই পাবেন তা নিয়ে জেলা তৃণমূলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে তৃণমূলের জয়ীদের মধ্যে আবার জেলা তৃণমূলের একাধিক প্রথম সারির নেতা রয়েছেন। রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রীও। তবে কার ভাগ্যে মন্ত্রিত্বের শিকে ছেঁড়ে, তা নিয়ে নবনির্বাচিত বিধায়কেরা একটি কথাও বলতে নারাজ। তাঁরা শুধু জানাচ্ছেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল যে দায়িত্ব দেবে, সেই দায়িত্বই তাঁরা পালন করবেন।

শুক্রবার নবনির্বাচিত বিধায়কেরা কালীঘাটে গিয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূলের পরিষদীয় দলের বৈঠক ছিল। দলের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুরের কথা আলাদা ভাবে ওঠেনি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য কয়েকটি জেলা নিয়ে মন্তব্য করেন। খোঁজখবর নেন। পাশের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের কথাও বৈঠকে ওঠে। তৃণমূলের এক জেলা নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘যে সব জেলার ফল খুব ভাল হয়েছে কিংবা তুলনায় খারাপ হয়েছে, সেই সব জেলার কথাই ওঠে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ফল যে ভাল হবে, তা বোধহয় নেত্রী আগে থেকেই জানতেন। তাই আলাদা ভাবে এ জেলার কথা সামনে আনেননি।’’ দলের এক সূত্রে খবর, নারায়ণগড় থেকে নির্বাচিত প্রদ্যোত ঘোষ, গড়বেতা থেকে নির্বাচিত আশিস চক্রবর্তীদের তিনি বার্তা দিয়েছেন, ‘ভোটে জিতেছেন ভাল কথা। তবে যে যাঁর নির্বাচিত এলাকায় গিয়ে সময় দেবেন। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনবেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।’ শাসক দলের নবনির্বাচিত এক বিধায়কের মতে, ‘‘প্রদ্যোতবাবু, আশিসবাবুরা কেউ নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা নন। মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তাই নেত্রী এমন কথা বলেছেন।’’

২০১১ সালে পালাবদলের নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৮টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। পরে সিপিএমের এক বিধায়ক দলবদল করলে তৃণমূলের আসন বেড়ে হয় ৯। জেলা থেকে মন্ত্রী হন ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা। প্রথমে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। পরে পশ্চিমাঞ্চল থেকে সরিয়ে আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী করা হয়। এ বার জেলা থেকে তৃণমূলের যে ১৭ জন জিতেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো, দলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তী প্রমুখ। দলের একাংশের মতে, মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দীনেনবাবু, প্রদ্যোতবাবু, আশিসবাবুরা। দলের একটি অংশ প্রদ্যোতবাবুকে এগিয়ে রাখছেন। কারণ, তিনি হারিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে। শুধু এই ক’জনই নয়, তালিকায় রয়েছেন পিংলা থেকে নির্বাচিত সৌমেন মহাপাত্রের নামও। সৌমেনবাবু প্রাক্তন মন্ত্রী। গতবার তমলুক থেকে জিতেলেন। এ বার তাঁকে পিংলার টিকিট দেওয়া হয়। দলের একাংশের দাবি, সৌমেনবাবুও মন্ত্রিত্বের দাবিদার।

তৃণমূলের এক নেতার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘যে সব নাম নিয়ে চর্চা চলছে, তার বাইরে অন্য কেউও মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারেন। তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। নেত্রী সকলের সম্পর্কেই খোঁজখবর রাখেন।’’ নতুন সরকার গঠন হবে আগামী শুক্রবার। জেলার কার ভাগ্যে মন্ত্রিত্বের শিকে ছিঁড়ল, তা জানতে আপাতত ওই দিনেরই অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE