উন্নত হচ্ছে প্রযুক্ত। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমে যাচ্ছে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার পরিসর। এ বিষয়টি সব থেকে ভাল বুঝতে পারেন অর্ধ শতক আগে জন্ম নেওয়া মানুষেরা। একটা সময় রুপোলি দুনিয়ার তারকাদের দেখা যেত শুধু পর্দায়। গান শোনা যেত শুধু বেতারে। দেখা যেত না গায়ক-গায়িকাকে। এখন তারকাদের ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়তেও কুণ্ঠিত নয় গণমাধ্যম। কিন্তু এর কুপ্রভাব ব্যাপক ভাবে পড়ছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার উপর।
গত কয়েক বছরে ব্যাপক ভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাইবার জালিয়াতি। এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে সচেতনতা। কী ভাবে নিজেকে রক্ষা করতে হবে বদলে যাওয়া পরিবেশে তা নিয়ে সচেতনতা প্রসারে এ বার উদ্যোগী হল আকাশবাণী কলকাতা। গত কয়েক মাস ধরেই সরাকারি ভাবে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-সহ নানা ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রসারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব রেডিয়ো দিবস। তার আগের দিন কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকায় রথীন্দ্র মঞ্চে ‘ব্রডকাস্টিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ডেভলপমেন্ট’ প্রকল্পের অধীনে আকাশবাণী কলকাতা আয়োজন করল এক সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি। এখনও আকাশবাণীর শ্রোতাদের এক বৃহৎ অংশই বয়স্ক, যাঁরা সাইবার জালিয়াতির ফাঁদ সম্পর্কে অবগত নন। কিন্তু এ দিনের সচেতনতা কর্মশালায় যাঁরা যোগ দিলেন তাঁদের অনেকেই নবীন প্রজন্মের মানুষ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন ছাত্রছাত্রী ছাড়াও নানা পেশার মানুষ গিয়েছিলেন এই কর্মসূচিতে। আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ফিনান্স ও অপরেশন) বিপিনকুমার সাহু, সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায়চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট বিদিতকুমার মণ্ডল এবং ইন্ডিয়ান স্কুল এফ এথিক্যাল হ্যাকিং-এর সাইবার সিকিওরিটি ম্যানেজার সাম্যজিৎ মুখোপাধ্যায়।
আকাশবাণী কলকাতার ডেপুটি ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম) মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে আকাশবাণী কলকাতা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এই ধরনের কাজ আমরা আগামী দিনেও করব।” কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভায়ন বালা বলেন, “সাইবার অপরাধের সমস্যা ক্রমাগত বদলে যাচ্ছে, সচেতনতাই একমাত্র অস্ত্র। আমাদের এই কর্মসূচিতে বহু মানুষ এসেছেন, নানা বয়সের নানা পেশার। সেটাই আশার কথা।”