Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Aindrila Sharma

Aindrila Sharma: কেমো নিতে নিতে কোভিডকে তুচ্ছ লেগেছিল, কিন্তু আক্রান্ত হই! প্রথম টিকা নিলেন ঐন্দ্রিলা

ঐন্দ্রিলার কথায় জানা গেল, অতিমারির প্রকোপ বাড়ার পরে বাড়ি থেকে বেরোননি তিনি। যে কয়েক বার কেমো নিতে হয়েছিল, তখন বেরোনো। ব্যস। বাকিটা বাড়ি বসে থাকা। তবে মাঝে মাঝে চার দেওয়ালে বন্দি থাকতে খুব মন খারাপ হত। তাই এক বার প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর সঙ্গে কফি শপে গিয়ে এক কাপ কফি খেয়েছিলেন।

ঐন্দ্রিলার লড়াই

ঐন্দ্রিলার লড়াই

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ১৯:৩১
Share: Save:

কোভিডের প্রথম টিকা নিলেন ক্যানসারজয়ী অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। শেষ কেমো নিয়েছিলেন গত ডিসেম্বর মাসের ২৯ তারিখ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিন মাস পার করে মে মাসে কোভিডের প্রথম টিকা নিয়েছেন তিনি। আবার তিন মাস বাদে দ্বিতীয় টিকা। আর পাঁচ জনের মতোই টিকা নেওয়ার ছবি দেওয়ার শখ ছিল ‘জিয়ন কাঠি’র নায়িকার। সে সাধ পূরণ করেছেন ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করে। লিখেছেন, ‘জানি, অনেকটা দেরি করলাম। কিন্তু ইচ্ছা ছিল সবার মতো ছবি তুলব।’
আনন্দবাজার অনলাইনকে ঐন্দ্রিলা বললেন, ‘‘ফুসফুসে পিনেট ক্যানসার হয়েছিল। এই নির্দিষ্ট ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন টিকা নেওয়া যেত না। তাই এত দেরি হল। এখন আমি সকলের মতোই জীবন যাপন করতে পারি। এই যেমন টিকা নিলাম। তবে হ্যাঁ, কয়েকটি জিনিসে বাধা নিষেধ রয়েছে। ফুসফুসের একটি অংশ বাদ গিয়েছে বলে স্কাই ডাইভিংয়ের মতো রোমাঞ্চের খেলায় আর অংশ নিতে পারব না। কোনও দিন হয়তো লাদাখের সৌন্দর্যও দেখতে পারব না। কারণ সমুদ্র তল থেকে খুব বেশি উচ্চতায় যাওয়া বারণ। তা ছাড়া যেখানে অক্সিজেন কম, সে সব জায়গায় ভ্রমণ নিষেধ।’’

এত দিন যে টিকা নিতে পারেননি, তার জন্য ভয় করেনি? নাকি কোভিডকে পাত্তাই দেননি ঐন্দ্রিলা? ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় বার ক্যানসারে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। তার পরেই দেশে দ্বিতীয় বার কোভিড স্ফীতি। সেই সময়ে কেমো নিতে বারবার হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল ঐন্দ্রিলাকে। সারা পৃথিবীর মানুষ যখন কোভিডের ভয়ে সিঁটিয়ে, নায়িকা তখন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন। তাই ঐন্দ্রিলার বক্তব্য, ‘‘হাতির কাছে মশাকে যতটা ছোট মনে হয়, কোভিডকেও ক্যানসারের কাছে সে রকমই মনে হয়েছিল। কোভিডের ভয় মনে দানাই বাঁধেনি। অন্য ভাবে তখন মৃত্যুকে কাছাকাছি দেখতে পাচ্ছি। তবে হ্যাঁ, সেই সময়ে কোভিড হলে হয়তো আর বাঁচতাম না। ডাক্তার তা-ই বলেছিলেন মাকে। তাই ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন কোভিডের মতো রোগ থেকে সতর্ক থাকতে হচ্ছিল। কারণ কোভিড তো ফুসফুসেই সংক্রমণ ঘটায়। আর আমার ফুসফুসেই ক্যানসার।’’

ঐন্দ্রিলার কথায় জানা গেল, অতিমারির প্রকোপ বাড়ার পরে বাড়ি থেকে বেরোননি তিনি। যে কয়েক বার কেমো নিতে হয়েছিল, তখনই বেরোনো। ব্যস। বাকিটা বাড়ি বসে থাকা। তবে মাঝে মাঝে চার দেওয়ালে বন্দি থাকতে খুব মন খারাপ হত। তাই এক বার প্রেমিক অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর সঙ্গে কফি শপে গিয়ে এক কাপ কফি খেয়েছিলেন। আর এক বার বাবা-মা-দিদির সঙ্গে গাড়ি করে শহর ঘুরে বেরিয়েছিলেন তিনি। সে যে কী আনন্দ, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না ঐন্দ্রিলা!

অতিমারি অবশ্য অভিনেত্রীকে রেহাই দেয়নি। তবে ডিসেম্বরে ক্যানসার-চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে বাঁচোয়া। শরীর দুর্বল থাকায় ওমিক্রনের প্রকোপ তাঁর শরীরে অনেকটাই বেশি ছিল। টানা সাত দিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি। সাত-সাতটি কম্বল চাপা দিয়েও জ্বরে কেঁপেছিলেন ঐন্দ্রিলা।

কিন্তু বিপদ তাঁকে কাবু করতে পারেনি এ বারেও। ক্যানসারের পরে কোভিড থেকেও সেরে উঠেছেন মনের জোরে। ঐন্দ্রিলা জানান, মনের সঙ্গে শরীরের যে জোরদার সম্পর্ক, তা তিনি এই কয়েক বছরে ভাল মতো বুঝে গিয়েছেন। ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন মাঝে মধ্যেই রক্ত পরীক্ষা হত তাঁর। যখন মন খারাপ থাকত, পরীক্ষার ফলাফল ভাল আসত না। মন ভাল থাকলে পরীক্ষার ফলাফল স্বাভাবিক থাকত।

তাই মনের ভাল থাকাকেই এখন ‘জিয়ন কাঠি’ বলে মনে করেন ক্যানসার-জয়ী নায়িকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aindrila Sharma cancer Sabysachi Chowdhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE