শীতের দুপুর। স্টুডিয়োর বাগানে বসে সকলের সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা। বাঁধা হয়েছে প্যান্ডেল। অনুজা, মিশকা থেকে সুদীপা, আদিত্য—কারও মুখে হাসি, কারও চোখে জল। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র অন্তিম দিনের শুটিংয়ে কিছুটা উদ্যাপন, কিছুটা মনখারাপের পরিবেশ। শিল্পীদের মনখারাপের মাঝে ধরা পড়ল অন্য ছবি। শেষ দিনে সবাই চিন্তিত স্টুডিয়োর সারমেয়দের নিয়ে।
আর কয়েক দিন পরেই চার বছর পূর্ণ হত এই ধারাবাহিকের। ছোট দীপা থেকে নতুন প্রজন্মের সুদীপা, গল্পের অনেক মোড় পর্দায় দেখেছে দর্শক। ক্যামেরার সামনে যা-ই হোক না কেন, শট কাটলেই সবাই একটা পরিবার। সেখানে দুপুরে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া ছিল। সুযোগ পেলে বিকেলের আড্ডা ছিল। আর এ সবের মাঝেই অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিল স্টুডিয়োর চারপেয়েরা। তাদের খেতে দেওয়া, কোনও কোনও সময় ওষুধ খাওয়ানো— সব ভাগ করে নিয়েছিলেন ধারাবাহিকের শিল্পীরা। সারমেয়দের মূল ভার অবশ্য ছিল পর্দার অনুজা ওরফে সায়ন্তনী মল্লিকের কাঁধে।
কেক কেটে শেষ দিনের উদ্যাপন। নিজস্ব চিত্র।
শেষবেলায় তাই ওদের নিয়েই চিন্তা ঘুরছে মাথায়। অভিনেত্রী মল্লিকা মজুমদারও জানালেন একই চিন্তার কথা। সায়ন্তনী বলেন, “সত্যিই চিন্তা হচ্ছে। ওদের কে দেখবে? ঠিক করে এ বার থেকে খাবার পাবে কি না।” উদ্যাপনের মাঝে বিষাদের ছাপ দেখা গেল অবলাদের মধ্যেও। বার বার প্রিয় মানুষদের গা ঘেঁষে শুয়ে পড়ছিল।
আরও পড়ুন:
কারও চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারছিলেন না অভিনেতা রাহুল মজুমদার। অভিনেতা বললেন, “চোখের দিকে তাকালেই কেঁদে ফেলব। তাই কারও দিকে তাকাচ্ছি না।” প্রায় চার ঘণ্টা সফর করে স্টুডিয়োয় প্রিয় নায়কের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন রাহুলের এক অনুরাগী। নায়ক জানালেন, তাঁর বেশ কিছু ছবি কোলাজ করে তা বাঁধিয়ে উপহার দিয়েছেন সেই ভক্ত। সেই সব গুছিয়ে রেখে গোটা টিমের সঙ্গে জমিয়ে ভুরিভোজ সারলেন। এ দিন আয়োজন হয়েছিল বিশেষ পদের—কড়াইশুঁটির কচুরি, ছোলার ডাল, ফুলকপির রোস্ট, ফিশ্ফ্রাই, বাসন্তী পোলাও, পাঁঠার মাংস থেকে শেষপাতে নলেনগুড়ের মিষ্টি। চার বছরের যাত্রা শেষে, কেক কেটে যেমন উদ্যাপন হল, তেমনই আবার কখনও একসঙ্গে কাজ করার আশায় বুক বাঁধলেন শিল্পীরা।