‘‘ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন...’’
বাঙালি আরব বেদুইন না হতে পারে কিন্তু এ বার পুজোয় অনেকেই দুবাইমুখী!
পুজো মানে এমনিতেই বাঙালির বেড়াতে যাওয়ার ঢাকেও কাঠি পড়ে যাওয়া।
আর প্লেন টিকিটে হাজারো ছাড়, কম খরচের হোটেলের কল্যাণে গড়পড়তা বাঙালিও আজ বিদেশমুখী।
তবে যদি ভাবেন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, ক্লায়েন্ট মিটিংয়ের চাপে বুকিংটা করবেন কবে? মনে রাখবেন, অভিজ্ঞরা বলেন বুকিংয়ের সেরা সময় ঠিক দু’মাস আগে...
যা তা হ্যায় তু কাঁহা
এটা আর লাখ টাকার প্রশ্ন নয়। ইন্সটাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের যুগে বেড়াতে যাওয়ার জায়গা খোঁজ করতে মোটা গাইড বুক নামানোরও কোনও দরকার নেই। ট্রিপঅ্যাডভাইসর, ফোরস্কোয়ারের মতো অ্যাপসে রিসার্চের কাজটা করে নিতে পারবেন অফিসে বসে স্মার্টফোন বা ট্যাবেই। হোটেলের সাইটে ছবি দেখে ভুলবেন না। ফোরামের মেম্বারদের আপলোড করা ছবি দেখুন। আর যদি কোনও প্রশ্ন থাকে ফোরামেই করতে পারেন, অন্য সদস্যরা নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করবেন। ঠেকে শেখার দরকার হবে না।
প্লেনের টিকিটটা কিনে ফেলা মানে অর্ধেক সমস্যা মিটে যাওয়া। কোথাও যেতে হলে, সবার প্রথমে একবার গুগল ফ্লাইটে প্লেনের টিকিট সার্চ করে নেবেন। কাছাকাছি কোন দিন সব থেকে কম দামে টিকিট পাবেন সেটা জানতে পারবেন। অনেক সময় সস্তার লোকাল এয়ারলাইন্সের খবর ক্লিয়ারট্রিপ বা মেকমাইট্রিপ-এর মতো সাইটে পাবেন না। তাইল্যান্ডে যেতে হলে এটা মাথায় রাখবেন। হাজার দু’য়েক টাকাতেই ব্যাঙ্কক-ফুকেত রিটার্ন টিকিট হয়ে যাবে লোকাল এয়ারলাইন্সে।
এক একেলা ইস শহর মে
‘‘দুর্গাপুজোর সময় ভারত থেকে বুকিং বেড়ে যায় দেখেছি। আমার মতে হোটেল বুকিং আগেই সেরে নিন। অনেক সময় তো ফ্রি ক্যানসেলেশনের সুবিধা থাকে, তাই পরে মত বদলালেও অসুবিধা হওয়ার কথা না। ভারতীয়দের মধ্যে এখন বিদেশ যাওয়ার প্রবণতাও খুব বেড়েছে। কারণটাও খুব সহজ। দেড় থেকে দু’মাস আগে বুকিং করে ফেলতে পারলে কিন্তু গোয়ার খরচে দুবাই, সিঙ্গাপুর হয়ে যায়,’’ বলছিলেন বুকিংডটকমের গ্লোবাল হেড আন্দ্রে ম্যানিং।
তবে হোটেলই একমাত্র থাকার জায়গা ভাববেন না। এয়ারবিএনবি-র মতো অ্যাপসে দেখবেন পেল্লায় ভিলা পেয়ে যাবেন হোটেলের থেকে কম খরচেই। আর হঠাৎ করে বেড়াতে যাওয়া ঠিক করলেও চিন্তা নেই। হোটেল টুনাইট, লাস্ট মিনিট ট্রাভেলের মতো অনেক অ্যাপস সে দিনেই হোটেলের বুকিং করে দিতে পারবে।
চাপ কমানোর উপায়
কিন্তু টার্গেট মিট করার চাপে যদি এত সময় দিতে না পারেন? তা হলে থমাস কুক, মেক মাই ট্রিপের মতো অনলাইন ট্রাভেল সাইটই আপনার পক্ষে ভাল। দাম একটু বেশি পড়তে পারে কিন্তু সব দিক সামলানোর চাপ আপনাকে নিতে হবে না।
দাম যে বেশি দিতে হবে, সে কথা অবশ্য মানছেন না থমাস কুকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যোতিন্দর পাল সিংহ। বললেন, ‘‘একদম না। আমরাই তো বত্রিশ হাজার টাকায় তাইল্যান্ড, হংকং প্যাকেজ দিচ্ছি। আলাদা করেও এর থেকে কমে হবে না। আর বাঙালিরা এমনিতেই গ্রুপে ট্রাভেল করতে পছন্দ করে। প্যাকেজের প্রবণতা তাই বাঙালির অনেক দিনের। গত বছরের তুলনায় এ বার বিদেশে বুকিং বেড়েছে ১৭ থেকে ২০ শতাংশ। আর শুধু এশিয়ার দেশগুলো না, এখন মিশর, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, তুরস্কের মতো দেশে যাওয়ার চাহিদাও বেড়েছে।’’
একই ভাবে উবের-এর মতো অ্যাপ নির্ভর ট্যাক্সি ব্যবস্থা নিয়ে যত ঝামেলাই হোক না কেন, এর প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করতে পারবেন না। শুধু তো আপনার নিজের শহরে নয়, যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানেও এর সুবিধা পেতে পারেন। ট্যাক্সি ড্রাইভারকে রাস্তা বলে দিতে হবে না, সে ঠকাচ্ছে কি না তার চাপ থাকবে না। এমনকী এমন অনেক অ্যাপসে সারা দিনের ঘোরার জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করে নিতে পারবেন।
আর কিন্তু বাকি মাত্র ছেষট্টি দিন। বুকিংটা আজই সেরে ফেলুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy