Advertisement
E-Paper

‘হেমলক সোসাইটি’র ও রকম হিট গানের পরেও অনুপম আর ডাকল না: লোপামুদ্রা

অন্যের জন্য গান গাওয়া। ছন্দের জন্য গান গাওয়া। নাচের জন্য গান গাওয়া। এ ভাবেই অজস্র অনুষ্ঠান আর লড়াই। এগিয়ে যাওয়া লড়াইয়ের ক্লান্তি প্রায় পঁচিশ বছরের। লোপামুদ্রা মিত্র।

লোপামুদ্রা মিত্র। নিজস্ব চিত্র

লোপামুদ্রা মিত্র। নিজস্ব চিত্র

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ১১:২৮
Share
Save

অন্যের জন্য গান গাওয়া। ছন্দের জন্য গান গাওয়া। নাচের জন্য গান গাওয়া। এ ভাবেই অজস্র অনুষ্ঠান আর লড়াই। এগিয়ে যাওয়া লড়াইয়ের ক্লান্তি প্রায় পঁচিশ বছরের। লোপামুদ্রা মিত্র।

‘‘আমি হইহই, নাচের গান, মাচার অনুষ্ঠান করে ক্লান্ত। আর ভাল লাগছে না আমার আওয়াজের গান...’’

নতুন ভাবনা ভেবেছেন লোপা নিজের তাগিদে। নিজের জন্য।

‘‘এত দিন গান করেছি। অন্যের ভাললাগার কথা ভেবে। দর্শক। আমার মিউজিশিয়ান। সংসার...এ বার নিজের ভাললাগার জন্য গান নিয়ে অন্য কিছু ভেবেছি। আইসিসিআর-এ ৪ মে আমার অনুষ্ঠান। আমি জানি, এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁরা আমার ভাললাগার মতো করে গানটা শুনতে চাইছেন। সেই জায়গাটা আছে বলেই আমার এই ভাবনা।’’ বললেন লোপা। লোপার এই ভাবনায় সঙ্গে আছেন সৌম্যজ্যোতি, সোমনাথ, চয়ন।

এ যাবৎকাল পুরোটাই গানের অনুষ্ঠান আর মাচার উপর দাঁড়িয়ে আছেন লোপা। যে প্রশ্নটা সহজে আসে-আপনার সিনেমার গান কই?

‘‘সিনেমায় কেউ গাইতে ডাকে না আমায়! অনুপমের সঙ্গে ‘হেমলক সোসাইটি’-র ও রকম হিট গানের পরেও অনুপম আর ডাকল না। আশ্চর্য লাগে। আজও বুঝলাম না কি ব্যাপার। এ প্রশ্নের উত্তর নেই আমার কাছে!’’ সাফ জবাব লোপার।

আরও পড়ুন: ডান্সার, গায়িকা, মার্শাল আর্টে দক্ষ এই বলি নায়িকার নাকি ‘ইভিল ভাইবস’ রয়েছে!

সিনেমায় গান না করেও শুধু অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন তিনি গানের জোরেই।

জয় ও লোপা। নিজস্ব চিত্র।

একটা গিটার ব্যাঞ্জো। একটা বাঁশি। আর পারকাশন! সোমনাথ রায়, থাকবেন তাঁর ছোট বড় মাঝারি, সব রকমের তালবাদ্য আর অবশ্যই তাঁর জনপ্রিয়তার চাবিকাঠি ঘটমকে সঙ্গে নিয়ে। সৌম্যজ্যোতি ঘোষ, বাঁশি বাজান। সঙ্গে বাজাবেন হারমোনিয়াম, পেনি হুইসল, ডোভাংকা, কাজো, আরও কিছু হয়তো। চয়ন চক্রবর্তী গিটার ও ব্যাঞ্জো। আছেন অগ্নিত্রয় চক্রবর্তী। এই নতুন সাউন্ডস্কেপে নিজেকে অন্য ধারায় নিয়ে আসছেন লোপা।

‘‘আমার গান গাওয়া শুধু এন্টারটেনমেন্টের জন্য নয়। এটা বলার সময় এসেছে এ বার। আমার সঙ্গে ওই দিন মঞ্চে যাঁরা থাকবেন তাঁরা নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। আসলে এটা একটা সমন্বয় হবে। আমি এই ভাবনাটা নিয়ে ট্রান্সে রয়েছি। সে দিন গানের সঙ্গে হয়তো শুধুই মন্দিরা বাজবে...।’’ আবেশ মাখা স্বরে বলে ওঠেন লোপা।

আরও পড়ুন: অভিনয়ের পাশাপাশি বক্স অফিসেও ভাল ফল ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’র

একটা পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন তিনি নিজের গানকে। হারমোনিয়াম, বাঁশি আর গান।

জয় সরকার এই ভাবনায় নেই কেন?

