কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে হরিহরপাড়ার বাইপুর গ্রামের ঘটনা। হরিহরপাড়ার বাইপুর গ্রামের বুথে ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর সময়েই হুমকি দেয় তৃণমূলের লোকজন। হুমকি উড়িয়ে তাঁরা ভোট দেন। তারপরেই রাত ১০টা নাগাদ পিস্তল-টাঙ্গি-হাঁসুয়া-কুড়ুল-শাবল-রড-লাঠি হাতে তৃণমূলের লোকজন ওই কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ধানের গোলা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। টিউবওয়েল ভেঙে দেওয়া হয়। বাড়ির উঠোনে নতুন কচি পাতায় ভরে ওঠা পেয়ারা গাছও কেটে ফেলে ওই দুষ্কৃতীরা। বাড়ির দোতলার জানালা থেকে ছোট ছেলেমেয়েরা ওই তাণ্ডব দেখছিল। অভিযোগ তাদের লক্ষ্য করে শকেট বোমা ছোড়া হয়।
হামলার আশঙ্কা করে আক্কাস শেখ, এসাদুল শেখ, মন্টু শেখ, মুদাস্মর মোল্লা, লাল্টু শেখ, রমজান সেখ, রিন্টু শেখের মত কংগ্রেস সমর্থকরা ভোট মিটে গেলেও বাড়িমুখো হননি। রাতে আশ্রয় নেন হরিহরপাড়া ব্লক কংগ্রেস কার্যালয়ে। এ দিন সকালে গিয়ে দেখা গেল, নিরীহ মানুষগুলো চোখেমুখে আতঙ্ক লেগে রয়েছে। তাঁদের অনেকের পরিবারও ওই রাতে বাড়িতে ভয়ে থাকতে পারেননি। গ্রামে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে কোনওরকমে রাত কাটান বাড়ির মহিলারা। আক্কাস শেখকে বাড়িতে না পেয়ে পিস্তলের বাঁট দিয়ে তাঁর বৃদ্ধ অসুস্থ বাবা কুরবান শেখের মাথায় মারে ওই দুষ্কৃতীরা। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বহড়ান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আক্কাসের মা আয়েষা বিবি বলেন, ‘‘পুলিশে খবর দিলে আবার রাতে এসে পেট্রল ঢেলে সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছে ওরা। বাড়ির সীমানা পাটকাঠির বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। ওই বেড়া ভেঙে বাড়িতে ঢুকে এলোপাথাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। টিভি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।’’ রমজান শেখের স্ত্রী সেরিনা বিবি বলেন, ‘‘রাতে ভয়ে বাড়িতে ছিলাম না। বাড়িতে থাকলে কুপিয়ে খুন করে দিত। টিউবওয়েল ভেঙে দিয়েছে। সকাল থেকে পাড়া-প্রতিবেশীদের বাড়ি থেকে জল এনে রান্না করতে হচ্ছে।’’ সেরিনা বিবি জানান, আমার যাকে ভাল লাগবে তাকে ভোট দেব। কিন্তু ভোটের লাইনে ঘুরে ঘুরে ৪ নম্বরে বোতাম টিপতে হবে বলে হুমকি দিতে থাকে। তাদের কথা না শুনে কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছি। এটাই আমাদের অপরাধ। পরে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর স্বামীকে তাড়া করে। সাইকেল ফেলে রেখে তিনি প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাতে আর বাড়ি ফেরেনি।
হরিহরপাড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের প্রার্থী মির আলমগীর বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কতটা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে।’’ হরিহরপাড়া থানার
ওসি মনোজ বৈদ্য বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।’’ হরিহরপাড়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy