ক্রিসমাস এলেই ছোটদের মন ছুঁতে চেষ্টা করেন পরিচালকরা। রাজ চক্রবর্তী এ বছর সেই চেষ্টাটা করলেন এবং দু’-চারটে খুঁত বাদ দিলে নেহাত ব্যর্থ হলেন না।
ক’দিন আগেই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘জাঙ্গল বুক’। তার ঢের আগে থেকেই কয়েক প্রজন্মের খুদেরা জঙ্গলের কানুন, পশুপাখিদের দুনিয়া, তাদের জীবন সম্পর্কে জেনে ফেলেছে রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের দৌলতে। কিন্তু যে সময়ে বইটা লেখা, তখনও শের খানরা বিপন্ন প্রজাতি হয়ে ওঠেনি। সমকালীন প্রেক্ষিতে একটা জ্বলজ্যান্ত বাঘকে মোগলির প্রাণে মেরে দেওয়ার গপ্পোটা তাই খানিক সমস্যার ঠেকে।
অরূপ রতন দত্তর গল্পকে ধন্যবাদ। এখানে বরং চোরাশিকারি বনাম বাঘের একটা কাহিনিকে বড় পর্দায় ধরেছেন রাজ। সেই গল্প যদিও চেনা নিয়মে জোজোর কেরামতিতে চোরাশিকারিদেরই হারিয়ে দেয়। কিন্তু এ গল্পের প্রধান চরিত্র সেই হলদে-কালো ডোরাকাটা চারপেয়ে প্রাণীটি। এবং বলা যায়, গল্পের এক প্রকার হিরো সে-ই। সেটা যদিও অতিরিক্ত কল্পনানির্ভর। তবু ছবির শেষে, গল্পের ফরেস্ট অফিসারের সংলাপে, ‘জঙ্গলকে যারা ভালবাসে জঙ্গলের পশুপাখিরাও তাদের ভালবাসে এবং রক্ষা করে’... শুনতে মন্দ লাগে না। বাচ্চাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথাটা এই সময়ে প্রাসঙ্গিক।
তবে পর্দায় ঘন অরণ্য-জীবজন্তুদের দেখাতে যে ভাবে বারবার স্টক ফুটেজের শরণাপন্ন হয়েছে এ ছবি, সেটা দেখলে বড়দের মন খারাপ হতে পারে। ছোটরা যে ভাবে দুর্ধর্ষ রাইফেলধারী চোরাশিকারিদের মেরে ধরাশায়ী করে দেয়, তাও বিসদৃশ। ভিএফএক্স গোলমেলে। তবে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর সঙ্গীত খারাপ লাগবে না। পাহাড়-জঙ্গলের দৃশ্যপটও সৌমিক হালদারের ক্যামেরায় ভাল।
খুদে নায়ক যশোজিৎকে (বন্দ্যোপাধ্যায়) ভাল লাগবে। সামিউলের (আলম) অভিনয় আগেই নজর কেড়েছে। ভিলেনের চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ যথাযথ। জিতু কামাল এবং মানালি দে-ও মানানসই। পর্দায় চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত মজাদার।
বাচ্চাদের জন্য ছবি বানানোটা যে কঠিন, যে কোনও পরিচালকই স্বীকার করে নেবেন। রাজের চেষ্টাটা বাচ্চাদের কাছে সান্তার উপহার হবে কি না, সেটা বরং তারাই বলুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy