শর্মিলা ঠাকুর তখন মধ্যগগনে। ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’ ছবিতে বিকিনি পরে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। খ্যাতি ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহল্লাতেও। পরের বছরেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মনসুর আলি খান পটৌডীকে বিয়ে করে ফেললেন! হায় হায় করে উঠেছিল টিনসেল টাউন। আনাচেকানাচে একটাই গুঞ্জন, নিজের হাতে নিজের পেশাজীবন শেষ করে ফেললেন সম্ভাবনাময়ী নায়িকা! সম্প্রতি, একান্ত সাক্ষাৎকারে মা-বাবার দাম্পত্যের সেই গল্প প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেত্রী সোহা আলি খান।
বাস্তবে কি তেমন কিছুই ঘটেছিল? এমন কিছু ঘটলে শর্মিলাকে তো আর অভিনয় দুনিয়ায় দেখাই যেত না!
সাক্ষাৎকারে এই কৌতূহলেরও জবাব দিয়েছেন পটৌডী-কন্যা। তাঁর কথায়, “মা-বাবার বিয়ে হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। সেই সময় এক হিন্দু, বাঙালি মেয়ে ভিন্ধর্মের এক বনেদি পুরুষকে বিয়ে করতে চলেছেন। এর থেকে সাহসী পদক্ষেপ আর কী হতে পারে? কিন্তু সমাজ ততটাও এগোয়নি। ফলে, ভাল অভিনেত্রীকে হারিয়ে ফেলার ভয় পেয়েছিল বলিউড। ভয় থেকেই এই ধরনের মন্তব্য করেছিল।” ভোপালের খেতাবপ্রাপ্ত নবাব অবশ্য প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, সেই ভয় অমূলক।
আরও পড়ুন:
সোহার কথায়, “আমার বাবা প্রচণ্ড উদারচেতা। মায়ের কাজকে মর্যাদা দিয়েছিলেন। কোনও দিন অভিনয়ে বাধা দেননি। ফলে, বিয়ের পরেও মা চুটিয়ে অভিনয় করেছে।” তখনও প্রশ্নের মুখোমুখি শর্মিলা, ‘বনেদি বংশের পুরুষ তোমায় কাজ করার অনুমতি দিচ্ছেন’! এ বার ‘কাশ্মীর কি কলি’ আর চুপ থাকেননি। পাল্টা জানতে চেয়েছিলেন, ‘অনুমতি’ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? পটৌডী-শর্মিলা কন্যার মতে, তাঁর মা প্রচণ্ড স্বাধীনচেতা। মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকে উপার্জন শুরু করেছেন। সাহসী পোশাক পরে পর্দায় আসতেও অস্বস্তি বোধ করেননি।
মায়ের কথা বলতে গিয়ে অল্প রসিকতাও করে ফেলেছেন, “আমার সাহসী মা সেই সময় এমন সব চরিত্রে অভিনয় করেছে যা তাঁর সময়ের তথাকথিত ‘ভাল মেয়ে’রা ভাবতেও পারতেন না।”