‘‘জয় তো খুব একটা আগ্রহী নয় বোধহয়?’’ (হাসি) আবার যোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: বয়ফ্রেন্ড আছে? মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ‘মিনু’ বলল…

‘‘জয় খুব খুশি আমার এই ভাবনায়। আমি যে অনেক না গাওয়া গান এই অনুষ্ঠানে গাইছি। যেমন, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের এমন একটা গান গাইছি যা শুনলে মনেই হবে না ওই সময়ের গান। জয় আসলে সময় দিতে পারবে না। ওর তো এখন রেকর্ডিং চলছে। এই সময়গুলো তো ম্যাচ করে না। ওকে পেলে তো ভালই হত।’’

মাঝখানে এক বার বলেছিলেন, ‘আমার আর গানবাজনা হবে না’। কেন?

‘‘আসলে গানের জগৎটা ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। এই বাহান্ন বছরে আবার ঘুরে দাঁড়ালাম। নিজেকে ভাললাগাবো বলে। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে এটাও জানি যে এই সাউন্ডস্কেপ, এই আমার পছন্দের গান নিয়ে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে গাইতে পারব না কোনও দিন। তখন ওই মাচার সুরেই সুর মেলাতে হবে আমায়। গানের জগতে কোনও পরিবর্তন এখনও আসছে বলে মনে হচ্ছে না।’’ সাফ জানালেন লোপা।

কিন্তু গানের মানুষের রাজনীতিতে আসাটা কেমন? কন্যাশ্রীর জন্য তো গান গাইলেন আপনি...

‘‘আমি শিল্পী। আমার কোনও রং নেই। আমি সরকারের জন্য কাজ করেছি। সরকার যেই হোক না কেন, সিপিএম, তৃণমূল। এক জন নাগরিক হিসেবে সরকার যদি আমায় কিছু অনুরোধ করেন। আমি সে কাজ করব।’’ স্পষ্ট জানালেন লোপা।

নিজের ভাবনা আর কাজে কোনও তফাত করেননি তিনি।

কিন্তু আজকাল তাঁকেও কথা বলার সময় সচেতন থাকতে হয়। ‘‘আমার সঙ্গে বাজায় এক জনকে দেখিয়ে এক বার আমি বলেছিলাম ও কিন্তু প্রথমে হনুমানকে পুজো করে তার পর সব। মজা করেই বললাম। তার পর মনে হল, এই রে, এটা নিয়ে কেউ অন্য মানে তৈরি করে ফেসবুকে ছেড়ে দেবে না তো? এখন তো বক্তব্য ভাইরাল করার জন্য আগে পরের সব কথা বাদ দিয়ে কোনও একটা কথাকে তুলে ধরা হয়। খুব ভয়ের সময়...।’’ শঙ্কিত লোপা।

রবীন্দ্রনাথের গানও গাইবেন লোপা এই অনুষ্ঠানে। এখানেও কি নতুনত্ব থাকছে?

‘‘রবীন্দ্রনাথের সব গানে দুমদাম এক্সপেরিমেন্ট করা যায় না। সেটা শুনতেও ভাল লাগে না।’’

রবীন্দ্রনাথকে কি প্রাচীন বা আধুনিক এ ভাবে ভাগ করা যায়?

‘‘নাহ। আমি অন্তত মনে করি না। তবে প্রসঙ্গ বদলে একটা কথা বলতে চাই। লোকে ইদানীং আমার নামে বাজে কথাও বলে বেড়াচ্ছে। লোকে বলছে, লোপামুদ্রা আর গাইতে পারে না। এত বছরের পরিশ্রমের এই প্রচার? বাজে লাগে।’’

যত খারাপ লাগুক ওই খারাপ প্রচার তাঁর কণ্ঠকে ছুঁতে পারে না। লোপা যে কবিতার গান দিয়ে নিজের জীবন সুরে বলতে চেয়েছিলেন, সেই জীবনের আলোকবৃত্তে সুরের আগুন ছড়িয়ে দিতে চান অচেনা ভাবনায়।

Singer Entertainment Celebrity Interview Lopamudra Mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy