Advertisement
E-Paper

অন্তঃসত্ত্বা হয়েও মায়ের থেকে পাননি শুভেচ্ছাবার্তা! অহনাকে তাই সাধ খাওয়াল আনন্দবাজার ডট কম

মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে একত্রবাস শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে বিয়ে। শেষ পর্যন্তও মেনে নেননি মা। অহনা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মা হতে চলেছেন। কিন্তু তাঁকে সাধ খাওয়ানোর কেউ নেই। হবু মা-এর ইচ্ছে পূরণে সঙ্গী হল আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ০৯:০২
An exclusive photo shoot and baby shower session with actress Ahona Dutta

সাধ খেলেন অহনা। ছবি: সৌরভ।

পরিকল্পনা করে জীবনে কিছু করেননি। সন্তান নিয়েও কোনও পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু মাত্র ২১ বছর বয়সে মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাননি অহনা দত্ত। চলতি বছরের শুরুতেই সুখবর দিয়েছিলেন অহনা। মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে একত্রবাস শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে বিয়ে। কিন্তু মেনে নেননি মা। অহনা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মা হতে চলেছেন। কিন্তু তাঁকে সাধ খাওয়ানোর কেউ নেই। হবু মা-এর ইচ্ছে রাখল আনন্দবাজার ডট কম।

ছোট পর্দায় তিনি ‘মিশকা’ নামেই পরিচিত। প্রসাধনের বহরে খানিক ভারিক্কি হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রসাধনহীন মুখ বলে, তিনি সদ্য কৈশোর পেরোনো তরুণী। প্রসাধন নিয়েও আলাদা করে কোনও শর্ত ছিল না অহনার। আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রী যেন জানেন, যে কোনও সাজেই তিনি সুন্দরী। সাধপর্বের জন্য অহনার পছন্দ চন্দন রঙা হাতেবোনা জামদানি শাড়ি।

রং মিলিয়ে এই শাড়ির সঙ্গে অহনা পরেছিলেন করসেট ধাঁচের ব্লাউজ়। তার সঙ্গে মানানসই গয়না। সাধের থালা দেখেই মুগ্ধ অহনা। আমিষ খাবার খান অহনা। তবে নিরামিষও পছন্দ তাঁর। প্রথমেই তাই বেগুন ভাজা দিয়ে শুরু করলেন। তার পরে মোচার ঘণ্ট খেলেন চেটেপুটে।

মাছ কি খুব একটা পছন্দ নয়? প্রশ্ন করতেই অহনা বলেন, “বাঙালি হয়ে মাছ খাব না? আমি বাঙাল বাড়ির মেয়ে। মাছ আমার খুব পছন্দ।” বলেই গলদা চিংড়ি, ভেটকি পাতুরি আর ভাপা ইলিশে মন দিলেন অহনা।

খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তেমন বাছবিচার নেই অভিনেত্রীর। এই সময়ে যদিও মিষ্টির প্রতিই ঝোঁক বেশি তাঁর। তাই এখন ওজনবৃদ্ধির কথা ভাবছেন না অহনা। মনের সুখে শেষ পাতে খেলেন রসগোল্লা।

ওজন কমুক বা বাড়ুক, লোকজন কথা বলবেই। অহনা বলেন, “ওজন সামান্য বাড়লে বলবে, এই তুই মোটা হয়ে গিয়েছিস। আবার ওজন কমিয়ে গেলে, বলা হবে, অনেক রোগা লাগছে। খাওয়া-দাওয়া করছিস না?” এই সব শুনে ক্লান্ত অহনা। তবে এখন এই সব মন্তব্য শুনতে হচ্ছে না বলে অহনার স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমি অন্তঃসত্ত্বা।”

আলাদা করে এখনও মাতৃত্বকালীন ফোটোশুটও করা ওঠা হয়নি অহনার। তাই আনন্দবাজার ডট কমের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান তিনি। পোশাকও পছন্দ হয়ে যায় তাঁর। গরমকালের কথা মাথায় রেখে অহনার জন্য বেছে নেওয়া হয় গাঢ় গোলাপি রঙের হাতে ডাই করা শিবরি পোশাক।

২১ বছরে মা হওয়ার সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ নয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার ষষ্ঠ মাস চলছে অহনার। প্রতিনিয়ত স্ত্রীর খোঁজ রাখছেন স্বামী দীপঙ্কর রায়। নিজের কাজের মাঝেও নিয়ম করে ফোন করছেন স্ত্রীকে। রূপটান পর্বের সময়ও এল দীপঙ্করের ভিডিয়ো কল। অহনা বলেন, “ও কিন্তু ভিডিয়ো কল করার আগে আমাকে জিজ্ঞাসা করে নেয়।” স্বামীর সঙ্গে ভিডিয়ো কলে সকলের আলাপ করিয়ে দিলেন ছোট পর্দার ‘মিশকা’।

এই সময়ে স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য কাজ থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরেন দীপঙ্কর। অহনা বলেন, “অনেক বছর ও কাজ করে ফেলেছে। তাই এখন নিজের ইচ্ছেয় দ্রুত বাড়ি ফিরতে পারে। ও বাড়ি ফেরার পরে আমরা অনেক গল্প করি। আমরা কেউ শান্ত নই। দু’জনেই কথা বলতে খুব ভালবাসি।”

স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই পরের পোশাকটি বেছে নেন অহনা। যখন কী পরবেন বুঝে উঠতে পারেন না, তখনই ঢিলেঢালা কাফতান ড্রেস বেছে নেন তিনি। তাই সোহাগ-এর সিল্কের কাফতান পছন্দ করেন অহনা। পোশাকের নেকলাইন বিশেষ পছন্দ অভিনেত্রীর। সঙ্গে পরেন পিতলের গয়না।

তবে এই সময় কি মায়ের মতো কারও অভাব অনুভব করছেন? কিছু দিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন দীপঙ্করের মা। আবার অহনার মা-ও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর জীবনে মেয়ের আর কোনও অস্তিত্বই নেই আর। অহনা অন্তঃসত্ত্বা জানার পরেও কোনও বার্তা আসেনি মায়ের পক্ষ থেকে। তবে তা নিয়ে আক্ষেপ নেই অভিনেত্রীর।

বরং অতীত নিয়ে ভাবতে ভালবাসেন না বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দেন অহনা। অভিনেত্রীর কথায়, “শাশুড়ি গত হলেন। আমার মায়ের সঙ্গেও সম্পর্ক ঠিক নেই। প্রথমে ভেবেছিলাম সামলাব কী করে! এখন আর এ সব নিয়ে আমি ভাবি না। আমিও জন্মেছিলাম আমার মায়ের ২১ বছর বয়সে।”

কেমন মা হয়ে উঠতে চান অহনা? এইটুকু বয়সে মা হওয়ার বোধ কেমন? এখানেও কোনও পরিকল্পনা নেই অভিনেত্রীর। নিজেই বলেন, “সবাই বলছেন, ‘বেবি’র আর একটা ‘বেবি’ হবে। এই বয়সে আর কী-ই বা ভাবব! শুধু চাই যেন সন্তান সুস্থ হয়।”

নীল রঙের ওয়ান শোল্ডার সিল্কের কো-অর্ড সেটের সঙ্গে চুল হালকা বেঁধে নিলেন অহনা। সন্তানের লালন নিয়ে পরিকল্পনা না থাকলেও ছবি তোলার সময়ে নিজেই মজা করে অহনা বলেন, “মাতৃত্বসুলভ কি না জানি না। তবে আমি এই যুগের মা। তাই ‘বোল্ড মম্মি’ হব।” ২১ বছর কম বয়স মনে হলেও, এটাই মা হওয়ার উপযুক্ত বয়স। অহনাকে এমনই বলেছেন তাঁর স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। অভিনেত্রী বলেন, “আমি প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে জানাই। তিনি জানান, আগেকার দিনে এই বয়সেই সকলে মা হতেন। এই বয়সেই মেয়েদের হরমোন সঠিক থাকে। তাঁর কথাতেই আরও বেশি সাহস পাই।”

সম্পর্ক নিয়েও ইতিবাচক ভাবনা অহনার। দীপঙ্কর অভিনেত্রীর চেয়ে ১৪ বছরের বড়। অহনা বলেন, “দীপঙ্করকে অনেকেই বলেছেন, ‘অহনা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী মেয়ে। ওর এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। ও কি সারাজীবন তোমার সঙ্গে থাকতে পারবে?’ দীপঙ্কর অবশ্য এ সব নিয়ে ভাবিত নয়।”

“ভবিষ্যতে কী হতে পারে এই ভেবে বর্তমানে ভালবাসব না? ভবিষ্যতে ও যদি ছেড়ে যায়, যাবে। কিন্তু আমি ভালবাসায় বিশ্বাস করি।” দীপঙ্করও নাকি এমনই বিশ্বাস করেন। জানান অহনা? অভিনেত্রীও কি এমনই ভাবেন? তাঁরও স্পষ্ট উত্তর, “হ্যাঁ আমিও এমনই ভাবি। আর ভালবাসা থাকলে একসঙ্গে থাকতে অসুবিধা হয় না।”স্ত্রীর প্রতি মুহূর্তে খেয়াল রাখছেন দীপঙ্কর। চলতি বছরের অগস্ট মাসে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা। কন্যা না কি পুত্র চান? প্রশ্ন করতেই অহনা বলেন, “সন্তান সুস্থ হোক, এটাই চাই। আর আপাতত এই সুন্দর সময়টা উপভোগ করতে চাই।”

স্থান: আহেলি (পিয়ারলেস হোটেল কলকাতা)

পরিকল্পনা: স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রয়োগ: স্বরলিপি দাশগুপ্ত ও উৎসা হাজরা

পোশাক ও গয়না: সোহাগ

স্টাইলিং: সোহিনী

চিত্রগ্রাহক: সৌরভ

রূপসজ্জা: রুদ্রজিৎ দাস

Ahona Dutta baby shower
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy