Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Cinema Halls

দর্শকাসন ১০০ শতাংশ ভর্তিতে খুশি হলমালিক থেকে নির্মাতা

অনেকগুলো বাংলা ছবির পাশাপাশি, বেশ কিছু হিন্দি এবং দক্ষিণ ভারতীয় ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

সব সিটেই বসতে পারবেন দর্শক।

সব সিটেই বসতে পারবেন দর্শক। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:৩৬
Share: Save:

ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে দেশের সব সিনেমা হল ১০০ শতাংশ দর্শকাসন ভর্তি করতে পারবে। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন ছাড়পত্র পেয়ে অত্যন্ত খুশি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলেই।
বেহালার এক বেসরকারি সিনেমা হলের মালিক প্রবীর রায় যেমন বলছেন, ‘‘এত দিন অনেক বড় ছবির মুক্তি আটকে ছিল। এর পরে সেই ছবিগুলি মুক্তি পাবে। আশা করছি সুদিন ফিরবে।’’ এত দিন ধরে ১টা বা ২টো শো দেখানো হচ্ছিল তাঁর সিনেমা হলে। সেই পরিস্থিতি বদলাবে বলেই তাঁর আশা।
অনেকগুলো বাংলা ছবির পাশাপাশি, বেশ কিছু হিন্দি এবং দক্ষিণ ভারতীয় ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলো মুক্তি পেলে ব্যবসা আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে বলেই মত আর একটি সিনেমা হলের মালিক মনোজিৎ বণিকের। কিন্তু এতগুলো ছবির ভিড়ে বাংলা ছবি কি কঠিন প্রতিযোগিতার সামনে পড়বে? পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সিদ্ধান্তটার অপেক্ষায় এত দিন বসেছিলাম। দর্শক আসন ১০০ শতাংশ ভর্তি হলে, এ বার থেকে এখানকার দর্শকদেরও উচিত বাংলা ছবি বেশি করে দেখা। তবেই এখানকার প্রযোজকেরা বাঁচতে পারবেন।’’
সিনেমা হলে দর্শকেরা আগের মতো যেতে পারবেন ঠিকই। কিন্তু বাংলা ছবিকে বাঁচিয়ে রাখার দায় শুধু তাঁদেরই, এ কথা মানছেন না আর এক পরিচালক অরিন্দম শীল। তাঁর মতে, ‘‘ভাল ছবি বানাতে হবে। সেই দায় নির্মাতাদেরও। বছরে ১০০-১৫০টি বাংলা ছবি বানানো হলে, তার মধ্যে ১০টিও দেখার উপযুক্ত কি না, সেটা তো ভেবে দেখতে হবে!’’
লকডাউনের পর থেকে কর্মীদের ৫০ শতাংশ বেতনটুকুই দিতে পারছিলেন কোনও কোনও সিনেমা হলের মালিক। দর্শকাসন পুরো ভর্তি করা গেলে রোজগার আবার আগের মতো হওয়ার আশা। প্রবীরের কথায়, ‘‘এত দিন যে আমাদের কর্মীরা ৫০ শতাংশ বেতনে কাজ করে গিয়েছেন, সেটাই অনেক। দর্শক হলে ফিরে এলে আবার ওঁদের প্রকৃত বেতন দেওয়া সম্ভব হবে।’’ কিন্তু দর্শক টানতে বাংলা সিনেমার উপরে কতটা ভরসা করছেন তাঁরা? মনোজিতের বক্তব্য, শুধু বাংলা ছবি দিয়ে হবে না। ভরসা করতে হবে সব ছবির উপরেই।
‘‘প্রথম ছবিটা যেন বাংলা ছবিই হয়’’, দর্শকদের কাছে আবেদন শিবপ্রসাদের। ‘‘সব ছবিই দেখুন। কিন্তু হলে আবার আগের মতো সিনেমা দেখা শুরু করলে, বাংলা ছবি দিয়েই শুরু করুন। নিজেদের ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা বাঁচবেন তা হলে। আর সিনেমা হলের মালিকেরাও বলতে পারবেন, তাঁরা এখনও বাংলা ছবির উপরে নির্ভর করতে পারেন।’’ সব কিছুই যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, রেস্তরাঁ-যানবাহন যখন আগের মতো চলছে, তা হলে সিনেমা বা নাটকের ক্ষেত্রেই বা বিধিনিষেধ থাকবে কেন, প্রশ্ন শিবপ্রসাদের।
কিন্তু সিনেমা হলের ১০০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করতে পারলেই কি দর্শক আবার আগের মতো ফিরে আসবেন? অতিমারির সময়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কি দর্শককে অনেক বেশি মোবাইল বা ওয়েব-পর্দামুখী করে দেয়নি? অরিন্দম অবশ্য সে কথা মানতে রাজি নন। তাঁর মতে, ‘‘ভাল ছবি বানানো গেলে, দর্শক ঠিক ফিরে আসবেন সিনেমা হলে।’’ ডিজিটালের সঙ্গে বড় পর্দায় সিনেমা দেখার আমেজের বিস্তর ফারাক বলে মত তাঁর। শুধু সিট ভর্তি করা যাবে বলেই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত মানুষের আয় বাড়বে— এমন কথা বিশ্বাস করেন না তিনি। তাঁর মতে, এখন আরও বেশি করে ভাল ছবি বানাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cinema Halls
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE