Advertisement
E-Paper

নভেম্বরে হলিউডে এজেন্ট রাখব

এক সময় বাসে চড়ার মতো টাকা ছিল না। আজ বছরে ছ’টা ছবি। তবু রাজকুমার রাও পরের ধাপটা ফেলতে চান মেপেএক সময় বাসে চড়ার মতো টাকা ছিল না। আজ বছরে ছ’টা ছবি। তবু রাজকুমার রাও পরের ধাপটা ফেলতে চান মেপে

অরিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০১:০৭

এ যেন টুজি থেকে হঠাৎ করে ফোরজি-তে চলে আসা। ২০১৭ সালটা রাজকুমার রাওয়ের কাছে যেন তেমনই। কম করে ছ’টা ছবি রিলিজ করছে এ বছর। ‘ট্র্যাপ্‌ড’, ‘রবতা’, ‘বহেন হোগি তেরি’, ‘নিউটন’, ‘ফাইভ ওয়েডিংস’, ‘ওমারতা’। সঙ্গে রয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে হনসল মেটার ওয়েব সিরিজ ‘বোস’। ‘‘কয়েকটার শ্যুট কিন্তু আগে হয়ে গিয়েছিল,’’ লাজুক সাফাই রাজকুমারের। তবে একজন চরিত্রাভিনেতার একসঙ্গে এতগুলো ছবিতে কাজ করা কি সম্ভব? এ বার অবশ্য লজ্জা ঝেড়ে ফেলেছেন, ‘‘সম্ভব নয় তো। খুব অসুবিধা হয়। কিন্তু কী করব? চরিত্রাভিনেতারা একটা সিনেমা থেকে যে টাকা পায়, তাতে তাদের সংসার চলে না।’’

‘সংসার চালানো’ নিয়ে ভাবতেই হয় বত্রিশ বছরের রাজকুমারকে। ছোটবেলা থেকে আর্থিক অনটন। থাকতেন গুরুগ্রামে। এমনও দিন গিয়েছে, যখন চোদ্দো কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে কলেজে এসেছেন। বাসের পয়সা ছিল না। বলছিলেন, ‘‘ডাক্তারিতে পয়সা আছে শুনেছিলাম। তাই চাইতাম ডাক্তার হতে।’’ ঈশ্বরের যদিও অন্য পরিকল্পনা। কলেজে পড়ার সময় তাই থিয়েটারের প্রেমে পড়া। ২০০৮ সালে পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে গ্র্যাজুয়েশন। তার পর আবার স্ট্রাগল! ‘‘দু’বছর কোনও কাজ নেই। এমন চেহারায় কে-ই বা কাজ দেবে?’’ মজা করেন। ২০১০-এ প্রথম ব্রেক ‘লাভ, সেক্স অওর ধোকা’ ছবিতে।

প্রতিভার কদর করতে দেরি করেনি বলিউড। আর অভিনয়ের জন্য কাস্টিং ডিরেক্টরদের দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়নি। ‘‘কোনও দলে না থেকেও দিব্যি ছবির অফার পেয়ে যাচ্ছি।’’ এখন ঠিকানা মুম্বইয়ের আন্ধেরির বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। তবে এই স্টারডমে সমস্যা হয়েছে একটা। অভিনয়ের জন্য তাঁর পছন্দ মেথড অ্যাক্টিং। সাধারণ মানুষের আচার-আচরণ নিয়ে আসেন ছবির চরিত্রে। ‘‘কিন্তু এখন আর পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যেতে পারি না। লোককে অবসার্ভ করতে পারি না। স্ট্রাগলের সময়ের এই জিনিসটা এখন খুব মিস করি,’’ বলেন রাজকুমার।

তবু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিত্রনাট্যের কাছাকাছি চরিত্রকে নিয়ে যাওয়ার। ‘আলিগড়’ ছবির জন্য কথা বলেছিলেন অনেক লোকের সঙ্গে। ‘ট্র্যাপ্‌ড’-এর জন্য তো কুড়ি দিন না খেয়ে কাটিয়ে ছিলেন! ‘রবতা’র ৩২৪ বছরের বৃদ্ধের জন্য মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ‘বোস’ ওয়েবসিরিজে সুভাষচন্দ্র বসুর ভূমিকায় অভিনয় করতে আবার মাথার সামনেটাই কামিয়ে ফেলেছেন! কিন্তু সব চরিত্রই যে বড় ‘সিরিয়াস’ গোছের। টাইপকাস্ট হয়ে যাচ্ছেন না? ‘‘তার জন্যই তো ‘বহেন হোগি তেরি’র কাজটা নিলাম। এটা একদম লাইট হার্টেড কমেডি। প্রাণ খুলে হাসতে হাসতে হল থেকে বেরোবে দর্শক,’’ উত্তর তাঁর। জিমে যাওয়াও শুরু করেছেন। ‘‘ফোর প্যাকস কিন্তু হয়ে গিয়েছে,’’ বলেন রাজকুমার।

সব ছবি তো বক্স অফিসে চলেনি? ‘‘অভিনেতার বক্স অফিস থেকে নিজেকে ইমিউন করে নেওয়া উচিত। ছবিটা চলল কি চলল না, সেটা নিয়ে যদি অভিনেতা ভাবে, তা হলে তো সে পাগল হয়ে যাবে। আমি ছবির শ্যুট শেষ হয়ে গেলে আর ভেবেও দেখি না। প্রচারে থাকলাম ওই পর্যন্ত। শুধু দেখি, আমার অভিনয় লোকের কেমন লেগেছে। সেখানে কেউ আঙুল তুলতে পারল কি না,’’ সোজাসাপটা জবাব রাজকুমারের। তাঁর কাছে প্রতিটা ছবিই একটা জার্নি। তিনি শুধু চান জার্নির মজা নিতে।

কিন্তু কখনও কি মনে হয়, রুপোর চামচ মুখে নিয়ে জন্মালে ‘জার্নি’টা আরও সহজ হতো? একবাক্যে অস্বীকার করেন রাজকুমার। ‘‘না, না। সব জিনিসেরই একটা ভাল-খারাপ দিক থাকে। অডি চেপে অডিশনে গেলে হয়তো অভিনয়টাই করতে পারতাম না। তার চেয়ে বাসে করে, সাইকেল চালিয়ে কষ্ট করে যেটা শিখেছি, সেটা আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’ বাংলা ছবি ‘আমি সায়রা বানু’তে তিনি ছিলেন এক রূপান্তরকামীর চরিত্রে। ‘‘শ্যুটিংটাই তো শেষ হল না,’’ আক্ষেপ তাঁর গলায়!

এত ধরনের অভিনয় করেন। সমালোচকরা প্রশংসাও করেন তাঁর অভিনয়ের। কিন্তু কখনও হলিউডে ছবি করার কথা ভাবেননি? ‘‘ভাবিনি তা নয়। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। এই নভেম্বরে লস এঞ্জেলেস যাব। শো রিল বানিয়ে নিয়েছি। কাস্টিং ডিরেক্টরদের সঙ্গে কথা বলব। আর এজেন্টও রাখব,’’ বলেন রাজকুমার রাও।

Rajkummar Rao Bollywood Actor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy