ছোট পর্দায় ‘কৃষ্ণাতুলসী’ হয়ে তিনি পরিচিত মুখ আগে থেকেই। এ বার বড়পর্দায় বলিউডি অভিষেকে সাড়া ফেলে দিয়েছেন কোচবিহারের মেয়ে মৌনী রায়।
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গোল্ড’ ছবিতে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেছেন মৌনী। ‘কিঁউ কি সাঁস ভি কভু বহু থি’র কৃষ্ণাতুলসী গোল্ড ছবিতে ‘মনোবীণা’। বড়পর্দায় ঘরের মেয়ের অভিনয় দেখেই উদ্বেল কোচবিহারবাসী। ছবি দেখতে যেমন ভিড় করছেন তাঁরা সিনেমাহলে, তেমনই শহরের বাসিন্দাদের, মৌনীর স্কুলের সহপাঠীদের মুখে মুখে ফিরছে মৌনীর কথা। ব্যস্ততার মধ্যেও হোয়াটসঅ্যাপে ভাই মুখরের মাধ্যমে নিজের শহরের ওই আবেগের কথা জেনেছেন মৌনীও। তিনি জানিয়েছেন, “কোচবিহার আমার জন্মস্থান। কোচবিহার সবসময় পিছু ডাকে।” সেই সঙ্গে নিজের সাফল্যের জন্য মা, বাবা ও ম্যাম (প্রযোজক একতা কপূরের) অবদানের কথাও জানিয়েছেন মায়ের আদরের ‘মানিয়া’।
কোচবিহার শহরের ব্যাংচাতরা রোডে মৌনীদের বাড়ি। শহর লাগোয়া বাবুরহাটের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। বাবা অনিল রায় কোচবিহার জেলা পরিষদের অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে চাকরি করতেন। কয়েক বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন। মা মুক্তিদেবী দিনহাটার একটি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। ভাই মুখর কলকাতায় বিবিএ নিয়ে পড়াশোনা করছেন। মুক্তিদেবী ও মুখর, দু’জনেই অবশ্য এখন মৌনীর সঙ্গে মুম্বইতে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইনি বলিউড জার্নি শুরু করলেন অক্ষয় কুমারের নায়িকা হয়ে
ফোনে মুক্তিদেবী বলেন, “ছোটবেলা থেকে নাচ, গানের প্রতি ওর ঝোঁক ছিল। টিভি দেখেও দ্রুত সেসব আয়ত্ত করে নিতে পারত। স্কুলের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিত। সাফল্যের কৃতিত্ব ওকেই দেব।” মুখর বলছেন, “একটা অডিশনে দর্শক হিসেবে গিয়েছিল দিদিভাই। সেখানে একতা কপূরের নজরে পড়ে যায়। সেখান থেকে শুরু বলতে পারেন। বলিউডে ওর ছবি দেখতে পারায় ভীষণই ভাল লাগছে।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌনীর ঠাকুর্দা শেখর রায়ও অভিনয়ের তালিম দিতেন। উৎসাহী ছিলেন। সেদিক থেকে ‘গোল্ড’ পরিবারিকভাবে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করল বলেও তাঁর পরিজনেরা মনে করছেন। স্কুলের দিল্লির মিরান্ডা হাউসে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করেন মৌনী। পরে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে স্নাতকোত্তরও করেছেন।
যেখানে মৌনীর শৈশব, কৈশোর কেটেছে সেই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সেখানকার শিক্ষক-কর্মীরাও দারুণ খুশি। এক শিক্ষক গৌতম সরকার বলেন, “স্কুলের প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই মৌনী যোগ দিত। পড়াশোনাতেও বরাবর ভাল ছাত্রী ছিল। সবথেকে বড় কথা শিক্ষকদের ভীষণ সম্মান করত। ওর জন্য গর্ব হচ্ছে। খুব শিগগিরি ‘গোল্ড’ দেখতে যাব।” সেই ছবি দেখতে এসেই টিকিট কাটছিলেন প্রাথমিক শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা দাস। বললেন, “আমিও ওই স্কুলেই পড়েছি। মৌনী আমার চেয়ে এক ক্লাস উপরে ছিল। একসঙ্গে অনুষ্ঠানও করেছি। বড়পর্দায় ওকে দেখতে এলাম।” মৌনির আত্মীয় সুভাষ বর্মন বলেন, “ওর বাবা আমাদের সঙ্গেই চাকরি করতেন। তাই আনন্দটা আরও বেশি হচ্ছে। আমিও বড়পর্দায় ওকে দেখতে মুখিয়ে আছি।”